মধুমিতা বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে পরিচালনা পর্ষদ

ঢাকার অন্যতম প্রাচীন প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা।ছবি: প্রথম আলো

ঈদুল আজহার পর বন্ধ হয়ে যাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা, সপ্তাহখানেক আগে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রেক্ষাগৃহটির স্বত্বাধিকারী ইফতেখার নওশাদ। ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষ। আপাতত মধুমিতা বন্ধ হবে না। প্রেক্ষাগৃহের পরিচালনা পর্ষদের সবাই আলোচনা করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইফতেখার নওশাদ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘আমাদের এক রকম সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে আবার পরিচালনা পর্ষদের সবাই মিলে মধুমিতা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করেন। এরপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন যে আপাতত সিনেমা হল বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তাতে যাচ্ছেন না তাঁরা। আমরা যদি সিনেমা হল বন্ধ করি, তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে জানাব।’

ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ
ছবি: সংগৃহীত

৫৮ বছর আগে চালু হয় দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা। কয়েক বছর ধরে কয়েক মাস বন্ধ, এরপর আবার চালু—এভাবেই চলছিল। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ইফতেখার নওশাদ জানান যে ঈদুল আজহার পর প্রেক্ষাগৃহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর সেখানে গড়ে তোলা হবে বহুতল ভবন। তবে রাখা হবে সিনেপ্লেক্সও।
১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর মধুমিতা সিনেমা হলের উদ্বোধন করেছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার বিচারপতি আবদুল জব্বার খান। ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ওই দিনের কথা এখনো পরিষ্কার মনে আছে। এলিজাবেথ টেলর অভিনীত “ক্লিওপেট্রা” দিয়ে শুরু হয়েছিল শো। প্রথম দিনেই দর্শকের সে কী আগ্রহ! শুরুর দিনই আমরা আধুনিক শব্দ (ম্যাগনেটিক সাউন্ড) সুবিধা নিয়ে চালু করেছিলাম।’

ঢাকার মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহ
ছবি: প্রথম আলো

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সিরাজ উদ্দিন হলটির প্রতিষ্ঠাতা। সিনেমা হলের নাম চেয়ে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে একটি বিজ্ঞাপন দেন। অনেকেই নাম প্রস্তাব করে পাঠান। সেখান থেকে ‘মধুমিতা’ নামটি পছন্দ করেন সিরাজ উদ্দিন এবং নাম প্রস্তাবকারীকে তখনকার দিনে ৫০০ টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করেন। এখন হলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ইফতেখার উদ্দিন। সিরাজ উদ্দিনের চার ছেলেই হলটির মালিক এখন। এই প্রেক্ষাগৃহে ১ হাজার ২২১ জন দর্শক একসঙ্গে বসে ছবি দেখতে পারেন।