বড় চমক দিলেন নিশো, এলেন নতুন পরিচয়ে

গানটিতে আফরান নিশোর কণ্ঠ দেওয়ার পরিকল্পনাটা হঠাৎ করেইচরকির সৌজন্যে

এমনটা কেউ ভাবেনি। ভক্তদের রীতিমতো চমকে দিলেন আফরান নিশো। অভিনয়ে তিনি কী করতে পারেন, সেই ক্ষমতার কথা জানা আছে দেশ-বিদেশের দর্শকদের। কিন্তু এবার সেই চেনা গলি থেকে বের হয়ে একদম ভিন্ন পথে হাঁটলেন অভিনেতা। গেয়ে ফেললেন গান। তাও আবার সিনেমায়! ঈদের ‘দাগি’ সিনেমার টাইটেল ট্র্যাকে কণ্ঠ দিয়েছেন আফরান নিশো।

গানের কথা—‘তোমাদের চোখে দাগি/সমাজের চোখে দাগি/যতবার খুশি মারো, তত বারবার জাগি’। ঠিক যেন ‘দাগি’ সিনেমার দাগি হয়ে নিজের কথাগুলোই বলেছেন গানে গানে। আজ ২৬ মার্চ গানটি প্রকাশ পেয়েছে অনলাইনে। রাসেল মাহমুদের কথায়, গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আরাফাত মহসীন। গানে মূলত নিধির সঙ্গে কিছু অংশ গেয়েছেন নিশো।

গানটিতে আফরান নিশোর কণ্ঠ দেওয়ার পরিকল্পনাটা হঠাৎ করেই। নিশো জানতেন না কিছুই। অভিনেতার মতে, এটা তাঁর জন্য একরকম সারপ্রাইজই ছিল। ‘প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল একদিন আমাকে গানটির একটা ডেমো ভার্সন শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কেমন লেগেছে। আমি বললাম, ক্যাচি অ্যান্ড পাওয়ারফুল। গানটা নিয়ে কী করা যায়? এটা ভাবতে ভাবতে একসময় আমাকে জানানো হয়, গানটিতে আমি কণ্ঠ দিলে কেমন হয়?’ বলেন নিশো।

‘দাগি’ সিনেমায় আফরান নিশো। প্রযোজনা সংস্থার সৌজন্যে

গানটির কথা সাজানো হয়েছে একজন দাগির দৃষ্টিকোণ থেকে। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা চেয়েছেন ‘দাগি’ সিনেমার দাগি যিনি, তাঁর কণ্ঠেই গানটি সবচেয়ে বেশি মানায়। নিশো বলেন, ‘গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার কারণগুলো আমার বেশ যৌক্তিক মনে হয়েছে বলেই আমি রাজি হয়েছি। পরে আরও কিছু সংযোজন-বিয়োজনের পর গানটিতে ভয়েস দিই।’

অনেক বছর আগে নাটকের জন্য কিছু লাইন গেয়েছিলেন আফরান নিশো। সেই গানের সুরকার ও গীতিকারও তিনিই ছিলেন। সংগীত নিয়ে তাঁর জানাশোনা যে কিছু আছে, তা বোঝাই যায়। তাই অনেক দিন পর গান গাইলেও বেশি বেগ পেতে হয়নি নিশোর। বলেন, ‘খুবই উপভোগ করেছি গানটি গাওয়ার সময়। নিধিকে (আরাফাত মহসীন) অনেক ধন্যবাদ। একটু নিচু স্বরে যতটা সম্ভব এগ্রেশন আনার চেষ্টা করেছি। গায়ক হিসেবে গানটি গাইনি, অনিয়মিত বা গায়ক নয় বা প্রথম গান করছে, এমন একজনের যে স্বাভাবিক ঢং, সেটাই রাখার চেষ্টা করেছি।’ শ্রোতা-দর্শকেরা গানটিতে নতুন কিছু পাবেন এবং তাঁদের ভালো লাগবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আফরান নিশো।

দাগি’ সিনেমার দৃশ্যে আফরান নিশো ও তমা মির্জা
প্রযোজনা সংস্থার সৌজন্যে

‘দাগি’ থিম সংটির সুরকার ও সংগীতায়োজক আরাফাত মহসীন জানান, থিম সংগুলো শ্রোতারা যেভাবে শুনে অভ্যস্ত, ‘দাগি’র থিম সংয়েও তেমন কিছু করার চেষ্টা ছিল তাঁর। নিধি বলেন, ‘গানটির ধারণা পাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে, একটা ঝাঁঝালো, প্রতিবাদী সুর দরকার। সেটাই করার চেষ্টা করেছি। এ রকম গানে শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেটাও আমি ঠিকঠাক পেয়ে গেছি। নিশো ভাইকে আমি আগেও গান করার প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু হয়ে উঠছিল না। এবার হয়ে গেল। যখন জানলাম, নিশো ভাই গানে কণ্ঠ দেবেন, র‍্যাপ করবেন, তাঁর কণ্ঠস্বরে মানাবে এমনভাবেও কিছু জায়গায় সুর রাখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি শ্রোতাদের ভালো লাগছে গানটি।’

কিছু অনিয়মিত শব্দ দিয়ে গানটি লিখেছেন রাসেল মাহমুদ। তিনি জানান, গানটি লেখার আগে সিনেমার গল্পটাও একটু জেনে নিয়েছিলেন তিনি, যা গানটির শব্দ চয়নে সাহায্য করেছে।

‘দাগি’ সিনেমা সুনেরাহ বিনতে কামাল। প্রযোজনা সংস্থার সৌজন্যে

রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম আমাকে বেশ প্রভাবিত করেন। তাঁর প্রেম ও দ্রোহের লেখা আমার কাছে একরকম বিস্ময়। “দাগি”র থিম সং লেখার সময় তেমন কিছু শব্দ-বাক্য ব্যবহারের চেষ্টা করেছি। গানটি রেকর্ডিংয়ের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। নিধি ও আফরান নিশো গানটি সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আশা করি শ্রোতাদেরও ভালো লাগছে।’

সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড এবং সহপ্রযোজনায় আছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি। শিহাব শাহীন পরিচালিত সিনেমাটি পেয়েছে ইউ গ্রেডের (ইউনিভার্সাল গ্রেড) সেন্সর সার্টিফিকেট। অর্থাৎ সব বয়সী দর্শকই দেখতে পারবেন ‘দাগি’ সিনেমা। এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে ‘দাগি’ সিনেমার টিজার, রোমান্টিক গান ও অফিশিয়াল পোস্টার।

স্টুডিওতে সংগীত শিল্পীদের সঙ্গে নিশো
চরকির সৌজন্যে
আরও পড়ুন

সৈয়দপুর, রাজশাহী ও ঢাকায় হয়েছে ‘দাগি’ সিনেমার শুটিং। সিনেমায় অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, মিলি বাশার, রাশেদ মামুন অপু, এ কে আজাদ সেতুসহ অনেকে। ‘দাগি’ সিনেমার গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন নির্মাতা শিহাব শাহীন।