আমাদের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়েছে: মাহি
মাত্র কদিন আগেই দ্বিতীয় স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। বিয়ে এবং সন্তান ফারিশের জন্মের পর থেকে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তবে এর মাঝেও নিজের রেস্তোরাঁ ব্যবসা এবং রাজনীতি নিয়ে বেশ সক্রিয় ছিলেন মাহিয়া মাহি। তবে রাজনীতির মাঠে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। সবকিছু ছাপিয়ে আবারও মাহির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সরগরম মিডিয়াপাড়া। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্বিতীয় স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গেও বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু বিচ্ছেদের নেপথ্যে স্পষ্ট কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি মাহি।
এবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বামী রাকিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন নায়িকা। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘আমরা দুজনেই চেষ্টা করেছি। যখন দেখেছি চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না, তখন আসলে চেষ্টাটা ছেড়ে দিয়েছি। একসঙ্গে থেকে তিক্ত হওয়ার চেয়ে বন্ধুত্বটা থাকা ভালো। যেহেতু ও ফারিশের বাবা এবং এখনো ওর সঙ্গে আমার কথা হয় নিয়মিত, যোগাযোগ আছে। ফারিশকে নিয়ে কথা হয়, ফারিশের কী প্রয়োজন এবং ও খুব যত্নবান একজন মানুষ। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই, কিন্তু ও ফারিশের ব্যাপারে এতটা কেয়ারিং, আমার মনে হয় পৃথিবীতে এমন বাবা পাওয়াটা খুব টাফ।’
বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও পুরো সাক্ষাৎকারে রাকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন মাহিয়া মাহি। অভিনেত্রী বলেছেন, ‘আমার জীবনের যতটুকু রাজনৈতিক অর্জন করেছি, সবটাই ওর জন্য। একটা পোস্টার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক যেকোনো কিছু, ও এত সুন্দর করে সব গুছিয়ে দিয়েছে আমাকে, একা হলে কখনোই পারতাম না। এর পেছনে সব কৃতিত্বই রাকিবের। ও মানুষটা অনেক ভালো, এই তিনটা বছর আমি তাঁকে কাছ থেকে দেখেছি। সে ভীষণ ভালো একজন মানুষ, পরোপকারী। কিন্তু আমার প্যাটার্ন এবং ওর প্যাটার্ন আলাদা, দ্যাটস ইট।’
রাকিবের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের জবাবও দেন অভিনেত্রী। বলেন, ‘ও স্ট্যাটাস দিয়েছে, মানুষ এটা নিয়ে আমাকে খোঁচাখুঁচি করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, ওর মাথা একটু গরম আছে। রাগের মাথায় অনেক কিছু বলে ফেলে, লিখে ফেলে। কিন্তু যে মানুষটা আমার জন্য এত কিছু করেছে। তাকে নিয়ে একটা নেতিবাচক কথা বললেও আমি নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারব না।’ শুধু রাকিবের নয়, মাহির স্ট্যাটাস নিয়েও আলোচনা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি শিল্পী মানুষ, আমার লিখতে ভালো লাগে। যখন যা মনে হয়, তা ফেসবুকে শেয়ার করি। আমি আসলে কোনো আস্থা খুঁজে পাইনি, কোনো ঠিকানাও খুঁজে পাইনি।’
কাজের প্রসঙ্গে মাহি বলেন, ‘অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু প্রোডাকশন হাউসগুলোর একটা বিধিনিষেধ থাকে যে তারা আমাকে কীভাবে আনবে, ওই ব্যাপারটা আছে। কাজ আমি শুরু করে দিয়েছি, ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করব, ইনশা আল্লাহ। শাকিব খান প্রসঙ্গ এলে মাহি বলেন, তিনি বড় মাপের একজন শিল্পী। এমন শিল্পী অনেক যুগ পরে একজন করে আসে। তাঁর সঙ্গে নিজের তুলনা আমি করব না। কিন্তু চলচ্চিত্রে থাকলে অনেক ভালো জায়গায় থাকতে পারতাম।’
নির্বাচনী এলাকায় থাকা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিনেত্রী বলেন, ‘বলেছিলাম যদি নির্বাচিত হই, তাহলে আমার এলাকাতেই থাকব। এলাকার মানুষ আমাকে পাবে না, আমি কাজে চলে যাব তা যাতে না হয়, সে জন্যই আমি নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার কথা বলেছিলাম। যেহেতু আমি নির্বাচিত হইনি, তাহলে আমার প্রফেশন তো সিনেমা, আমার রুটিরুজি। আমি যদি কাজ না করি, তাহলে আমি মানুষের সেবা করব কীভাবে? সে কারণে এখান থেকে আমি কাজ করব, পাশাপাশি এলাকার মানুষের সেবা করব। দুটোই সমানতালে চলবে।’
সামনে কেমন ধরনের চলচ্চিত্রে থাকবেন, তেমন আভাসও দিয়েছেন নায়িকা। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ২০২৪ থেকে যত সিনেমা করবেন, সবগুলোই হবে ভালো ভালো প্রজেক্টের। কোনো সাধারণ প্রজেক্টে কাজ করবেন না তিনি। মাহি এখন শূন্য থেকে শুরু করতে চান। আগের মতো জনপ্রিয় বা তার চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তায় নিয়ে যেতে চান নিজেকে। কাজের বিষয়ে খুবই সিরিয়াস তিনি।
এর আগে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একটি খুদে বার্তা ঘিরে দম্পতির সংসারে বিচ্ছেদের সুর বেজে উঠেছিল বলে জানান স্বামী রাকিব সরকার। এমনকি মাহিকে ফেরাতে বহু চেষ্টা-তদবিরও করেছেন তিনি। তবে মাহি নাকি স্বামীকে কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন, আর সে কারণে একটা পর্যায়ে গিয়ে সেই শর্তগুলো মানতে পারছিলেন না রাকিব।