অনেকে বলেছেন আমার নাচ দেখতেই নাকি হলে গেছেন: নুসরাত ফারিয়া
ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে নূর ইমরান মিঠুর সিনেমা ‘পাতালঘর’। ভিন্নধারার এই ছবিতে ‘বাবলি’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পাচ্ছেন নুসরাত ফারিয়া। এরই মধ্যে একই ঘরানার আরও একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। নানা প্রসঙ্গে গত বুধবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন
প্রশ্ন :
‘পাতালঘর’-এ একেবারেই অন্য রকম চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
মোটামুটি। আমার ঘরানার বাইরের ছবি এটি। তাই আশা একটু কম করেছিলাম। এমন গল্পে দর্শকেরা আমাকে কীভাবে নেবেন, তা নিয়ে নিজের মধ্যেও একটা দ্বিধা ছিল। এ ধরনের কাজে আগে অভিজ্ঞতাও ছিল না। তবে যতটুকু আশা করেছিলাম, তার চেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছি। ছবিটি দেখে অনেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন, দর্শক নতুনভাবে চিনেছেন আমাকে। বাবা মারা যাওয়ার সময়কার দৃশ্য, মা ও মেয়ের সম্পর্কের দৃশ্যগুলোতে দারুণ প্রশংসা পাচ্ছি। প্রথম এ ধরনের অফট্র্যাকের ছবিতে ভালোভাবেই উতরে যেতে পেরেছি মনে হচ্ছে।
প্রশ্ন :
কাজটির জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে কি?
মসলাদার বাণিজ্যিক বা ভিন্ন ধারার ছবি—সব ধরনের ছবিতেই প্রস্তুতি নিতে হয়। এই ছবিতেও নিয়েছি। তবে শুটিংয়ের সময় পরিবেশটা কিছুটা অনুকূলে ছিল। ফলে কাজটি করতে অত কঠিন মনে হয়নি। ছবির গল্পের কিছু অংশ করোনার সময়ের । শুটিংও করেছিলাম করোনাকালে। ফলে ওই পরিবেশেই কাজটি করেছিলাম। এখানে আমার মায়ের চরিত্র করেছেন আফসানা মিমি। চরিত্রের নাম পারভিন আক্তার। বাস্তবে আমার মায়ের নামও পারভিন আক্তার। ফলে চরিত্রটি কানেক্ট করতে সহজ হয়েছে। তা ছাড়া আফসানা মিমির মধ্যে মমতাময়ী একটা ভাব আছে।
প্রশ্ন :
নুসরাত ফারিয়াকে অ্যাকশন, নাচ-গানে ভরপুর ছবির নায়িকা হিসেবে সবাই জানেন, চেনেন। ভিন্ন ধারার ছবিতে আগ্রহী হওয়ার কারণ কী?
এখন সব ধরনের কাজই করব। শুরু করেছিলাম বাণিজ্যিক ছবি দিয়ে। মানুষ কত কিছু দিয়েই তো শুরু করে, শেষে কি হবে জানে না কেউ। আস্তে আস্তে আমাদের সিনেমায় পরিবর্তন আসছে। নিজেকে সেই পরিবর্তনের সঙ্গে রাখতে চাই। সব ধরনের কাজের সঙ্গেই থাকতে চাই। গান, অভিনয়, নাচ—সবই তো করি। নানা ধরনের কাজের সঙ্গে থাকলে, নানা অভিজ্ঞতা হয়। ফলে সাহস করে যেকোনো চ্যালেঞ্জিং কাজ করা সহজ হয়।
প্রশ্ন :
শুনলাম নতুন একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন...
মাস দুয়েক আগে চুক্তি করেছি। ছবির নাম এখনই বলছি না। এটি পরিচালনা করবেন তামিম রহমান অংশু। এটিও ‘পাতালঘরে’র মতো ভিন্ন ধারার ছবি। আগস্টের শেষের দিক থেকে শুটিং শুরুর কথা আছে।
প্রশ্ন :
আপনার একটি নতুন গানের ভিডিওর টিজার প্রকাশ পেয়েছে। পূর্ণাঙ্গ গানটি কবে আসবে?
এটি কলকাতার পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর আবার ‘প্রলয়’ সিরিজের জন্য করা। সিরিজের ‘মেনুকা’ শিরোনামে একটি আইটেম গানের অংশেই শুধু আমাকে দেখা যাবে। এটি কোনো প্রমোশনাল গান নয়, সিরিজের গল্পের অংশ। এর আগে ‘সুড়ঙ্গ’ ছবিতেও এভাবে কাজ করেছি।
প্রশ্ন :
পরপর বেশ কয়েকটি আইটেম গানে আপনাকে দেখা যাচ্ছে...
এ ধরনের কাজে পারদর্শিতা আছে বলেই করছি। আর ভালো কাজ হলে করব না কেন? এদেশ হোক, ওদেশ; ভালো ভালো কাজের প্রস্তাব এলে কেন করব না? নিজেকে এক্সপ্লোর করতে হবে, নিজেকে ভাঙতে হবে। সব ধরনের মানসম্পন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা উচিত বলে মনে করি। তা ছাড়া এখন তো এ ধরনের কাজের একটা ট্রেন্ড যাচ্ছে। হয়তো এখন আমি করছি, ভবিষ্যতে প্রথম সারির কোনো না কোনো তারকা এটি করবে। কয়েক দিন আগে ভারতে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ দেখলাম। সেখানে এক গানের মধ্যে পাঁচ নায়িকাকে দেখলাম। তাহলে বোঝেন, ভালো কাজ হলে ছবির ছোট অংশতেও বড় বড় তারকা কাজ করতে পারেন। যেটি আমি করেছি। আবার আমি সব সময়ই যে এটি করব, তা-ও নয়। আগামী বছর নাও করতে পারি।
প্রশ্ন :
সুড়ঙ্গ ছবির একটি অংশে আপনি আছেন। ছবিটি দেশ-বিদেশে সাড়া ফেলেছে। দেখেছেন ছবিটি?
এখনো দেখিনি। তবে আমার বন্ধুবান্ধব, আশপাশের পরিচিতজন, তাদের পরিবার নিয়ে সিনেমাটি দেখেছেন। অনেকে বলেছেন আমার নাচ দেখতেই নাকি হলে গেছেন। ছবির মধ্যে অন্যতম বেস্ট পার্ট নাকি আমার গান। সিনেমা হলে সিনেমা দেখার অভ্যাসটা আমার একটু কমই। এ ব্যাপারে আমি একটু অলস। অনেক সময় কাজের ব্যস্ততার কারণে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবি দেখা হয় না। সময় বের করে সিনেমাটি দেখব। ‘হাওয়া’, ‘পরান’–এর পর ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ ভালো যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন আরও ভালো ভালো ছবি আসবে। এ রকমের ছবি আসতে থাকলে ইন্ডাস্ট্রির জন্যই ভালো। সিনেমা যতই ভালো বানানো হোক, ব্যবসা না করলে প্রযোজক বাঁচবে না, শিল্পী-কলাকুশলীরা বাঁচবে না, মোটকথা ইন্ডাস্ট্রিও বাঁচবে না।