ডলি জহুরের চোখের পানির দাম ৩ কোটি টাকা! বলেছিলেন রাজ্জাক
‘বাবা কেন চাকর’ ছবিতে রাজ্জাক ও ডলি জহুরের অভিনয় দেখে সিনেমা হল থেকে তখন কাঁদতে কাঁদতে বের হয়েছিলেন অনেক দর্শক। রাজ্জাক পরিচালিত ও প্রযোজিত ছবিটি ব্যবসায়িক সফলতাও পায়। পারিবারিক মূল্যবোধের গল্পে তৈরি সেই ছবিটি আজ বিভিন্ন সময় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এই ছবি নিয়ে কথা বলেছেন ডলি জহুর। তিনি জানান, ছবিটি মুক্তির পরপরই রাজ্জাক এক আড্ডায় পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবরকে বলেছিলেন, ডলি জহুরের চোখের পানির দাম তিন কোটি টাকা।
‘বাবা কেন চাকর’ ছবিটি যাঁরাই শেষ পর্যন্ত দেখেছেন, যৌথ পরিবারের টানাপোড়েনের গল্পটি একবারের জন্য হলেও কাঁদিয়েছে তাঁদের। রাজ্জাক পরিচালিত ও প্রযোজিত এই ছবিতে ডলি জহুর ও রাজ্জাকের পর্দা রসায়ন মানুষের মনকে স্পর্শ করেছে। সেই কান্নার গল্পটি নিয়ে এভাবে বললেন ডলি জহুর। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন যে ‘বাবা কেন চাকর’ ছবিটি মুক্তির পর দর্শকদের কাঁদিয়েছে, তা নির্মাণের খবর শুনে অনেকে নাকি তখন হাসাহাসি করেছেন। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেও নাকি এই নামে ছবি হোক, তা চাননি। আজ রাজ্জাকের মতো চলচ্চিত্রের প্রভাবশালী একজন এই নামে ছবি বানাতে পারেন, তা ভাবতেও পারেননি।
ডলি জহুর সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, ‘বাবা কেন চাকর’ ছবিটি যখন নির্মিত হচ্ছিল, তখন চলচ্চিত্র অঙ্গনের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। ডলি জহুরের ভাষ্য, ‘বাবা কেন চাকর ছবিটি হলো, তখন পুরো চলচ্চিত্র অঙ্গনের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। আস্তে আস্তে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছিল। অনেকে তাই বলাবলি করছিল, এমনিতেই ছবি চলে না। তার ওপর ছবির নাম রাখছে, “বাবা কেন চাকর”! অনেকে আমার সামনেও হাসাহাসি করছে। হাসতে হাসতে এ–ও বলেছে, রাজ্জাক সাহেব কেন এই নামের ছবি করবেন! কিন্তু যাঁরা এমন কথা বলছিল, তারা কেউই “বাবা কেন চাকর” ছবির ভেতরের গল্পটা জানে না।’
‘বাবা কেন চাকর’ নামে ছবির নাম রাখার কারণ হিসেবে ডলি জহুর জানালেন, ‘ওই সময় “স্বামী কেন আসামী” নামে একটা ছবি সুপারহিট হয়েছিল। রাজ্জাকও তাই ভেবেছিলেন, ছবির গল্পটা যেমন, তাতে “বাবা কেন চাকর” নামে ছবি বানালে ছবিটি কিছু একটা হবে। মানুষকে নাড়া দেবে।’
ডলি জহুর বললেন, ‘ওই সময়ে “স্বামী কেন আসামী” সুপারহিট হওয়ায় রাজ্জাক ভাইয়ের মনটায় একটা স্বার্থপরতার কাজ করেছিল। যদিও শুরুতে ছবির নামটা একটা গানের নামের সাথে মিল ছিল। রাজ্জাক ভাই যা ভেবেছিলেন, তাই হয়েছে। মুক্তির পর লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। দেখা গেছে, আজকে দুইজন, কালকে পাঁচজন, এভাবে যেন বাড়তেই থাকল। লোকমুখে ছবিটির নাম ছড়িয়ে পড়ল। একদিন তো রাজ্জাক ভাই মনতাজুর রহমান আকবর ভাইয়ের শুটিং স্পটে ছবিটি নিয়ে কথাও বললেন। তিনি এভাবে বলছিলেন, “জানো আকবর, তোমরা তো অমুকের চোখের পানি কোটি টাকা, তমুকের চোখের পানি কোটি টাকা বলো। কিন্তু তোমরা কি জানো, ডলির চোখের পানির দাম তিন কোটি টাকা। বিষয়টাতে আসলে রাজ্জাক ভাই বলতে চেয়েছিলেন, ওই সময়ে “বাবা কেন চাকর” ছবিটি তিন কোটি টাকা ব্যবসা করেছে।’
‘বাবা কেন চাকর’ ছবিতে খালিদ হাসান মিলুর গাওয়া ‘আমার মতো এত সুখী’ গানটিও শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করে। মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের লেখা এই গানের সংগীত পরিচালনা করেন আলাউদ্দীন আলী। রাজ্জাকের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের ব্যানারে ছবিটি তৈরি হয়।