এফডিসিকে পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম সিটি বানানোর কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) এলেন মাহফুজ আলম। মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে তাঁর এফডিসিতে আসা, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন শুটিং ফ্লোর ঘুরে দেখার পাশাপাশি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন মাহফুজ। এরপর জহির রায়হান মিলনায়তনে এফডিসি নিয়ে নিজের পরিকল্পনা ও ভাবনার কথা জানান। এফডিসিকে কম্পোজিট ফিল্ম সিটি বানানোর কথা বলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
এ বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন মাহফুজ আলম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এফডিসির বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে দেখার পাশাপাশি পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতির কার্যালয়েও যান। সেখানে পরিচালক ও শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেন মাহফুজ আলম। শিল্পী সমিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনয়শিল্পী আনোয়ারা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক নাঈম, অভিনয়শিল্পী আলীরাজ, সুব্রত, রুমানা ইসলাম মুক্তি, শিবা শানু প্রমুখ।
এফডিসি ঘুরে দেখে মাহফুজ আলম বলেন, ‘এফডিসিতে মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত অনেকগুলো দপ্তর আছে। এগুলোর দেখার উদ্দেশ্যে এখানে আসা। আসার পর অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখানে অনেকগুলো সংকট আছে। কর্মকর্তা–কর্মচারী যাঁরা আছেন, তাঁদেরও অনেক চাহিদা আছে। আমি সরেজমিনে দেখতে এলাম, যাতে বিষয়টা আমার বোধগম্য হয়, কী চলছে, কীভাবে চলছে।’
এফডিসির সম্ভাবনা অনেক উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, এফডিসির সম্ভাবনা অনেক। ঢাকার একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এত বড় জায়গা নিয়ে তৈরি এফডিসিতে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো আছে, সেগুলো সাধারণত যেকোনো রাষ্ট্রের ফিল্ম সিটি বা এ রকম কোনো জায়গাতে থাকে। বিষয়টা এমন, কম্পোজিট একটা ব্যাপার—যেখানে শুটিং, এডিটিং, ডাবিংসহ সব সুযোগ-সুবিধা একসঙ্গে পাওয়া যাবে। সম্পাদনা থেকে শুরু করে প্রি প্রোডাকশন, পোস্ট প্রোডাকশনের সব কাজ একই জায়গায় হয়। আমি মনে করি, আমার দায়িত্বকালের মধ্যে এফডিসিকে কম্পোজিট ফিল্ম সিটি বানিয়ে দেওয়ার। এফডিসি যাতে লাভজনক হয়ে ওঠে, তাহলে এখানে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাঁদের সবার বেতন–ভাতা থেকে শুরু করে প্রণোদনা সবই এখান থেকে দেওয়া সম্ভব হবে। এফডিসি নিয়ে এটাই হচ্ছে আমার একমাত্র লক্ষ্য। আশা করি, এখানে আপনারা যাঁরা আছেন, সবাই সহযোগিতা করবেন।’
এফডিসিতে একটা প্রকল্প চলমান আছে, মাহফুজ আলম তাঁর কথার এক পর্যায়ে সে প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এফডিসিতে একটা প্রকল্প চলছে। কবিরপুর ফিল্ম সিটিতে আরেকটা প্রকল্পের কাজ চলছে। এই দুইটা জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করব যেসব ইস্যু আছে, তা শেষ করতে। এখানে রিসোর্সগুলো যাতে ঠিক হয়, আপনরা সবাই যাতে কাজের সুযোগ পান এবং যারা ফিল্ম মেকার, প্রযোজক আছেন—তাঁরা যাতে খুব সহজে কাজ করতে পারেন। যাতে ভালো মানের ফিল্ম বাংলাদেশে তৈরি হয়।’
জহির রায়হান মিলনায়তনে আজ তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা ছাড়া এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান ও চিত্রনায়ক নাঈম বক্তব্য দেন।
মাসুমা রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রত্যেকটা কর্মকর্তা-কর্মচারী স্যারের (মাহফুজ আলম) কাছে, আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্যারের ভরসায় আমি আপনাদের কথা দিয়েছিলাম, আমরা ছয় মাসের মধ্যে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে দেখাব। বারবার আমাদের বেতন–ভাতা, বোনাস হয় না প্রত্যেকবার মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ে নিয়ে আসতে হয়, ঋণ করে আনতে হয়—এটা আমারও যেমন ভালো লাগে না, স্যারও বিব্রত হন। আপনাদের পক্ষ থেকে স্যারকে আমি কথা দিয়েছি, আমাদের যদি একটু সুযোগ দেওয়া হয়, স্যারকে একটা সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।’