দেশি ছবির চাহিদা তুঙ্গে, নেমে গেল হলিউডের ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতরে স্টার সিনেপ্লেক্স তাদের বিভিন্ন শাখায় বাংলাদেশি ছবির পাশাপাশি বাইরের দেশের ছবির প্রদর্শনীও রেখেছিল। তারা চেয়েছিল, দর্শক দেশীয় ছবির পাশাপাশি ভিন্ন ভাষার ছবিও উপভোগ করুক। দর্শকের কথা মাথায় রেখেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিল মাল্টিপ্লেক্সটি। কিন্তু দেশীয় ছবির দর্শক চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে বাধ্য হয়ে হলিউডের ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করে দিতে হয়েছে। গতকাল শুক্রবার থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখায় প্রদর্শিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। প্রথম আলোকে আজ শনিবার দুপুরে এমনটাই জানালেন স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ আহমেদ।

‘বরবাদ’ ছবির পোস্টারে শাকিব খান

স্টার সিনেপ্লেক্সে ঈদে মুক্তি পায় দেশীয় ছয়টি চলচ্চিত্র—‘বরবাদ’, ‘দাগি’, ‘জংলি’, ‘চক্কর’, ‘জ্বীন ৩’ ও ‘অন্তরাত্মা’। পাশাপাশি প্রদর্শনী ছিল হলিউডের ছবির ‘মুফাসা’ ও ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড’–এর। কিন্তু দর্শক চাহিদায় দেশীয় ছবিগুলো এতটাই এগিয়ে আছে যে হলিউডের দুটি ছবির প্রদর্শনী ছিল, বন্ধ করে দিতে হয়েছে। হলিউডের ছবির শোগুলোয় ভাগ বসিয়েছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র।

আরও পড়ুন
‘দাগি’ সিনেমার পোস্টারে আফরান নিশো

দেশের অন্যতম এই মাল্টিপ্লেক্স চেইন ছয়টি বাংলা সিনেমা মুক্তির মধ্য দিয়ে ঈদ উৎসব শুরু করলেও এ সপ্তাহ থেকে প্রদর্শিত হচ্ছে চারটি চলচ্চিত্র। ‘জ্বীন ৩’ ও ‘অন্তরাত্মা’ ছবি দুটিতে দর্শক আগ্রহ না থাকায় প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে তারা। চারটি ছবির মধ্যে তিনটি সিনেমায় দর্শক আগ্রহ বেশি। মুক্তির ১৪ দিনে এসেও টিকিটের সংকট আছে। কোনো ছবির টিকিট দর্শক দুই দিন আগে কিনে রেখেছেন, আবার কোনোটির এক দিন আগে। বাংলাদেশি সিনেমার এমন দর্শক চাহিদায় মুগ্ধ সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্রের প্রযোজক-পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীরা। পাশাপাশি রয়েছে আক্ষেপ, ক্ষোভ ও মনঃকষ্ট। ঈদের ছবির প্রযোজক-পরিচালকদের মতে, সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিনেমার যে পরিমাণ প্রদর্শনী দিয়েছে, তা আরও বাড়ালে দর্শকের এই আগ্রহ ঠিকই বাড়বে, কমবে না। এদিকে হলিউডের ছবি নামিয়ে দেশীয় ছবিকে অগ্রাধিকার দেওয়াতে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রযোজক-পরিচালকদের কেউ কেউ।

আরও পড়ুন
‘জংলি’ সিনেমার পোস্টারে সিয়াম

মুক্তির ১৪তম দিনেও স্টার সিনেপ্লেক্সে যেসব বাংলাদেশি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে, সেসব সিনেমার প্রায় সব শো হাউসফুল। টিকিট পেতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি করছেন দর্শক। অনলাইন থেকে কাউন্টার, মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে টিকিট। ভোগান্তি এড়াতে অনেকে আগেভাগে টিকিট কেটে রাখছেন। মানুষ টিকিট না পেয়ে এমনও বলছেন, হলমালিকেরা শো বাড়ালেই কিন্তু হয়।

আরও পড়ুন
‘চক্কর’ সিনেমার পোস্টার। ফেসবুক থেকে

মেজবাহ আহমেদ বললেন, ‘বাংলাদেশি ছবির পাশাপাশি আমরা হলিউডের দুটি ছবি “মুফাসা” ও “ক্যাপ্টেন আমেরিকা: ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড” চালিয়েছি। বাংলা সিনেমায় দর্শকের চাপ প্রচুর। আমরা তাই বাংলাদেশের সিনেমাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। শো বেড়েছে। সার্বিকভাবে সব কটি ছবির শো বেড়েছে। দর্শকের সাড়াও আমাদের অভিভূত করেছে। দর্শক সাড়া দেখে প্রতি সপ্তাহে আমরা শিডিউল করে থাকি, সেভাবেই শোও বাড়াচ্ছি। যে অবস্থা দেখছি, হলিউডের ছবি নামিয়ে ফেলার পরও  বাংলাদেশি ছবির দর্শক চাপ আরও বাড়বে। আমরা আশা করছি, মাস দেড়েক বাংলাদেশের ছবিগুলো এভাবেই চলবে।’

আরও পড়ুন
স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা সিটি শাখায় দর্শকের ভিড়
ছবি: জাহিদুল করিম