চুক্তির পর নায়িকাকে কোন রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে, ‘ফান’ করে বলেছিলেন গল্পকার!
‘লিপস্টিক’ ছবিতে আদর আজাদের নায়িকা হওয়ার কথা ছিল কলকাতার দর্শনা বণিকের। চলতি বছর এপ্রিল মাসে ছবির পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান ও চিত্রনাট্যকার আবদুল্লাহ জহির বাবু কলকাতায় গিয়ে দর্শনা বণিকের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে চূড়ান্ত করেন। গত মে মাসের শেষের দিকে নায়িকার সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল।
হঠাৎ করেই ২০ জুন জানা যায় দর্শনা নন, ‘লিপস্টিক’-এর নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরি। পূজা চুক্তি করছেন, এমন একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। তবে ছবিটি থেকে দর্শনার বাদ পড়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
হঠাৎই ‘লিপস্টিক’ ছবিতে পূজা চেরির চুক্তিবদ্ধ হওয়ার খবর জেনে অবাক হন দর্শনা। আজ দুপুরে কলকাতা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোকে দর্শনা জানান, তাঁকে না জানিয়েই নায়িকা পরিবর্তন করা হয়েছে। এটি তাঁর কাছে ভালো মনে হয়নি।
দর্শনা বলেন, ‘তাঁদের ছবি, তাঁরা নায়িকা পরিবর্তন করতেই পারেন। তবে আমাকে তো জানানো যেত। কারণ, যখন কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়, তখনই আমাকে নিয়ে বাবু ভাই বিভিন্ন জায়গায় নিউজ করিয়েছেন। এখন দেখছি ছবিতে অন্য নায়িকা। বিষয়টি আমার জন্য অপমানজনক। মানুষ আমাকে নিয়ে এখন ভুল বার্তা পেল।’
কী কারণে আপনাকে বাদ দেওয়া হলো? জানতে চাইলে দর্শনা বলেন, ‘আমরা ধারণা, মে মাসের প্রথম দিকে জহির বাবুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে আমার কিছু কথোপকথন হয়। একপর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন “প্রোডিউসার বলেছেন, চুক্তি করার পর দর্শনাকে কোন রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে?” তখনই আমি বাবু ভাইকে বলেছিলাম, এ ধরনের আলাপে আমি সাচ্ছন্দ্য নই। পরে উনি বিষয়টিকে ফান (মজা) বলেছেন।’
দর্শনা আরও বলেন, ‘ওই সময় আমি তাঁকে বলেছিলাম, কিছু বিষয় নিয়ে এ ধরনের মজা যেন না করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জহির বাবু আমাকে বলেছিলেন, এ ধরনের মজাই যদি না বোঝেন, তাহলে আপনার সঙ্গে কাজ করব কী করে? এর পর থেকে তিনি আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমি ধারণা করছি, তাঁর ওই প্রস্তাবটি ভালোভাবে না নেওয়ার কারণে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেন, কাজ থেকে বাদ দিয়েছেন আমাকে। আমার প্রশ্ন, এটি (ছবি থেকে বাদ পড়া) কি ওই কথোপকথনেরই ফল?’
এই নায়িকার ভাষ্য, ‘ধরে নিলাম, আমি যেটি ভাবছি, সেটি না–ও হতে পারে। এটি তাঁদের প্রজেক্ট অন্য কোনো কারণে আমার সঙ্গে কাজটি করতে আগ্রহী নয়, অন্তত দুলাইনের বার্তাও তো আমাকে পাঠানো যেত।’
রিসোর্টে যাওয়ার প্রস্তাবের বিষয়টি স্বীকার করেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু। তবে তিনি জানান, সেটি ছিল স্রেফ ফান করে বলা। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসতে হাসতে আমি স্রেফ মজা করেই কথাগুলো বলেছিলাম। কিন্তু তিনি যে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন বুঝিনি। এ জন্য তাঁকে এ–ও আমি বলেছিলাম, মজাই যদি না বোঝেন, তাহলে আপনার সঙ্গে কাজ করব কী করে।’
তাহলে কি এ কারণেই দর্শনাকে বাদ দিয়েছেন ছবি থেকে? জানতে চাইলে এই গল্পকার বলেন, ‘না না, এ কারণে হবে কেন? সমস্যা হয়েছে অন্য জায়গায়। বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার–সংকট। এই মুহূর্তে বিদেশি কোনো শিল্পীকে এনে পারিশ্রমিক দিতে বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো সম্ভব নয়। এ কারণে বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দেশ থেকে নায়িকা নেওয়া হয়েছে।’
নায়িকা পরিবর্তনের বিষয়টি দর্শনাকে না জানানোর ব্যাপারে বাবু বলেন, ‘তাঁকে জানিয়ে অন্য নায়িকা বা পূজা চেরিকে নিতে হবে, সেই বাধ্যবাধকতার মধ্যে তো আমরা নাই। তবে জানানোর সময় পাইনি, আমার হোয়াটসঅ্যাপ পর্যন্তও বন্ধ ছিল। অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমরা তো তাঁকে পছন্দ করেই চূড়ান্ত করেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, এটিতে হলো না, আমাদের প্রতিষ্ঠান আরেকটি ছবি করবে, সেটাতে সাইন করাব। কিন্তু মেয়েটা তো সময়ই দিল না। সবাইকে ঘটনাটা জানিয়ে দিল, নিউজ হলো।’