‘চেষ্টা করেছি পর্দায় অ্যাকশন লেডির লুক ফুটিয়ে তুলতে’
ঢালিউডে একই দিনে এক ছবিতে দেখা মিলল দুই নায়িকার। একজন মানসী প্রকৃতি, অন্যজন সায়মা স্মৃতি। শুক্রবার দেশের ২৪ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘যন্ত্রণা’ ছবিটি। এই ছবির মাধ্যমে তাঁদের দেখেছেন ছবিপ্রেমীরা। আরিফুর রহমান পরিচালিত এই ছবিতে একজন নায়িকার অভিষেক ঘটলেও আরেকজনের এটি চতুর্থ সিনেমা। চলুন জেনে নেওয়া যাক, মানসী প্রকৃতির সিনেমায় যাত্রা ও আগামীর পরিকল্পনা।
‘যন্ত্রণা’ ছবির দুই নায়িকার আরেকজন মানসী প্রকৃতি। সায়মা স্মৃতির এই ছবিতে অভিষেক ঘটলেও মানসীর এটি চতুর্থ ছবি। মুক্তির প্রথম দিন দর্শকের সঙ্গে বসে ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে ছুটেছেন। গতকাল শনিবারও তিনি প্রেক্ষাগৃহে ঘুরেছেন। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার আনন্দ সিনেমা হলে যখন মানসী, তখন কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বললেন, ‘“যন্ত্রণা”র সাড়া বেশ ভালোই পাচ্ছি। সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। ওখানকার দর্শকেরা বেশির ভাগ নাটকের। আমাকে দেখে অনেকে বলছিলেন, “আপু আপনার ওই নাটকটা দেখেছি। আপনি নাটক করেন, এখন দেখছি মুভিও করছেন!” এটা জেনে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’
ছয় বছর আগে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন মানসী প্রকৃতি। সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ছবিটির নাম ‘শেষ কথা’। শুরুটা চলচ্চিত্র দিয়ে হলেও এখন নাটকে অভিনয়ে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে তাঁর। টেলিভিশন ও ইউটিউব মিলিয়ে দুই শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে চলচ্চিত্রে অভিনয়ও থেমে থাকেনি তাঁর। ‘যন্ত্রণা’র আগে তিনি আরও দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, একটি ‘জল শ্যাওলা’ অন্যটি ‘বাউল’।
মানসী বললেন, ‘বগুড়া আজিজুল হক কলেজে পড়ার সময় আমি গান গাইতাম। বিবর্তন নামে আমাদের একটা ব্যান্ড ছিল। টানা সাত বছর ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ২০১৫ সালে কলেজের একটি অনুষ্ঠানে শেষবারের মতো গান গেয়েছি। এরপর মাস্টার্স পড়ার সময় সিনেমায় যুক্ত হই। এর পর থেকে অভিনয় মাধ্যমেই আছি।’
বগুড়ার মেয়ে মানসী প্রকৃতি তাঁর পরিবারের একমাত্র সন্তান। অভিনয়ে পরিবার তাঁকে খুব উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দেয় বলে জানালেন। বললেন, ‘গান গাইলেও কেন জানি অভিনয়ের স্বপ্নটা উঁকি দেয়। একটা সময় মনস্থির করি অভিনয়ে থিতু হব। সেভাবে চলচ্চিত্র ও নাটকের কাজ করে যাওয়া। কারণ, আমার কাছে অভিনয়টাই আসল কথা।’
অভিনয়ের প্রতি টান থেকে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। প্রথম নাটকের সহশিল্পী ছিলেন মোশাররফ করিম। আর পরিচালক ছিলেন সাজিন আহমেদ বাবু। মানসী বললেন, ‘নিয়মিত অভিনয় করছি। অভিনয়টাই নেশা। এখন পেশাও বলতে পারেন।’
এত বছর পর অভিনয় করা ‘যন্ত্রণা’ ছবিটি লেডি অ্যাকশন গল্পে নির্মিত হয়েছে। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম পুষ্প। তাকে ঘিরেই গল্পটি এগিয়ে যায়। মানসী বললেন, ‘অ্যাকশন চরিত্রে এবারই প্রথম অভিনয় করেছি। চরিত্রটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। চেষ্টা করেছি পর্দায় অ্যাকশন লেডির লুক ফুটিয়ে তুলতে। গল্পে অনেক বাঁক রয়েছে। সেই বাঁকে বাঁকে আমি নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’ অভিনয় দিয়ে দর্শকের মন জয় করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রাপ্তির স্বপ্নও দেখেন মানসী। বললেন, ‘কোনো একটা সময় সেরা অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পাওয়া (হা হা হা...)।’
মানসী প্রকৃতি অভিনীত ‘দুই ঘণ্টা দশ মিনিট’ ও ‘রং রোড-আদুরী অধ্যায়’ নামে দুটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এর বাইরে নতুন ছবিতে কাজ করার স্বপ্নও দেখেন তিনি। বললেন, ‘আমি চাইলে তো আর হবে না। এটা কপালের ওপরও নির্ভর করে। তা ছাড়া কোনো পরিচালক যদি মনে করেন, আমি চলচ্চিত্রে কাজ করার যোগ্যতা রাখি, তখন অবশ্যই করব।’