শেষ সিনেমায় কত টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন সালমান শাহ

সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সালমান শাহকে নিয়ে এখনো চর্চা হয়। তাঁর অভিনয় ও স্টাইলে এখনো মুগ্ধ বর্তমান প্রজন্মের দর্শকেরা। ক্যারিয়ারের সময়সীমা মাত্র চার বছর, আর তাতেই হয়েছিলেন খ্যাতিমান। নব্বইয়ের শুরুতে দেশের সিনেমা অঙ্গনকে দেখিয়েছিলেন নতুন দিশা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সালমান হয়ে উঠেছিলেন সবচেয়ে ব্যস্ত ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতা।
সালমান শাহ অভিনীত শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বুকের ভেতর আগুন’। ছটকু আহমেদ পরিচালিত সিনেমাটিতে সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন শাবনূর। সিনেমাটির জন্য এ অভিনেতা নিয়েছিলেন সে সময়ের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক, দুই লাখ টাকা, এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালক ও সিনেমাটির প্রযোজক ছটকু আহমেদ।

তবে এ সিনেমার কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারেননি সালমান। গল্পের কিছুটা পরিবর্তন এনে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয় ফেরদৌস আহমেদকে। সালমানের মৃত্যুর এক বছর পর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এই সিনেমা দিয়েই শেষ হয় সালমানের সেলুলয়েড সফর।
মৃত্যুর সময় সালমানের হাতে তখন অনেকগুলো ছবির কাজ। কিছুর ডাবিং চলছিল, কিছুর শুটিং শেষ দিকে, আবার কিছু একেবারে মাঝপথে। মোট পাঁচটি ছবির শিডিউলে ঘুরেফিরে অভিনয় করছিলেন তিনি। মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ পর ১৩ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ছটকু আহমেদের পরিচালিত ‘সত্যের মৃত্যু নেই’। নির্মাতাদের পরিকল্পনা ছিল সালমানের জন্মদিনের ছয় দিন আগে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার এবং সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সিনেমা মুক্তির আগেই না–ফেরার দেশে চলে যান নায়ক।

আরও পড়ুন
সালমান শাহ ও শাবনূর

একদিকে মুক্তিপ্রতীক্ষিত ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ আর অন্যদিকে অসম্পূর্ণ ‘বুকের ভেতর আগুন’। সময়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল নির্মাতা ছটকু আহমেদের। সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘সিনেমা মুক্তির প্রায় দুই মাস আগে থেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পোস্টার, ব্যানার প্রস্তুত করে জেলায় জেলায় পাঠিয়েছিলাম। সিনেমার প্রমোশনে যাওয়ার শিডিউলও দিয়েছিলেন সালমান। কিন্তু মৃত্যুর খবরে স্তব্ধ হয়ে যাই। এমন কিছু হয়ে যাবে, কল্পনাও করতে পারিনি।’

আরও পড়ুন

সালমানের মৃত্যুর পর এক বছর পর্যন্ত মুক্তি পেতে থাকে তাঁর অভিনীত ছবিগুলো। ১৯৯৭ সালে সালমানের একেকটা ছবি মুক্তি পাওয়া মানেই ছিল প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় আর সিনেমা শেষে ভেজা চোখে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে আসা। ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’র মতো ছবিগুলো দর্শকের প্রিয় নায়ক হারানোর কষ্টকে সেই বছর আরও গাঢ় করে তুলেছিল। যে ছবিগুলো সালমান শেষ করে যেতে পারেননি, যেমন ‘বুকের ভিতর আগুন’, ‘প্রেম পিয়াসী’, সেগুলো নির্মাতারা শেষ করেছেন অন্য অভিনেতা ও ডামিশিল্পীদের সহায়তায়। কিন্তু কিছু দৃশ্যে ছায়া চরিত্র থাকলেও দর্শকেরা সেখানেও সালমানকেই খুঁজে পেয়েছিলেন।