কাজি জিজ্ঞেস করার আগেই তিনবার কবুল বলে ফেলছি: শামস
হালের জনপ্রিয় পেশা কনটেন্ট ক্রিয়েটর। আর যাঁরা সফল তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যেই আছে না পাওয়ার গল্প। কেউ হয়তো পড়াশোনা করেও মনমতো কাজ পাননি। কেউ দারিদ্র্য থেকে, কেউ আবার নিতান্তই শখের বসে। কিন্তু তাঁরা সবাই সফল। অর্থ থেকে যশখ্যাতি সবকিছুতেই নিজেদের ছাড়িয়ে গেছেন অনেক আগে। তেমনই একজন শামস আফরোজ চৌধুরী। যিনি সবার কাছে থটস অব শামস নামেই পরিচিত। তাঁর বানানো ভিডিওগুলো ভাইরাল হয় ফেসবুক-ইউটিউবে। সেসব মজার ভিডিওতে শেয়ার–মন্তব্যের ছড়াছড়ি।
সম্প্রতি দৈনিক যায়যায়দিনের ডিজিটাল মাধ্যমে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সাক্ষাৎকারে নিজের বিয়ের গল্প এবং ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কথা মজাচ্ছলে উপস্থাপন করেছিলেন শামস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল পরিচিতি পাওয়া এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, ‘আমার পরিবার খুবই ছোট। আমি, মা-বাবা আর হাজব্যান্ড। আমি পরিবারকে ফোকাস করেই আসলে আমার কনটেন্ট বানানো শুরু করি। আমি আমার কমফোর্ট জোনে থেকে এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। আগেও আমি আমার স্মার্টফোনে ভিডিও করে সেটা আমার বাসার সবাইকে দেখাতাম। আমার মা-বাবা দেখত। বিয়ের পর আমি দেখাতাম হাজব্যান্ডকে। ওরা খুবই মজা পেত। কিন্তু আমি কখনোই সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়িনি।’
কথায় কথায় তিনি জানান কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে যাত্রা শুরুর কথা। শামসের ভাষ্যে, ‘২০১৮ সালে আমি প্রথম একটি পেজ খুলি। তখন আমার স্বামীর মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। বলল, “এ ভিডিওটা একটু দিয়ে দেখ, মজা হবে—সবাই দেখবে।” সবাই বলতে ফেসবুকের বন্ধু-পরিবার। এটা ভেবেই আসলে শুরু করা। এরপর দেখলাম, বন্ধু-পরিবার ছাড়াও আরও অনেক মানুষ দেখছে ও প্রশংসা করছে। তখন সবাই বলল, আরও ভিডিও চাই। এভাবেই একটা একটা করে দিতে দিতে আজকে এই পর্যায়ে।আসলে কে কীভাবে দেখে ওটা আমি এতটা খেয়াল করি না, তবে আমি বাস্তব জীবনেও এমন অনেক চরিত্র দেখেছি এবং আমি মনে করেছি, এগুলো আমার ভিডিওতে তুলে ধরি। ২০১৮ সাল থেকে কনটেন্ট বানানো শুরু করি। পাশাপাশি এমবিএর শিক্ষার্থী ছিলাম। আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। শুধু শখের বসেই ভিডিও করা। ওটাই একপর্যায়ে ২০২০ সালে পুরোদস্তুর পেশা হিসেবে নিয়ে নিই। আগে পার্টটাইম শিক্ষক হিসেবে জব করতাম। ওটা খুব একটা যে আহামরি কিছু ছিল, তেমন না। তখন আমি শিক্ষার্থী ছিলাম, পাশাপাশি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে চাকরি করতাম।’
নিজের কাজ নিয়ে শামস আরও বলেন, ‘এখানে আয় অনেক বেশি, সেটা ভেবে যে আমি কাজ শুরু করি তা নয়। দেখা যায় যে আমার এই কাজ করতে ভালো লাগে। এ জন্যই আমি কনটেন্ট বানানো শুরু করি। ২০২০ সালে আমি মনিটাইজেশন পাই। বিভিন্ন ব্র্যান্ড থেকে প্রস্তাব আসে। তখন আমি নিজে দেখলাম, এখান থেকে তো অনেক টাকা আয় করা যায়। এর আগেও কিন্তু আমি কনটেন্ট বানিয়েছি। কিন্তু তখন এক টাকাও আয় করিনি।’
সাক্ষাৎকারে নিজের বিয়ের গল্পও করেন শামস। তিনি বলেন, ‘আমার বিয়ের গল্পটা খুবই সাদামাটা। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। এক মাসের মধ্যেই বিয়েটা হয়ে যায়। দেখাদেখি হয়। তারপর কথাবার্তা হয়, ফ্যামিলি একসঙ্গে যেদিন হয়েছিল, সেদিনই কাবিন হয়ে যায়। আমার জীবনে কখনো প্রেম-ভালোবাসা আসে নাই, যেটা সত্যি কথা। আমার হাজব্যান্ডের গল্পটাও একই। তাঁর জীবনেও কোনো প্রেম-ভালোবাসা ছিল না।
একটা সময় এসে দুজনেই বিয়ে করার জন্য ডেসপারেট ছিলাম। যখন পাত্র-পাত্রী দেখাদেখি হলো, তখন দুজনেই বিয়ে করার জন্য অস্থির ছিলাম। কাবিনের দিন তখন কাজি বলছিল, বলো মা কবুল। কিন্তু আমাকে কিছু বলার আগেই কবুল কবুল কবুল—তিনবার বলে ফেলছি। আমার এখনো লজ্জা লাগে এটা চিন্তা করলে। আমার পরিবারের লোকজন খুব রাগ করছিল, কেন আমি এভাবে কবুল বলেছি।’