সৌমিত্রকে নিয়ে যা বললেন বলিউড তারকারা
শিল্পচর্চায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখেননি। সেই প্রমাণ পাওয়া গেছে তাঁর প্রয়াণের পর। তাঁর চিরবিদায়ে বলিউড তারকারাও তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। সবার কণ্ঠে যেন একই সুর, ‘তিনি চলে গেছেন, তবে তিনি রয়ে যাবেন তাঁর সৃষ্টিতে।’
অমিতাভ বচ্চন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে টুইটারে লিখেছেন, ‘একজন প্রবাদপ্রতিম আইকনিক ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রের এক শক্তিধর স্তম্ভ। চলে গেলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একজন বিনয়ী ব্যক্তিত্বের মেধার কী বিচ্ছুরণ! শেষবার তাঁর সঙ্গে দেখা হলো কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। প্রার্থনা।’
নাসিরুদ্দিন শাহ আনন্দবাজার পত্রিকায় লিখেছেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে সৌমিত্রদার কাজ দেখে মুগ্ধ হয়েছি, হিংসা করেছি। দীর্ঘ এক মাস কঠিন গরমে আমরা “আ হোলি কনসপিরেসি” সিনেমার শুটিং করেছি। তিনি কাজ করছেন জেনেই সিনেমাটা করতে উৎসাহিত হয়েছিলাম। এ অভিজ্ঞতা চিরকাল আমার মনে রয়ে যাবে। বাংলা সিনেমা আর নাটকে তাঁর অবদান অশেষ।’
শাবানা আজমি লিখেছেন, ‘বিদায় সৌমিত্রদা। লা নুই বেঙ্গলি সিনেমায় আপনার স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম। কী সৌভাগ্য আমার! ফিফটিন পার্ক অ্যাভিনিউতেও আপনার সঙ্গী ছিলাম। প্যারিসে জর্জ পম্পিডো সেন্টারে বিশাল আয়োজন করে আপনাকে সম্মাননা দেওয়া হলো। অথচ আপনার কোনো ভাবান্তর নেই। আমি মুগ্ধ, আমি বিস্মিত, আপনাতে।’
মনোজ বাজপেয়ি লিখেছেন, ‘গভীর বিষাদময় ক্ষতি। ওপারে ভালো থাকবেন স্যার। ভারতীয় সিনেমাকে আপনি যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন, তা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।’
রাহুল বোস লিখেছেন, ‘দিনের পর দিন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সিনেমা দেখেই বড় হওয়া, অভিনয় শেখা। “ফিফটিন পার্ক অ্যাভিনিউ” সিনেমায় তাঁর সঙ্গে কাজ করা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। সেটে তাঁকে আমি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন করেছি। তিনি বিনয়ের সঙ্গে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সেই সব অভিজ্ঞতা আমার জীবনে অক্ষয় হয়ে থাকবে।’
সোহা আলী খান মা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘“অপুর সংসার”, “অরণ্যের দিনরাত্রি”, “দেবী”, “বর্ণালী” সিনেমাগুলোয় মা আর আপনি অভিনয় করেছেন। আপনাকে ভোলা সম্ভব নয়। আমরা সবাই গভীরভাবে আপনার অভাব অনুভব করব।’
টালিউড তারকা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আমার একান্ত নিজের উদয়ন মাস্টার তিনি, তবে সব ছাড়িয়ে তিনি ছিলেন একজন পরম বন্ধু! জীবনের একটা অংশ চলে গেল। একই সঙ্গে একজন শিক্ষক, পথপ্রদর্শক এবং বন্ধু হারালে কী রকম লাগে, সেটা বলার চেষ্টা বৃথা। হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের কাছে, “প্রতিক্রিয়া” জানতে চেয়ে ফোন করবেন না! এবার ছেড়ে দিন। এ বিয়োগ বড় ব্যক্তিগত, এ কষ্ট শব্দের নয়, একার।’
পাউলি দাম অল্প কথায় লিখেছেন, ‘ধায় মোর সকল ভালোবাসা। প্রভু, তোমার পানে, তোমার পানে, তোমার পানে।’