নানার বারোটা বাজিয়ে ফিরে যাচ্ছেন তনুশ্রী
এরই মধ্যে বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা নানা পাটেকারের ব্যক্তিগত ইমেজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন ২০০৪ সালের ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স’ ও সাবেক বলিউড তারকা তনুশ্রী দত্ত। তিনি নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন। ভারতের টিভি চ্যানেল নিউজ এইটিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবি করতে গিয়ে নানা পাটেকার তাঁকে যৌন হেনস্তা করেছেন। এরপর অপ্রত্যাশিত নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নানা পাটেকারকে। এ সময়ের তুমুল জনপ্রিয় কয়েকজন বলিউড তারকা তাঁর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। প্রখ্যাত এই অভিনেতার অভিনয়জীবনের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। চুক্তি হয়েছে, এমন কয়েকটি ছবি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে তিনি খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হন না। সাংবাদিক, টিভি ক্যামেরা ও সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।
এবার বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে তনুশ্রী দত্ত জানালেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘আমি এখন ওখানেই থাকি। ছুটিতে মুম্বাই এসেছি। সুতরাং আমাকে ফিরতেই হতো। নানা কারণে এবার ছুটিটা একটু লম্বা হলো। তবে আমি সবাইকে খুব মিস করব। আমার পুরো পরিবার কিন্তু ভারতেই থাকে।’
বিশ্বের অনেক দেশেই যখন হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে, ভুক্তভোগীরা মুখ খুলছেন, অপরাধীদের মুখোশ খুলে পড়ছে, মানুষ এর সঙ্গে একাত্মতা জানাচ্ছে, ঠিক তখন প্রায় ১০ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সামনে এনে ভারতে এই আন্দোলনের সূচনা করেন তনুশ্রী দত্ত। তিনি মুখ খোলার পর চরম বিরোধিতার মুখে পড়েন। কিন্তু দমে যাননি। যা বলার দরকার ছিল, ঠিকই বলেছেন। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে গেছেন। একই সময় বলিউডের আরও কয়েকজন অনেক দিন আগে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ন্যক্কারজনক ঘটনা সামনে এনেছেন। তাঁরা বলিউডের এমন সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন, যাঁদের এত দিন সমাজে সম্মানের চোখে দেখা হতো। অল্প দিনেই ভারতে এই আন্দোলন শক্তিশালী রূপ নেয়।
ভারতে হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলনের সূচনার শতভাগ কৃতিত্ব দেওয়া হয় তনুশ্রী দত্তকে। তবে আইএএনএসকে তিনি বলেন, ‘একজন সাধারণ মানুষের জার্নিকে মিডিয়া হিরোইন বানিয়ে দিয়েছে। আমি মোটেও তেমন কিছু না, বরং আমি একটা মাধ্যম, যার মধ্য দিয়ে সমাজে পরিবর্তন ও সচেতনতার প্রসার হয়েছে।’
তনুশ্রী দত্ত জানালেন, আজ তাঁর হারানোর ভয় নেই। তবে এক দশক আগের ওই ঘটনা তাঁর ক্যারিয়ারকে শেষ করে দেয়। বললেন, ‘তাই আমাকেও একদিন না একদিন তার জের কাটিয়ে বের হতেই হতো।’
তনুশ্রী দত্ত মনে করেন, এরই মধ্যে ভারতে হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন যতটা শক্তশালী হয়েছে, সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়েছে, এর ফলে সেই অসৎ চরিত্রের মানুষগুলো ভয় পেয়ে গেছে। তারা নিজেদের কর্মকাণ্ড ঢাকার চেষ্টা করবে। কিন্তু যারা নির্যাতিত হচ্ছে, তারা অবশ্যই মুখ খুলবে। এই আন্দোলনে তিনি ভূমিকা রেখেছেন মাত্র, কিন্তু এই আন্দোলন তাঁর ওপর নির্ভরশীল নয়। এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, এগিয়ে যাবে আপন গতিতে। বললেন, ‘এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ। কোনো আন্দোলন যদি ব্যক্তিনির্ভর হয়ে যায়, তখন এর সাফল্যের সম্ভাবনা সীমিত হয়ে যায়।’