দাঁত ভাঙা থেকে ওজন বাড়ানো, সবকিছু করেছেন মাধবন
এখন চারদিকে শুধু বলিউড অভিনেতা আর মাধবনের জয়জয়কার। গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘রকেট্রি: দ্য নাম্বি ইফেক্ট’ ছবিটি। ছবিতে শুধু অভিনয় নয়, সঙ্গে পরিচালনা আর প্রযোজনার দায়িত্বও ছিল আর মাধবনের কাঁধে। এমনকি এই ছবির জন্য কলম ধরেছিলেন এই বলিউড তারকা। ছবিটি শুরুতেই সফলতার মুখ দেখছে বক্স অফিসে। মন জয় করে নিয়েছে সমালোচকদেরও। ইসরোর (আইএসআরও) অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার নাম্বি নারায়ণের জীবনের ওপর নির্মিত এই ছবিটি।
এই ছবি নিয়ে আর মাধবনের সঙ্গে কথা বলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি। শুরুতেই সেখানে তিনি ছবির বিষয় নিয়ে বলেন, ‘আমরা অর্থাৎ চিত্রনির্মাতারা বড় বড় বাজেটের ছবি নির্মাণ করি। কখনো স্বাধীনতাসংগ্রামের কথা বলি। মোগল শাসনের ওপর ছবি বানাই। কিন্তু ভারতের আর একটা দিকের কথা আমরা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরি না, সেটা হলো বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি। এ ক্ষেত্রে ভারত প্রভূত উন্নতি করেছে। তাই আমার মনে হয়েছে যে এ বিষয়ের ওপর ছবি নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
এই ছবিকে ঘিরে মাধবন তাঁর দীর্ঘ ভ্রমণ সম্পর্কে বলেন, ‘এখন পেছনের দিকে ফিরে তাকালে পাগলামি ছাড়া আর কিছু মনে হয় না। শুধু আমি নই, এই ছবির সঙ্গে যুক্ত সবাই “রকেট্রি”কে ঘিরে পুরোপুরি ডুবে ছিলাম। এই ছবিটা নির্মাণ করতে আমার ছয় বছর সময় লেগেছে। কিন্তু আমি গর্বিত যে আমি এই ছবিটা বানিয়েছি। আর আমি এমনই এক ছবি বানাতে চেয়েছিলাম।’ এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘আমি ছয় বছর নাম্বি স্যারের সঙ্গে কাটিয়েছি। তাঁকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছি। তাঁর হাসি, রাগ, কান্না, অভিমান সব অভিব্যক্তিকে আমি পর্দায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। তবে আমি কখনোই তাঁকে সম্পূর্ণভাবে নকল করিনি।’
পর্দায় মাধবনকে অবিকল নাম্বি নারায়ণের মতো লেগেছে। নাম্বি নারায়ণের মতো লুক দিতে নিজের শরীরকে অনেক ভাঙচুর করেছেন মাধবন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু আমি নই, এই ছবিতে যাঁরা বৈজ্ঞানিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তাঁরাও যথাযথ লুকের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। নাম্বি স্যারের ২৯ থেকে ৮০—এই বয়সসীমা পর্দায় দেখিয়েছি। তাই শরীরকে ক্রমাগত ভাঙচুর করতে হয়েছে। এসবের জন্য প্রস্থেটিক মেকআপের সাহায্য আমি নিইনি। কারণ, নাম্বি স্যারের চরিত্রের সঙ্গে পুরোপুরি ন্যায় করতে চেয়েছিলাম। চুলের রং সাদা করার জন্য টানা ১৮ ঘণ্টা একটা চেয়ারে বসে ছিলাম আমি। দাঁতের শেপ নাম্বি স্যারের মতো করতে নিজেই নিজের দাঁত বাঁকা করে ফেলেছিলাম।’
‘রকেট্রি’ ছবির মাধ্যমে ১ হাজার ২৮৭ দিন পর বড় পর্দায় ফিরলেন শাহরুখ খান। মাধবন এই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে শাহরুখ নিজে এই ছবিতে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। মাধবন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শাহরুখ খান “জিরো” ছবির সেটে আমার “রকেট্রি” ছবির কথা জানতে পেরেছিলেন। এরপর তাঁর জন্মদিনে তিনি আমাকে এই ছবিতে অভিনয় করার কথা বলেছিলেন। এমনকি তিনি বলেছিলেন যে ছোট একটা চরিত্র হলেও চলবে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম যে তিনি মজা করছেন। পরে বুঝতে পারি খান সাহেব পুরোপুরি সিরিয়াস। তখন ওনার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বের করি। শাহরুখ খান নিজে এবং তাঁর সহকারীদের জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেননি।’
শেষে উঠে আসে মাধবনের সুপারহিট ছবি ‘তনু ওয়েডস মনু’র কথা। এই ছবির প্রসঙ্গ উঠতে তিনি বলেন, ‘আমি যখন এই ছবিটা করেছিলাম, তখন কেউ দেশি রোমান্সের কথা বলত না। সব রোমান্স নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজে হতো। এমন মনে হতো যে ভারতে কোনো রোমান্সই হয় না। আমি তখন দেশের রোমান্টিক ছবির সন্ধানে ছিলাম। আর তখনই আনন্দ এল রাই আমাকে “তনু ওয়েডস মনু” ছবির প্রস্তাব দেন।’