ঐশ্বরিয়ার নায়ককে শেষ পর্যন্ত পেট্রলপাম্পে চাকরি করতে হয়েছিল

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি রজনীকান্ত ও কমল হাসানের মতো তারকারাদের পর বিজয়, অজিত কুমার, অরবিন্দ স্বামী, আর মাধবনসহ নতুন তারকাদের উত্থান ঘটে তামিল সিনেমার দুনিয়ায়। এই তারকাদের ভিড়ে আরও একজন ছিলেন, যাঁর ক্যারিয়ারের শুরুটা দারুণ হলেও ভাগ্যের ফেরে হারিয়ে যান পাদপ্রদীপের আলো থেকে। কে এই অভিনেতা? জেনে নেওয়া যাক হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে।

কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন’–এ ঐশ্বরিয়া ও আব্বাস। আইএমডিবি

এই অভিনেতা আর কেউ নন, আব্বাস। পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় জন্ম হয়েছিল মির্জা আব্বাস আলীর। কলেজে পড়ার সময়, ১৯৯৪ সাল নাগাদ মডেলিং শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি তামিল চলচ্চিত্র ‘কাধাল দেশম’ দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, যা বাণিজ্যিক সাফল্য পায়, একই সঙ্গে সমালোচকদের মন জিতে নেয়। ঝুলিতে আসে একের পর এক ছবির অফার।

এরপর তেলেগু, তামিলে কয়েকটি জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেন। রাহুল রায়ের মতো ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ ছিলেন না এই অভিনেতা। এই সব ছবিই দক্ষিণের বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পেয়েছিল। কমল হাসান ও শাহরুখ খান অভিনীত ‘হে রাম’-এ ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করার পর আব্বাস সবচেয়ে বড় ব্রেক পান।

‘কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

এই রোমান্টিক ছবিতে তিনি ঐশ্বরিয়া রাইয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। আলোচিত এ ছবির নাম ‘কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন’। ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অংশ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন তিনি, কিন্তু সেটি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি।

২০০৬ সালের দিকে আব্বাসের ক্যারিয়ার থমকে যায়। হিন্দি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি তামিল চলচ্চিত্র ছেড়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দুটি হিন্দি ছবি ব্যর্থ হয়। তিনি যে অন্যান্য ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, সেগুলোও শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। পার্শ্বচরিত্রের কাজের প্রস্তাব লুফে নেন,  তাঁর চেয়ে কম জনপ্রিয় অভিনেতাদের পাশে দ্বিতীয় হিরোর রোলও করেছেন সেই সময়। পরবর্তী কয়েক বছর ধরে আব্বাসকে তেলেগু চলচ্চিত্রে অতিথি চরিত্রেও দেখা গেছে। কিন্তু আর সেই তারকাখ্যাতি ফিরে পাননি। ২০১১ সালের পর টেলিভিশন শোতে কাজ করেন। কয়েক বছর পর ইউটিউব চ্যানেল রেডনুলের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, ওই সময় অভিনয় নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং তাই সব ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে চলে যান।

২০১৫ সাল আব্বাস নিউজিল্যান্ডে পৌঁছেছিলেন নতুন জীবন গড়ার আশা নিয়ে। তবে সমস্ত অর্থ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পর বিপাকে পড়তে হয় এই তারকাকে। ২০২২ সালে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করা থেকে বছরের পর বছর ধরে একটি পেট্রলপাম্পেও কাজ করেছেন তিনি। অবশেষে মোটিভেশনাল স্পিকার হয়ে ওঠেন আব্বাস। ২০২৩ সালে ভারতে ফিরে আবার অভিনয়ে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে এখনো নতুন কোনো প্রজেক্টে চুক্তিবদ্ধ হননি তিনি। পরিবারের সঙ্গে চেন্নাইয়ে থাকেন তিনি।

আরও পড়ুন