প্রথম ছবি সুপারহিট, তারপরও করুণ পরিণতি এই নায়িকার
প্রথম সিনেমা মুক্তির পর তাঁকে হিন্দি সিনেমার অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রী মনে করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তাঁর ক্যারিয়ার সেভাবে গতি পায়নি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঝামেলা। শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতি হয়েছিল সেই অভিনেত্রীর। কে এই অভিনেত্রী? ভারতীয় গণমাধ্যম ডিএনএ, এই সময় অবলম্বনে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
১৯৬৭ সাল। বলিউডে মুক্তি পায় বি আর চোপড়া পরিচালিত সাসপেন্স থ্রিলার ‘হামরাজ’। রাজ কুমার, সুনীল দত্ত, মুমতাজ অভিনীত এই সিনেমায় ছিলেন আরেক নবীন অভিনেত্রী—ভিমি। ২৪ বছর বয়সে এই সিনেমা দিয়েই হিন্দি সিনেমায় অভিষেক হয় তাঁর। প্রথম ছবিই সুপারহিট। ফলে ভিমিকে নিয়ে অনেক প্রযোজকই বাজি ধরেছিলেন।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ‘হামরাজ’-এরপর ভিমি অভিনীত সিনেমাগুলো একের পর এক ফ্লপ হতে থাকে। অথচ অভিষেকের পর ভিমি ছিলেন সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তরুণ অভিনয়শিল্পীদের একজন।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে একটি পার্টিতে ভিমিকে প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন সংগীত পরিচালক রবি। ভিমি সে সময় এক শিল্পপতির সন্তান শিব আগরওয়ালকে বিয়ে করেছেন।
‘হামরাজ’-এরপর ১৯৬৮ সালে ভিমি অভিনীত আরেকটি সিনেমা ‘আব্রু’ মুক্তি পায়। ভিমি ছাড়া অশোক কুমার, নিরুপা রায়ের মতো তারকারাও ছিলেন ছবিতে। কিন্তু এ ছবি ফ্লপ হয়। ১৯৭১ সালে শশী কাপুরের সঙ্গে ‘পতঙ্গ’ সিনেমাটিও ফ্লপ হয়। এরপর কয়েকটি সিনেমায়। ফলে বাধ্য হয়ে সত্তরের দশকে ক্রমেই পাদপ্রদীপের আলো থেকে হারিয়ে যেতে থাকেন ভিমি।
এ সময় ব্যক্তিগত জীবনেও নেমে আসে ঝড়। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ভিমির। জানা যায়, দিনের পর দিন স্বামীর হাতে নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। পরে এক প্রযোজকের সঙ্গে প্রেম হয় ভিমির। তিনিও শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন অভিনেত্রীকে। অভিযোগ আছে, ভিমিকে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতেও বাধ্য করেছেন ওই প্রযোজক।
পরে অনেক কষ্টে নতুন করে জীবন শুরুর উদ্যোগ নেন ভিমি। কলকাতায় টেক্সটাইল ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু, সেটাও ব্যর্থ হয়। ঋণ পরিশোধের জন্য সবকিছু বিক্রি করতে বাধ্য হন তিনি। সম্পূর্ণ দেউলিয়া হওয়ার পর শরীরও ভেঙে পড়ে, লিভারের গুরুতর সমস্যায় আক্রান্ত হন ভিমি। ক্রমেই স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হয়। ১৯৭৭ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয় প্রতিশ্রুতিশীল এই অভিনেত্রীর।