জেলে সাড়ে তিন হাজার কয়েদির মধ্যে ছিলেন আরিয়ান
বিতর্কিত রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’ দিয়ে পরিচিতি পাওয়া এজাজ খান জেলবন্দী দিনগুলোর অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। ওই সময়ে আর্থার রোড জেলে বন্দী ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী তথা ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা ও শাহরুখ খান-পুত্র আরিয়ান খান। রাজ ও আরিয়ানকে ঘিরেও কিছু কথা তিনি এক সাক্ষাৎকারে ফাঁস করেছেন। এজাজ জানিয়েছেন যে আরিয়ানের জন্য অত্যন্ত কঠিন ছিল সেই দিনগুলো।
মাদকদ্রব্য মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আর্থার রোড জেলে ছিলেন অভিনেতা এজাজ খান। এক ওয়েবসাইটকে সাক্ষাৎকারের সময় এজাজ বলেছেন, ‘রাজ কুন্দ্রা যখন জেলে এসেছিলেন আমার তখন সেখানে সাত মাস কাটানো হয়ে গেছে। রাজ কুন্দ্রা আমাকে রোজ বার্তা পাঠাতেন। বাইরে তাঁর অনেক নামডাক, কিন্তু জেলের ভেতরে আমার কথা বেশি চলত। জেলে তাঁকে কড়া নজরের মধ্যে রাখা হয়েছিল।’ এই টেলিভিশন অভিনেতা আরও খোলাসা করে বলেছেন, ‘জেলের সুপারিনটেনডেন্ট তাঁকে (রাজ) জল দিতে পর্যন্ত নিষেধ করেছিলেন। তিনি আমার কাছ থেকে জল, পাউরুটি, বিস্কুট চেয়ে পাঠাতেন। জেলের মধ্যে বিস্কুট, জলের বোতল বা সিগারেট জোগাড় করা অনেক কঠিন। ওখানে জেলের সাধারণ জল খাওয়ার অনুমতি শুধু ছিল, বাইরের বোতলজাত পানীয় নয়। জেলের জল তিনি খেতে পারতেন না, খেলেই অসুস্থ হয়ে যেতেন। তিনি আমাকে কোনো সাহায্য করেননি, কিন্তু আমি অনেক সাহায্য করেছিলাম।’
এই সাক্ষাৎকারে রাজ কুন্দ্রার প্রতি হতাশা প্রকাশ করে এজাজ বলেছেন, ‘আমার সাহায্যের কথা তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন। ওনার ছবি “ইউটি ৬৯” ফ্লপ হয়েছিল, কারণ উনি ছবিতে মিথ্যা দেখিয়েছেন। এই ছবিতে উনি নিজের কাহিনি দেখিয়েছেন, কিন্তু জেলে তাঁর ওপর যে অত্যাচার হয়েছিল, উনি তা দেখাননি। জেলে ওনাকে যে সাহায্য করেছিল, তার কথাও উনি ছবিতে তুলে ধরেননি।
উনি জেলে আমার সঙ্গে দুই মাস কাটিয়েছিলেন। আর সেই সময় উনি আমার সঙ্গে এমন কিছু কথা ভাগ করে নিয়েছেন, যা উনি তাঁর স্ত্রী শিল্পা শেঠিকে কখনো হয়তো বলেননি। তখন করোনাকাল ছিল, আর আমরা সবাই তখন দুখী ছিলাম। উনি সব সময় কাঁদতেন। জেলে তাঁকে বাঁচানোর জন্য অনেকের বিরুদ্ধে আমাকে যেতে হয়েছিল।’
এজাজ এই একই সাক্ষাৎকারে শাহরুখ-পুত্র আরিয়ানের কথাও তুলে ধরেছেন। এজাজ জানিয়েছেন, ওই সময়ে আরিয়ানকেও তিনি সাহায্য করেছিলেন।
অভিনেতা বলেছেন, ‘জেলে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কয়েদির মধ্যে আরিয়ানও ছিলেন। আর নিশ্চিতভাবে উনি তাদের মধ্যে সুরক্ষিত ছিলেন না।’
এজাজ জানিয়েছেন যে আরিয়ানকে তিনি পানীয় জল, সিগারেট পাঠাতেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘জেলে বন্দী কোনো ব্যক্তির জন্য আপনি শুধু এইটুকুই করতে পারেন। তবে আমি ওকে গুন্ডা ও মাফিয়াদের হাত থেকেও বাঁচিয়েছি। উনি বিপদে ছিলেন। ওনাকে সাধারণ ব্যারাকে রাখা হয়েছিল।’
এজাজের দাবি, তাঁকে মিথ্যা মাদকদ্রব্য মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। আর তাঁকে জেনে-বুঝে ফাঁসানো হয়েছিল। কিছু মানুষ তাঁর কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল বলে এজাজ দাবি তুলেছেন। ২০২১ সালে এজাজকে মাদকদ্রব্য মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেলে তাঁকে রাখা হয়েছিল। ওই সময় আরিয়ানকে মাদকদ্রব্য মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পর্নো ছবি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে। আর এই অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে তিনিও তখন আর্থার রোড জেলে বন্দী ছিলেন।