একটি দুর্ঘটনায় তছনছ হয়ে যায় শাহরুখের এই নায়িকার জীবন
একটা সিনেমা রাতারাতি তারকা বানিয়েছিল মাহিমা চৌধুরীকে। মাহিমার অভিষেক ছবিতে এক পাশে ছিলেন সুভাষ ঘাইয়ের মতো নামকরা পরিচালক, আরেক পাশে ছিলেন শাহরুখ খানের মতো সুপারস্টার। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া পরদেশ ছবির মাধ্যমে বিটাউনে পা রাখেন মাহিমা। তবে কয়েক বছর পর গ্ল্যামার জগৎ থেকে হারিয়ে যান তিনি।
অভিষেক ছবিতেই রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান মাহিমা। অনেকের মতে, সুভাষ ঘাইয়ের অন্যতম সেরা আবিষ্কার ছিলেন এই বলিউড অভিনেত্রী। তবে হঠাৎই বিটাউন থেকে হারিয়ে যান মহিমা। লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। বেশ কিছুদিন আগে অভিনেত্রী এই নির্বাসনে যাওয়ার কারণ জানালেন। মাহিমা বলেন, ‘১৯৯৯ সালের আশপাশে প্রকাশ ঝা পরিচালিত দিল ক্যায়া করে ছবির শুটিং করছিলাম। ছবিটির প্রযোজক ছিলেন অজয় দেবগন ও কাজল। স্টুডিওতে যাওয়ার পথে বেঙ্গালুরুতে হঠাৎই একটা ট্রাক আমার গাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে। এত জোরে ধাক্কা লেগেছিল যে গাড়ির কাচ আমার মুখ ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।’
স্মৃতি হাতড়ে ওই দুর্ঘটনার কথা মনে করে আরও বলেন, ‘ওই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছিল যে আমি মারা যাচ্ছি। আশপাশের মানুষ এত ভয় পেয়েছিল যে সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। অবশেষে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার মা আর অজয় হাসপাতালে ছুটে এসেছিল। আমি আয়নায় নিজের চেহারা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার বেশ কয়েকটা সার্জারি হয়। ডাক্তার আমার মুখ থেকে ৬৭টি কাচের টুকরো বের করেন।’
মাহিমা আরও বলেন, ‘সার্জারির পর ঠিক হয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। আমি সব সময় ঘরের ভেতরেই থাকতাম। আর তখন বাইরের সূর্যের আলো আমার সহ্য হতো না। ডাক্তার আমাকে বাড়ির বাইরে যেতেও নিষেধ করেছিলেন। তখন আমি নিজেই নিজের মুখ আয়নায় দেখে ঘৃণা করতাম, ভয় করত। আমি এ দুর্ঘটনার কথা ইন্ডাস্ট্রির মানুষকে বলিনি।
কারণ, আমার মনে হয়েছিল ইন্ডাস্ট্রি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। আমি হয়তো জীবনে আর কাজ পাব না। তাই আমি চলচ্চিত্রের জগৎ থেকে নিজেকে সাময়িকভাবে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলাম। নিজেকে অন্তরালে রেখেছিলাম। আমার পরিবার তখন আমার পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাকে শক্তি দিয়েছিল।’
২০০৬ সালে ব্যবসায়ী ববি মুখার্জিকে বিয়ে করেছিলেন মাহিমা । ২০১৩ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁদের এক কন্যা অরিয়ানা মাহিমার সঙ্গে থাকে।