২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ থেকে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’, সেই ভাগ্যশ্রী এখন

সিনেমায় আর নিয়মিত হননি ভাগ্যশ্রী। ছবি: ফেসবুক থেকে

কিছুদিন আগের কথা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জি কমেডি শোর একটি ভিডিও এখন ভাইরাল। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কৌতুক অভিনেত্রী সুগন্ধা মিশ্র একসময়ের জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রী ভাগ্যশ্রীর কণ্ঠ এবং শরীরী ভাষা অনুকরণ করে সংলাপ বলছেন। আর মঞ্চে স্বয়ং ভাগ্যশ্রীর উপস্থিতিতেই কাজটা করছেন তিনি। কঙ্গনা রনৌতের ‘থালাইভি’ দিয়ে অভিনয়ে ফিরেছেন ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’খ্যাত অভিনেত্রী ভাগ্যশ্রী। সেই সূত্রেই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের অতিথি হয়ে এসেছেন তিনি। এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে আলোচনা। তাঁর পুরোনো, নতুন ছবি দিয়ে ভক্ত-দর্শক নানা মন্তব্য করছেন। অনেকেই আবার নস্টালজিক।

বড় পর্দা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আবার পর্দায় সালমানের সঙ্গে ধরা দিলেন ভাগ্যশ্রী। সম্প্রতি বাংলাদেশে সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে সালমান খানের ছবি ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’। সেই ছবিতে সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন দক্ষিণি সুপারস্টার পূজা হেগড়ে। এ ছাড়া রয়েছেন নবাগতা শেহনাজ গিল ও পলক তিওয়ারি। ছবির একটি দৃশ্যে ভাগ্যশ্রী ও সালমানের হঠাৎ দেখা। পেছন থেকে বেজে ওঠে ম্যায়নে প্যায়ার কিয়ার ‘আই লাভ ইউ’ থিম সং। ভাগ্যশ্রীর পরনে ছিল সাদা শাড়ি।

‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ ছবির দৃশ্যে সালমান খান ও ভাগ্যশ্রী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

তবে ভাগ্যশ্রী একা নন, এই সিনে দেখা গেছে ভাগ্যশ্রীর স্বামী হিমালয় দাসানি ও তাঁদের ছেলে অভিমন্যু দাসানিকেও। এই দৃশ্য দেখে নস্টালজিয়ায় ভাসছে নেটপাড়া, বাংলাদেশের দর্শকও।

দেশে তখন ভিসিআরের দাপট। ঘরে ঘরে ভিসিপিতে বলিউড সিনেমা। সে সময়ই ১৯৮৯ সালে সাড়া ফেলে দিল ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’। এ ছবির হাত ধরে এলেন দুই নতুন মুখ—সালমান খান ও ভাগ্যশ্রী।

সালমান খান এখনো দাপটে রাজত্ব করে চলেছেন। তবে সিনেমায় আর নিয়মিত হননি ভাগ্যশ্রী। অল্প কদিন মাত্র ছোট পর্দায় কাজ করে রঙিন এ দুনিয়াকে বিদায় জানান। পুরোদস্তুর সংসারী হয়ে যান।

বেশ কয়েক বছর বিনোদন দুনিয়া থেকে দূরে ছিলেন ভাগ্যশ্রী
ইনস্টাগ্রাম থেকে

দীর্ঘদিন যেহেতু পর্দায় নেই, বিনোদনজগতের খবরেও তাই তেমন একটা নেই। ভাগ্যশ্রীর খবর নিতে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোই ভরসা। সেখানেই তিনি বেশ সক্রিয়। নিয়মিত ভিডিও, স্থির ছবি দিচ্ছেন। কখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনো জিমে ঘাম ঝরাচ্ছেন। কখনো রান্নাঘরে, নিজের রান্নার রেসিপি শেয়ার করছেন অনুসারীদের কাছে, ভিডিও আকারে।

৫০ পেরোলেও বয়স যেন তাঁকে ছুঁতে পারেনি।
ইনস্টাগ্রাম থেকে

ছবি, ভিডিও দেখে মনে হয়, ভাগ্যশ্রী যেন আজও ১৯৮৯-এর সুমনের মতোই সরল, কিশোরী! অথচ সত্য হচ্ছে, ৫০ পেরিয়েছেন ভাগ্যশ্রী। তবে সেটি তাঁর জন্য শুধুই সংখ্যা। তারুণ্য ধরে রাখার জন্য শরীরচর্চা থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন, সবই করছেন তিনি।

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলির এক রাজপরিবারে ভাগ্যশ্রীর জন্ম। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনিই বড়। ভাগ্যশ্রীর মেয়ে অবন্তিকা ও ছেলে অভিমন্যু। ছেলেটা অভিনয় করতে চায়।

ভ্রমণে বেশ আগ্রহ ভাগ্যশ্রীর
ইনস্টাগ্রাম থেকে

চলচ্চিত্র থেকে সরে যাওয়ায় এখন কিছুটা কি হতাশ? যেমনটা এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, অভিনয়টা চালিয়ে গেলে জীবনটা হয়তো অন্য রকম হতো। একবার যখন ভেবেছিলেন ফিরবেন, তত দিনে বলিউড অনেক বদলে গেছে। হতাশার ছায়া সংসারেও পড়েছিল। দেড় বছর স্বামী হিমালয়ের কাছ থেকে আলাদা ছিলেন তিনি। কী হয়েছিল? তিনি বলেন, ‘দোটানায় ভুগতে ভুগতে একসময় আমাকে মানসিক অবসাদ জড়িয়ে ধরেছিল। ভাবতাম, হিমালয় জীবনে না এলে কী এমন ক্ষতি হতো! লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে দিব্যি কাটত। পরে অন্য কাউকে বিয়ে করলে এত অসফল হতাম না। সেসব মনে পড়লে আজও খারাপ লাগে।’

জি কমেডি শোর মঞ্চে
ইনস্টাগ্রাম থেকে

সালমান খানের সঙ্গে এখনো মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হয়। জন্মদিনে হয় শুভেচ্ছা বিনিময়।

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে দেখা যায় তাঁর শরীরচর্চার ভিডিও। ছবি: ফেসবুক থেকে

প্রস্তাব এলেও পর্দায় সালমানের প্রেমিকা হিসেবে দর্শক হয়তো তাঁকে মানবেন না। তাই আর নায়কের ভাবি হতে চাননি ভাগ্যশ্রী। জিটিভির অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তিনি বললেন, ‘এ কথা তো সবাই জানেন যে সালমন এখন কম বয়সী নায়িকাদের সঙ্গে অভিনয় করেন। তাই তাঁর সঙ্গে পর্দা ভাগ করা মুশকিল। প্রস্তাব পেলে ভাবব। কী রকম চিত্রনাট্য আসবে, তার ওপরে নির্ভর করছে, কাজ করব কি না।’

ভাগ্যশ্রী
ইনস্টাগ্রাম থেকে

‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ রিমেক হলে নিজের জায়গায় কাকে দেখতে চাইবেন? আলিয়া ভাট। ‘উড়তা পাঞ্জাব’-এ আলিয়ার অভিনয় তাঁর খুব ভালো লেগেছিল। আর সালমানের জায়গায় রণবীর—সিং বা কাপুর যে কেউ হলেই চলবে। দুই রণবীরেরও প্রশংসা করেছেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলির এক রাজপরিবারে ভাগ্যশ্রীর জন্ম। ছবি: ফেসবুক থেকে

প্রথম ছবির সাফল্যের পর বড় বড় প্রযোজক যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, স্বামী হিমালয় দাসানিকে নায়ক করলেই ছবি করবেন। স্বামীও স্ত্রীর সঙ্গে পর্দায় অন্য পুরুষকে দেখতে রাজি ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ‘থালাইভি’ দিয়ে ফিরলেন বটে, তবে বড্ড দেরিতে। কেন্দ্রীয় বা বড় চরিত্রে হয়তো তাঁকে আর ভাবছেন না পরিচালকেরা।

প্রথম ছবির সাফল্যের পর বড় বড় প্রযোজক যোগাযোগ করেছিলেন
ইনস্টাগ্রাম থেকে