শক্ত মনে করোনার সঙ্গে লড়ছেন রামেন্দু-ফেরদৌসী দম্পতি
ফেরদৌসী মজুমদার নিজ হাতে রান্না করছেন। ঘুম থেকে উঠে দৈনিক পত্রিকা পড়ছেন রামেন্দু মজুমদার। প্রাত্যহিক জীবন স্বাভাবিকভাবেই কেটে যাচ্ছে তাঁদের। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বন্ধু ও স্বজনদের ফোন ধরতে ধরতে খানিকটা ক্লান্ত তাঁরা জানিয়েছেন, এখনো ভালোই আছেন দুজন, বাড়ির বাকি মানুষেরাও।
ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাবেক বিশ্ব সভাপতি ও বর্তমান সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার এবং অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নিজেদের বাসায় আইসোলেশনে আছেন। ইতিমধ্যে ১৪ দিন অতিবাহিত হয়েছে রামেন্দুর। তিনি জানান, করোনায় আক্রান্তদের মতো তেমন লক্ষণ প্রকাশিত হয়নি তাঁদের দুজনের কারও। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভালো আছি।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রামেন্দু মজুমদার প্রথম আলোকে জানান, গত ১৮ জুলাই প্রথমে ফেরদৌসী মজুমদারের কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। পরে ২৪ জুলাই জানতে পারেন, তিনিও করোনায় আক্রান্ত। রামেন্দু মজুমদার জানান, শুরু থেকেই তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসাতেই আছেন, মেনে চলছেন স্বাস্থ্যবিধি। এখনো চিকিৎসা চলছে। দুজনের কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার ২৫ দিন পর দ্বিতীয় পরীক্ষা করাবেন। তারপর জানা যাবে তাঁরা করোনামুক্ত হয়েছেন কি না।
১৯৭০ সালের ১৪ মার্চ সংসারজীবন শুরু করেন দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের দুই গুণী ব্যক্তিত্ব ফেরদৌসী মজুমদার ও রামেন্দু মজুমদার। একসঙ্গে এই লম্বা সময় পার করার পেছনে ছিল পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও বন্ধুত্ব। তাঁদের ৫০ বছরের দাম্পত্য জীবনে টুকটাক রাগারাগি, ঝগড়া হয়েছে খুবই কম। ফেরদৌসী মজুমদার রাগলে চুপচাপ থেকেছেন রামেন্দু মজুমদার। বাজার-সদাই থেকে শুরু করে সবকিছু সামলেছেন ফেরদৌসী, বাইরের কাজের হিসাব-নিকাশ রেখেছেন রামেন্দু মজুমদার।
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী নাট্যদল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠালগ্নের সদস্য ছিলেন এই দম্পতি। ফেরদৌসী মজুমদার অভিনয় করেছেন ‘এখন দুঃসময়’, ‘কোকিলারা’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’, ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘ম্যাকবেথ’সহ বহু নাটকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য নির্মিত নাটকগুলোতেও অভিনয় করে মানুষের মন কেড়ে নিয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার। তাঁর অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘সংশপ্তক’ অন্যতম।