টাকার জন্য আটকে যাবে এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসা?
‘এন্ড্রু কিশোর দাদার জন্য তাঁর অনুমতি নিয়ে অনেকের কাছে গিয়েছি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। যা-ই পাচ্ছি, তা দিয়েই দাদার চিকিৎসা হচ্ছে। চিকিৎসা অব্যাহত রাখার জন্য এখনো অনেক টাকা প্রয়োজন। কিন্তু তা কীভাবে জোগাড় হবে? কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দাদার চিকিৎসা আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ বললেন মোমিন বিশ্বাস। এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন তিনি।
এন্ড্রু কিশোর এখন ক্যানসারে আক্রান্ত। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা চালানোর জন্য গত অক্টোবর মাসের শেষ দিকে নিজের একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। তাঁর চিকিৎসায় সহযোগিতা করার জন্য এরই মধ্যে কয়েকজন শিল্পী ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে। সেই অর্থ দিয়েই এত দিন এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসা হয়েছে।
গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে বলা হয়েছে, এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ ব্যাপারে মোমিন বিশ্বাস বলেন, ‘ছয়–সাত দিন যাবৎ দাদার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। গত পাঁচ দিন তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। প্রতিদিনই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়। এর আগে কেমোথেরাপি নিয়ে বাসায় চলে যেতেন। বুস্টার দেওয়াসহ অন্যান্য পরীক্ষার জন্য বাসা থেকে হাসপাতালে যান। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আশানুরূপ না হওয়ায় এবার আর তাঁকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে রেখেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বাসায় যান।’
এন্ড্রু কিশোর এখন কেমন আছেন? মোমিন বিশ্বাস বললেন, তাঁর সঙ্গে আজ বুধবার দুপুরে কথা হয়েছে। এখন তিনি বাসায় আছেন। গত কয়েক দিনের তুলনায় একটু ভালো। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে অনেকেই বিকাশের ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের জন্য আর্থিক সহযোগিতা চাচ্ছেন। এন্ড্রু কিশোরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না, তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ক্ষেত্রে অনেকেই এভাবে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
গত ২৪ নভেম্বর এন্ড্রু কিশোর প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এ পর্যায়ের চিকিৎসার জন্য আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে সেখানে থাকতে হবে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৩টি সাইকেলে আরও ১২টি কেমোথেরাপি দেওয়া হবে। তাঁর এই চিকিৎসা সম্পন্ন করার জন্য আরও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন।
এরই মধ্যে এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠনের আবেদন করেছেন তাঁর স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু। ‘গো ফান্ড মি’ নামের ওয়েবসাইটে এটি করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা বোর্ডের কাগজপত্র নিয়ে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী বাংলাদেশিরা এই অনলাইন ফান্ডিংয়ের পেজ চালু করেছেন।