লোকজ সুর, নান্দনিক ছন্দে 'মাটির মানুষ'
নেপথ্যে ভরাট কণ্ঠে কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের লোকজ সংগীত সাধনার দীর্ঘ পথচলার কষ্টমাখা বর্ণনা। ফাঁকে ফাঁকে চলে লোকজ সুরের ছন্দের সঙ্গে নান্দনিক দলীয় নৃত্য। কাহিনির বর্ণনা, লোকজ সুর আর নৃত্যের ছন্দে মুগ্ধ দর্শক।
শত দর্শক–হৃদয়ে মুগ্ধতার এই আবহ ছিল শনিবার বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব মঞ্চে ভারতের ত্রিন্তিনি ড্যান্স ট্রুপ নৃত্য দলের ‘মাটির মানুষ’ নৃত্যালেখ্য পরিবেশনায়। সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নৃত্য নির্দেশনায় রাত পৌনে নয়টায় এই নৃত্যালেখ্য শুরু হয়। ৩০ মিনিট ব্যাপ্তিকালের এই নৃত্যালেখ্য যতটা মুগ্ধ করেছে দর্শক মন, তার চেয়েও কালিকাপ্রসাদকে আরও বেদনাহত হৃদয়ে একবার স্মরণ করেছে। কালিকাপ্রসাদের জীবনদর্শন নিয়ে সাজানো মাটির মানুষ নৃত্যনাট্যে বারবার ধ্বনিত হয়েছে গান শোনার নয়; দেখার।
নৃত্যালেখ্যের ফাঁকে ফাঁকে ভরাট ও দরদমাখা কণ্ঠে বাংলা লোকজ গানের প্রতি কালিকাপ্রসাদের ভালোবাসার বর্ণনা দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বর্ণনায় তুলে ধরা হয় কালিকাপ্রসাদ গানের মাধ্যমে নিজেকে, সমাজকে, জাতিকে ও দেশকে শুধু অন্যভাবে তুলে ধরেননি, তিনি ছিলেন দুই বাংলার লোকগানের অনন্য বাহক। তাঁর গানে মাটির ঘ্রাণ, দেশভাগের কষ্ট ফুটে উঠেছে। তিনি ছিলেন হাসন রাজা, শাহ শিতালং, রাধারমণ, লালনের সুর সাধক।
এভাবে কণ্ঠ, লোকগান আর নৃত্যের মাধ্যমে ওপার বাংলার শিল্পীরা লোকজ সুর সাধক কালিকাপ্রসাদকে নান্দনিকভাবে তুলে ধরেন বাংলাদেশি দর্শকের কাছে। নৃত্যালেখ্য শেষে ভারতীয় শিল্পীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।