হো হো, হো চি মিন

হো চি মিনের প্রয়াণের ৫০ বছর পূর্তিতে তৈরি হচ্ছে এই নৃত্যনাট্য
হো চি মিনের প্রয়াণের ৫০ বছর পূর্তিতে তৈরি হচ্ছে এই নৃত্যনাট্য

ঢাকায় একটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। ঢাকায় আসছেন মহামতি লেনিন এবং হো চি মিন! ঢাকা সফর শেষে তাঁরা যাবেন ভিয়েতনাম। ঢাকার জন্য এটি একটি চমক বটে। ভিয়েতনামের অনেক বড় প্রাপ্তি।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ছাদঘরে চলছিল প্রস্তুতি। ভিয়েতনাম নামের যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে সেখানে। সেখানকার সমাজের বৈষম্য, ধনী-গরিবের ভেদ ভেঙে দিতে হাজির হলেন একজন মহান মানুষ—হো চি মিন তাঁর নাম। বিপ্লবের জন্য কত নির্যাতন, জেল-জুলুম সইতে হলো তাঁকে। যুদ্ধের জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করলেন তিনি। মার খাওয়া ভিয়েতনামের জনগণ তবু মাথা তুলে দাঁড়াল। ভেঙে দিল বৈষম্যের থাবা। হো চি মিনের সেই বিপ্লবী ভ্রমণকে নৃত্যনাট্য ‘হো চি মিন’–এর মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছে তুরঙ্গমী ড্যান্স থিয়েটার।

হো চি মিন নৃত্যনাট্যের মহড়ার একটি দৃশ্য
হো চি মিন নৃত্যনাট্যের মহড়ার একটি দৃশ্য

মহড়াকক্ষের কাঠের মেঝেতে খালি পায়ে উঠছিল বুটের আওয়াজ। যেন সত্যিই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে গত শতকের ৫০-এর দশকের ভিয়েতনাম। গর্জে উঠছে নেতার বিপ্লবী কণ্ঠ। যোদ্ধারাই কখনো–বা নেচে উঠছেন শান্তির পায়রা হয়ে। দুলে উঠছেন ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ সুরে। কখনো বেজে উঠছে ইউয়ান ম্যাককলের ‘দ্য ব্যালাড অব হো চি মিন’—হো হো, হো চি মিন। নৃত্যশিল্পীদের একজনের কাছে জানতে চাই, যুদ্ধক্ষেত্র, মানে মূল মঞ্চে কি কাগজের বন্দুক দিয়েই লড়বেন তাঁরা? তিনি জানালেন, সত্যিকারের বন্দুকের বিপক্ষে তাঁরা। 

আগামী ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা ও সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে রয়েছে এ নৃত্যনাট্যের প্রদর্শনী। খুব সাধারণ কোনো নাচ-নাট্য নয় এটি। জীবনীভিত্তিক এ নৃত্যনাট্যের চিত্রনাট্য, নির্দেশনা, কোরিওগ্রাফি, সেট, পোশাক, কণ্ঠ ও নির্দেশনা দিয়েছেন দলনেতা পূজা সেনগুপ্ত। ভিয়েতনামের স্বাধীনতা দিবস এবং হো চি মিনের মৃত্যুর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় হতে যাচ্ছে এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী। পরে হবে ভিয়েতনামে। 

হো চি মিন নৃত্যনাট্যের শব্দ ও সংগীতে শোনা যাবে হো চি মিনের কণ্ঠ, তাঁর লেখা কবিতার আবৃত্তি। রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকেও পাওয়া যাবে এ জীবনীনাট্যে। আলো আর আবহ সংগীতের সঙ্গে মিলিয়ে গল্পটি দেখার পর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠবেন যে কেউই। নৃত্যনাট্যটি দেখে বাড়ি ফেরার পথে দর্শক বাধ্য হয়ে মনে মনে গাইবেন ‘হো হো, হো চি মিন’ গানটি।