ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া খালি হাতে ফিরল না কেউ
বিখ্যাত জার্মান অভিনেতা ব্রুন গান্সের মৃত্যু আর পরিচালক ডিটার কশ্লিকের বিদায়—এই দুইয়ের মধ্য দিয়ে বেদনাভারাক্রান্তভাবে শুরু হয়েছিল ৬১তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। তবে সমাপনী দিনে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে সেই বেদনা ঘুচে যায়। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এ বছর শ্রেষ্ঠ ছবির পুরস্কার, অর্থাৎ ‘গোল্ডেন বিয়ার’ জিতে নেয় ফ্রান্স-জার্মানির যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ইসরায়েলি পরিচালক নাভাদ লাপিদের ছবি সিননুমস।
পুরো উৎসবের সময়টায় গোল্ডেন বিয়ারজয়ী সিননুমস নিয়ে কোনো রা শোনা যায়নি। যে ছবিটির ব্যাপারে অনেক আশাবাদী ছিলেন উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা, সেটি চীনের পরিচালক ওয়াং জিয়াও শুয়াইয়ের তিন ঘণ্টা ব্যাপ্তির ছবি সো লং মাই সান। এর ভাগ্যে শ্রেষ্ঠ ছবির পুরস্কার না জুটলেও এর দুই মূল অভিনয়শিল্পী ওয়াং জিংচুন আর ইওং মেই পেয়েছেন একই সঙ্গে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার। গল্পের এই দম্পতির একমাত্র শিশুসন্তান লেকের পানিতে ডুবে মারা যায়। তারপর তিন দশকের মতো তাদের দীর্ঘ যাপিত জীবনের চলচ্চিত্রায়ণের মধ্যে উঠে আসে আধুনিক চীনের কঠিন জীবন আর এক সন্তান নীতির ফলে ঘটে চলা মানবিক বিপর্যয়।
উৎসবে কিছু ছবি থাকে, যাদের ওপর অনেক সাধারণ দর্শক রেগে থাকেন। কারণ, এই ছবিগুলো গৎবাঁধা গল্প বলার ধার না ধেরে বিশেষ আঙ্গিকে চলচ্চিত্রের ভাষা আর বিষয়ের সঙ্গে নতুন করে বোঝাপড়ার চেষ্টা করে। জার্মান নারী নির্মাতা আঙ্গেলা শানেলেকের আই ওয়াজ অ্যাট হোম, বাট…ঠিক এ রকম একটা ছবি। এই ছবি দিয়েই শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে ‘সিলভার বিয়ার’ জিতে নিয়েছেন আঙ্গেলা।
বার্লিন উৎসবের অনেক দিনের পরিচিত মুখ এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত ফরাসি নির্মাতা ফ্রাঁসোয়া ওজোন তাঁর নতুন ছবি বাই দ্য গ্রেস অব গড দিয়ে ‘বিগ প্রাইস অব দ্য জুরি’ জিতে নিয়েছেন।
অন্যদিকে চলচ্চিত্রশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে সম্মানসূচক ‘গোল্ডেন বিয়ার’-এ ভূষিত হয়েছেন ফরাসি বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শারলট র্যামপ্লিং।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আরও যাঁরা পুরস্কার পেলেন
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: রাজমুস ভিদেবেক (নরওয়ে) ছবি: স্টিলিং দ্য হর্সেস
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য: ক্ল্যান অব চিলড্রেন
গ্লাস হুটে অরিজিনাল ডকুমেন্টারি অ্যাওয়ার্ড:টকিং অ্যাবাউট ট্রিস (সুদান)
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি: উম্ব্রা (জার্মানি)