প্রকৌশলের শিক্ষার্থী, আগ্রহ ব্যবসাতেও
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে মেয়েদের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী যারিন তাসনিম। প্রথম বর্ষেই তিন বন্ধু মিলে তৃতীয় স্থান জিতে নিয়েছিলেন আন্তবিজনেস কেস প্রতিযোগিতায়। পড়াশোনার বিষয়টা তাঁর তড়িৎ প্রকৌশল। কিন্তু ব্যবসাশিক্ষার প্রতি আগ্রহও মোটেই কম নয়। আগ্রহ আর পরিশ্রমেই জিতে নিয়েছেন ‘ব্র্যান্ড মাস্টার ২০১৮’–এর শিরোপা। সেই বছরেই খবর পেলেন, ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো ‘হাল্ট প্রাইজ’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অংশগ্রহণ করতে ভুলেননি। সেখানে প্রথম রানারআপ হওয়ার পর জানতে পারেন, চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি আঞ্চলিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে, যা কিনা অনুষ্ঠিত হবে ভিয়েতনামে।
চ্যাম্পিয়ন না হওয়ার দুঃখ ভোলার আগেই আকস্মিকভাবে হাল্ট আয়োজকেরা নিমন্ত্রণপত্র পাঠায় যারিন ও তাঁর দলকেও। এ বছর এপ্রিলে ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরে পঞ্চাশের বেশি দেশ থেকে আগত তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে সম্মেলন করে হাল্ট আয়োজকেরা। মজার বিষয় হলো, আইইউটি থেকে নির্বাচিত ৭ জনের মধ্যে একমাত্র নারী প্রতিনিধি ছিলেন যারিন।
শুধু তা–ই নয়! হাল্ট আয়োজকেরা যারিনকে নিয়োজিত করেছে ক্যাম্পাস পরিচালক হিসেবেও। হাল্ট মূলত সারা পৃথিবীর তরুণদের উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ করছে।
ব্যবসাশিক্ষার আগ্রহের পাশাপাশি নিজ বিষয়েও পিছিয়ে নেই যারিন। আন্তর্জাতিক তড়িৎ প্রকৌশলীদের সংস্থা আইইইই আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাস প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। এ ছাড়া তিনি আইইইইর একজন সদস্য এবং আইইউটি শিক্ষার্থী শাখায় একজন জ্যেষ্ঠ পাবলিকেশন অফিসার।
লেখালেখির অভ্যাস ছিল ছোটবেলা থেকেই। তা বাংলায় হোক বা ইংরেজি। সেই সূত্রেই আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন অ্যাম্বার–এর পাবলিকেশন কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন যারিন তাসনিম। বিতর্কের নেশাটাও বেশ পুরোনো। হলি ক্রস স্কুল এবং কলেজেও বিতর্ক সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। এত কিছু করতে গিয়ে পড়ালেখায় কি একটু ছেদ পড়ল? মোটেই নয়। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এসএসসি ও এইচএসসিতেও পেয়েছেন সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি।
সবকিছু কীভাবে সামলে নেন? যারিনের উত্তর যেন তৈরিই ছিল। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোনো সাফল্যই ছোট নয়, কোনো চেষ্টাই বৃথা নয়। জীবনে দুই মিনিট যদি আমি কোনো বক্তৃতা সভায় অংশগ্রহণ করে ব্যয় করি, তো দুই বছর পর হলেও আমি সেই অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগের সুযোগ পাব।’
যারিন তাসনিম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, গাজীপুর