আমরা জানি, একটি একক ত্রিভুজে কোনো অভ্যন্তরীণ তির্যক রেখা ছাড়া মোট 1টি ত্রিভুজ থাকে। কিন্তু, অভ্যন্তরে 1টি তির্যক রেখা থাকলে মোট কয়টি ত্রিভুজ হবে?
উত্তর হবে, মোট 3 টি ত্রিভুজ। 1টি বড় ত্রিভুজ এবং তারপর 2টি নতুন ছোট ত্রিভুজ। চিত্র-(i) এ ∆ABC এর AD তির্যক রেখা।
যদি আমরা আরেকটি তির্যক উল্লম্ব রেখা যোগ করি, তাহলে ত্রিভুজের সংখ্যা হবে 6, চিত্র-(ii) এ ∆ABC এর AD একটি তির্যক রেখা এবং AE আরেকটি তির্যক রেখা। কারণ, আমাদের 1টি তির্যক লাইনের ক্ষেত্রে 3টি ত্রিভুজ হয় এবং অন্য আরেকটি তির্যক রেখার জন্য আরও 3টি ত্রিভুজ হবে। তাহলে মোট 3+3 = 6টি ত্রিভুজ হবে অর্থাৎ 1টি বড় ত্রিভুজ ∆ABC, 2টি মাঝারি আকারের ত্রিভুজ ∆ADC ও ∆ABE এবং তারপর 3টি ছোট ত্রিভুজ রয়েছে ∆ABD, ∆ADE ও ∆AEC।
এখন আমরা একটি প্যাটার্ন নির্ণয় করতে পারি। n সংখ্যক উল্লম্ব রেখা দ্বারা বিভক্ত একটি ত্রিভুজের মোট সংখ্যার প্যাটার্ন হবে 1 + 2 + 3 + … + n + (n+1)
আমরা জানি, n সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি = n(n+1)/2, অর্থাৎ 1 + 2 + 3 + … + n = n(n+1)/2 তাহলে, 1 + 2 + 3 + … n + (n+1) = (n+1)(n+1+1)/2 = (n+1)(n+2)/2 সুতরাং, n সংখ্যক তির্যক উল্লম্ব রেখা যোগ করলে মোট ত্রিভুজসংখ্যা হবে = (n+1)(n+2)/2 টি।
চলো আরেকটু জটিল সমস্যা দেখা যাক, এতক্ষণ আমরা একটি বেইস বা ভূমির জন্য দেখেছি, কিন্তু একাধিক ভূমি থাকলে মোট ত্রিভুজসংখ্যা কত হবে? চিত্র-(iii)
একাধিক ভূমি থাকলে, প্রতিটি স্বতন্ত্র ভূমির জন্য মোট ত্রিভুজ সংখ্যার যোগফলই হবে নির্ণেয় ত্রিভুজসংখ্যা।
যেমন, PQ ভূমির জন্য মোট ত্রিভুজসংখ্যা (2+1)(2+2)/2 = 6টি অর্থাৎ ∆APQ, ∆AGQ, ∆AHP, ∆APG, ∆AGH ও ∆AHQ । একইভাবে, MN এবং BC ভূমির জন্যও মোট ত্রিভুজসংখ্যা 6টি করে। তাহলে, নির্ণেয় ত্রিভুজসংখ্যা = PQ ভূমির জন্য মোট ত্রিভুজসংখ্যা + MN ভূমির জন্য মোট ত্রিভুজসংখ্যা + BC ভূমির জন্য মোট ত্রিভুজসংখ্যা = 6 + 6 + 6 = 18টি।
এবার আরেকটু জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যাক,
সমবাহু ত্রিভুজের একটি গ্রিডে কয়টি ত্রিভুজ গঠিত হয়, যার ভেতর n সংখ্যক ত্রিভুজ থাকে? চিত্র-(iv)
উপরিউক্ত ছক থেকে মোট ত্রিভুজ হয় 1+3+6+10+6+1 = 27টি। এখন, ছকটি থেকে আমরা একটি প্যাটার্ন নির্ণয় করার চেষ্টা করি। ধরি, বৃহত্তম ত্রিভুজটির ভেতরের পাশাপাশি ছোট ত্রিভুজের সর্বোচ্চ সংখ্যা n।
এখানে ঊর্ধ্বমুখী ত্রিভুজের সংখ্যা ও নিম্নমুখী ত্রিভুজের সংখ্যার ধারা দুটি সমন্বয় করলে নির্ণেয় সমষ্টি হবে {n(n+2)(2n+1)}/8 ; যেখানে বৃহত্তম ত্রিভুজটির ভেতরের পাশাপাশি ছোট ত্রিভুজের সর্বোচ্চ সংখ্যা n। পুরো প্রমাণটি পরবর্তী কোনো পর্বে আলোচনা করব।
(iv) চিত্রে বৃহত্তম ত্রিভুজটির ভেতরের পাশাপাশি ছোট ত্রিভুজের সর্বোচ্চ সংখ্যা 4। সুতরাং, মোট ত্রিভুজসংখ্যা হবে 4(4+2){(2×4)+1}/8 = 27টি। এখানে বলা বাহুল্য, ফলাফল দশমিক নম্বর হলে, নিচের দিকের পূর্ণসংখ্যাই হবে নির্ণেয় ত্রিভুজসংখ্যা। যেমন, ফলাফল 20.11 হলে নির্ণেয় ফলাফল হবে 20, আবার ফলাফল 20.9 হলেও নির্ণেয় ফলাফল 20 হবে।
আশা করছি, ওপরের সূত্রটি তোমরা বুঝতে পেরেছ।তো আপনমনে গণিত চর্চা করতে থাকো। দেখা হবে অন্যদিন, নতুন কোনো গাণিতিক বিষয় নিয়ে।