⊳ দশমিকের পর কোনো অঙ্ক 5 বা তার বেশি থাকলে, তার আগের অঙ্কের সঙ্গে 1 যোগ করি কেন ?
⊳⊳ স্কুল-কলেজে আমরা বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে একেক সময় একেক রকম উত্তর পেয়েছিলাম। কখনো কখনো দশমিকের পর দুই বা তিন বা চার ঘর পর্যন্ত উত্তর বের করতে বলা হতো। দশমিকের পর তিন বা চার বা পাঁচ ঘরের অঙ্ক 5 বা তার বেশি থাকলে যথাক্রমে দুই বা তিন বা চার ঘরের অঙ্কের সাথে 1 যোগ করে উত্তর লিখতাম। আবার 5 বা তার বেশি না থাকলে 1 যোগ করতাম না।
যেমন : 3.257 থাকলে দশমিকের পর দুই ঘর পর্যন্ত 3.26 লিখতাম এবং 3.254 থাকলে দশমিকের পর দুই ঘর পর্যন্ত 3.25 লিখতাম।
কিন্তু কেন 5 বা তার বেশি থাকলে 1 যোগ করতাম এবং 5 এর কম থাকলে কেন 1 যোগ করতাম না, তা হয়তো অনেকেই জানতাম না।
দশমিকের পর ছোট করে সংখ্যা লেখার পদ্ধতি হলো দুই রকমের। একটি আসন্নকৃত মান, অপরটি কর্তিত মান। আসন্নীকৃত মানে 1 যোগ করা হয়, কিন্তু কর্তিত মানে 1 যোগ করা হয় না। যেমন- 2.135 এর দুই ঘর পর্যন্ত আসন্নকৃত মান 2.14 কিন্তু কর্তিত মান 2.13।
তবে স্বাভাবিকভাবে আমরা কর্তিত মান ব্যবহার না করে আসন্নকৃত মান ব্যবহার করি। কারণ এতে ভুলের হার কম থাকে।
যেমন- 5.34534 সংখ্যাটির দুই ঘর পর্যন্ত আসন্নকৃত মান 5.35, যা মূল সংখ্যা থেকে 0.00466 বেশি। আবার কর্তিত মান 5.24, যা মূল সংখ্যা থেকে 0.00534 কম।
এখন 0.00534 - 0.00466 = 0.00068, অর্থাৎ কর্তিত মানে ভুলের হার আসন্নকৃত মানের থেকে 0.00068 বেশি। তাই আসন্নকৃত মান ব্যবহার করা হয় মানে দশমিকের পর কোন অঙ্ক 5 বা তার বেশি হলে আগের অঙ্কের সঙ্গে 1 যোগ করা হয়।
⊳ দুই বা ততোধিক ভগ্নাংশের গ.সা.গু. = (ভগ্নাংশগুলোর লবের গ.সা.গু.)/(ভগ্নাংশগুলোর হরের ল.সা.গু.) এবং ল.সা.গু =(ভগ্নাংশগুলোর লবের ল.সা.গু.)/(ভগ্নাংশগুলোর হরের গ.সা.গু.) কেন হয় ?
⊳⊳ মনে করি, a/b এবং c/d দুটি ভগ্নাংশ। যেখানে a, b পরস্পর সহমৌলিক এবং c, d পরস্পর সহমৌলিক।
এখন ধরি, p/q (p, q পরস্পর সহমৌলিক) হলো a/b এবং c/d ভগ্নাংশ দুটির ল.সা.গু.। যেহেতু p/q, উভয়ই ভগ্নাংশের ল.সা.গু. অর্থাৎ লঘিষ্ঠ সাধারণ গুনিতক, সেহেতু p/q, উভয়ই ভগ্নাংশ দ্বারা বিভাজ্য হবে অর্থাৎ, (p⁄q)/(a⁄b) ও (p⁄q)/(c⁄d) উভয়ই একটি পূর্ণ সংখ্যা হবে।
এখন, যেহেতু (p⁄q)/(a⁄b) বা pb/aq পূর্ণ সংখ্যা, তাহলে p অবশ্যই a দ্বারা বিভাজ্য হবে এবং b অবশ্যই q দ্বারা বিভাজ্য হবে (কারণ a, b পরস্পর সহমৌলিক এবং p, q পরস্পর সহমৌলিক)।
আবার, (p⁄q)/(c⁄d) বা pd/cq পূর্ণ সংখ্যা, তাহলে p অবশ্যই c দ্বারা বিভাজ্য হবে এবং d অবশ্যই q দ্বারা বিভাজ্য হবে (কারণ c, d পরস্পর সহমৌলিক এবং p, q পরস্পর সহমৌলিক)।
তাহলে বলা যায়, p; a ও c এর সাধারণ গুণীতক দ্বারা বিভাজ্য। কিন্তু, p; a ও c এর যেকোনো গুণিতক হবে না, অবশ্যই লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক (ল.সা.গু.) হতে হবে যাতে p/q এর মান লঘিষ্ঠ হয়।
আবার, b ও d উভয়ই q দ্বারা বিভাজ্য। তাহলে, q অবশ্যই তাদের গরিষ্ঠ উৎপাদক/গুণনীয়ক (গ.সা.গু.) হতে হবে যাতে p/q লঘিষ্ঠ হয়।
তাহলে আমরা লিখতে পারি, p/q = (a ও c এর ল.সা.গু.)/(b ও d এর গ.সা.গু)।
আবার, p/q হলো a/b এবং c/d ভগ্নাংশ দুটির ল.সা.গু.।
∴ a/b এবং c/d এর ল.সা.গু. = (a ও c এর ল.সা.গু.)/(b ও d এর গ.সা.গু.)
দুই এর বেশি ভগ্নাংশের জন্যও একইভাবে লেখা যায়।
আবার, একই উপায়ে দুই বা ততোধিক ভগ্নাংশের গ.সা.গু. হবে = (ভগ্নাংশগুলোর লবের গ.সা.গু.)/(ভগ্নাংশগুলোর হরের ল.সা.গু.)।
তোমরা সহজেই প্রমাণ করতে পারবে, একটু চেষ্টা করেই দেখো ।