মোদির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণার ফাঁদ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়ার পর তা থেকে একাধিক টুইট করে মোদির অনুসারীদের একটি ত্রাণ তহবিলের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে সাহায্য পাঠাতে অনুরোধ করা হয়।
টুইটার কর্তৃপক্ষ হ্যাকিংয়ের ঘটনা স্বীকার করে বলেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, মোদির ওয়েবসাইটের যে টুইটার অ্যাকাউন্ট, সেখান থেকে কোভিড-১৯ ত্রাণ তহবিলের জন্য অনুদানের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করতে আহ্বান জানানো হয়। মোদির হ্যাক করা ওই অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছেন। অবশ্য মোদির ব্যক্তিগত যে অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি ১০ লাখের বেশি অনুসারী, তা অক্ষত রয়েছে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তা থেকে একাধিক টুইট করে হ্যাকাররা। টুইটার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে হ্যাকড অ্যাকাউন্টটি সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেয়।
সম্প্রতি টুইটারে হ্যাকড অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে এটি বড় ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন, টেসলা প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্কের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণার চেষ্টা করেছিল হ্যাকাররা।
টুইটারের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে তদন্ত করছি। এ সময় আর কোনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কি না, তা এখনো জানতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত যে অ্যাকাউন্ট প্রভাবিত হয়েছে, সে সম্পর্কে সচেতন ছিলাম না।’
মোদির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে যেসব টুইট করা হয়েছিল, তা মুছে দেওয়া হয়েছে। ওই টুইটে অনুসারীদের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলে ক্রিপটোকারেন্সির মাধ্যমে দান করতে বলা হয়। গত জুলাই মাসে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পর মোদির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনা ঘটল।
গত জুলাইয়ে টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক, আমাজনের জেফ বেজোস, মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অনলাইন দুনিয়ায় ঝড় তোলে হ্যাকাররা। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বড় বড় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ফেলে সাইবার স্ক্যামাররা। তারা এসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ক্রিপটোকারেন্সি বিটকয়েন নিতে মানুষকে প্রলুব্ধ করতে থাকে।
হ্যাকড অ্যাকাউন্টের তালিকায় জো বাইডেন, বারাক ওবামা, উবার, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, বিটকয়েন বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম দেখা যায়।
বড় বড় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ভুয়া বার্তা দিয়ে বলা হয়, ৩০ মিনিটের মধ্যে এক হাজার ডলার বিটকয়েনে পাঠালে দ্রুত এর দ্বিগুণ ফেরত পাওয়া যাবে। এসব টুইট বিশ্বাস করে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন।
এর আগেও ২০১৭ সালে টুইটারে বড় বড় সংস্থার অ্যাকাউন্ট বেহাত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অ্যাকাউন্টও ছিল। এমনকি টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখানে বর্ণবাদী মন্তব্য পোস্ট করেছিল হ্যাকাররা।