কে এই রায়ান, ইউটিউব থেকে আয় ২৫১ কোটি টাকা

রায়ান কাজী ইউটিউব থেকে পরপর তিন বছর সেরা আয়কারী
ছবি: সংগৃহীত

বয়স মাত্র নয় বছর। রায়ান কাজী নামের এই শিশুর আয় শুনলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হবে। এই বয়সে এ বছরে তার পকেটে আছে ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার।

আর টাকায় ২৫১ কোটির বেশি (১ ডলার সমান ৮৪.৮১ টাকা ধরে)। ২০২০ সালের সবচেয়ে বেশি আয়কারী ইউটিউবারদের তালিকার সবার ওপরে আছে আমেরিকান ওই স্কুলছাত্র।

রায়ান কাজী যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে থাকে। তবে যাঁদের ইউটিউবে নিয়মিত যাতায়াত, তাঁরা অবশ্য রায়ান সম্পর্কে জানেন। রায়ানের এ কীর্তি তাঁদের কাছে নতুন নয়। দুই বছর আগে ২০১৮ সালেও সবচেয়ে বেশি আয়কারী ইউটিউবারের তকমা ছিল রায়ানের কাছে। ২০১৭ সালেও সাত বছর বয়সেও ইউটিউব থেকে আয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল রায়ান। গত বছর ইউটিউব থেকে রায়ানের আয় ২৬ মিলিয়ন ডলার। একই ধারাবাহিকতা এ বছরও বজায় রেখে আয়ে ইউটিউবারদের সবার ওপরের জায়গাটা টানা তৃতীয়বারের মতো নিজের কাছেই রেখেছে ওই খুদে বিস্ময়।

এ বছর ইউটিউব থেকে ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার আয় ছাড়াও আরও আয় আছে রায়ানের। নিজস্ব ব্র্যান্ডের খেলনা ও পোশাক এবং মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার ব্র্যান্ডের পায়জামা থেকে রায়ানের আয় আনুমানিক ২০০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া টেলিভিশন চ্যানেল নিকিলোডিওন তার সঙ্গে কয়েক মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। তবে চুক্তির অঙ্কটা অপ্রকাশিত। চ্যানেলটি নিজস্ব টিভি সিরিজ প্রচারের জন্য রায়ানকে মোটা অঙ্কেই রাজি করিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ছোটবেলায় শিশুদের খেলনার ভিডিও দেখে রায়ান মাকে বলে, কেন আমি ইউটিউবে নেই, যেখানে অন্য সব শিশুই আছে? এরপরই তিন বছর বয়সে (২০১৫) রায়ানের মা–বাবা ইউটিউবে ‘রায়ানস টয়েস রিভিউ’ নামের একটি চ্যানেল খুলে দেন। পরে অবশ্য চ্যানেলটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘রায়ানস ওয়ার্ল্ড’। আজ পর্যন্ত এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা চার কোটি পেরিয়ে গেছে। ইউটিউবে সবাই তাকে প্রভাবশালী শিশু বলেই ডাকে।

রায়ানের ভিডিও ইউটিউবে আপ হওয়া মাত্রই হুমডি খেয়ে পড়ে শিশুসহ বড়রাও
ছবি: ইউটিউব

তবে তার আসল নাম রায়ান গুয়ান। ইউটিউবে তার নামে গুয়ান বাদে কাজী জুড়ে দেওয়া হয়। তবে আয়ের কারণে নানা ঝামেলায়ও পোহাতে হয় রায়ানকে। আমেরিকার ফেডারেল ট্রেড কমিশনের ধারণা, ইউটিউব কর্তৃপক্ষ রায়ানের আয়ের সঠিক তথ্য কর দেওয়ার ভয়ে দেয় না। কেউ কেউ রায়ানের খাবারের ভিডিওগুলোর খাদ্যমান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

ছোটবেলায় শিশুদের খেলনার ভিডিও দেখে রায়ান মাকে বলে, কেন আমি ইউটিউবে নেই, যেখানে অন্য সব শিশুই আছে? এরপরই তিন বছর বয়সে রায়ানের মা–বাবা ইউটিউবে ‘রায়ানস টয়েস রিভিউ’ নামের একটি চ্যানেল খুলে দেন
ছবি: ইউটিউব

এদিকে এ বছরের সবচেয়ে আয় করা সেরা ১০ ইউটিউবারের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। রায়ানের পর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ২২ বছর বয়সী ইউটিউবার জিমি ডোনাল্ডসন। ‘মি. বিস্ট’ নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে এ বছর তিনি আয় করেছেন ২৪ মিলিয়ন ডলার। তৃতীয় স্থানে থাকা ডুড পারফেক্টের আয় ২৩ মিলিয়ন ডলার।

আয়ের তালিকা
১.
রায়ান কাজী: আয় ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ৪১.৭ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ১২.২ বিলিয়ন)।
২.
মি. বিস্ট (জিমি ডোনাল্ডসন): আয় ২৪ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ৪৭.৮ মিলিয়ন, ভিডিও ভিউ ৩ বিলিয়ন)।
৩.
ডুড পারফেক্ট: আয় ২৩ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ৫৭.৮ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ২.৭৭ বিলিয়ন)।
৪.
রেহট অ্যান্ড লিংক: আয় ২০ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার ৪১.৮ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ১.৯ বিলিয়ন)।
৫.
মার্কিপ্লায়ার (মার্ক ফিশব্যাচ): আয় ১৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ২৭.৮ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ৩.১ বিলিয়ন)।
৬.
প্রিস্টন আর্সমেন্ট: আয় ১৯ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ৩৩.৪ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ৩.৩ বিলিয়ন)।
৭.
নাসতিয়া: আয় ১৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ১৯০.৬ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ৩৯ বিলিয়ন)।
৮.
বিলিপ্পি (স্টিভেন জন): আয় ১৭ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ২৭.৪ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ৮.২ বিলিয়ন)।
৯.
ডেভিড ডব্রিক: আয় ১৬ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ১৮ মিলিয়ন, ভিডিওর ভিউ ২.৭ বিলিয়ন)।
১০.
জেফরি লিন স্টেইনগার: আয় ১৫ মিলিয়ন ডলার (সাবক্রাইবার সংখ্যা ১৬.৯ মিলিয়ন, ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ভিডিওর ভিউ ৬০০ মিলিয়ন)। তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান ও ফোর্বস