জাতিসংঘের ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার পেল বিসিসি
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২০ অর্জন করল বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। বার্ষিক এ আয়োজনে ‘ই-এমপ্লয়মেন্ট’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্পের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) টিম তাদের ই-রিক্রুটমেন্ট প্ল্যাটফর্ম এ পুরস্কার পেয়েছে।
গতকাল সোমবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত ‘ডব্লিউএসআইএস ফোরাম ২০২০ প্রাইজেস অ্যাওয়ার্ড সিরেমনি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব হাওলিন ঝাও এ পুরস্কারের ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএন এসকেপের নির্বাহী সচিব আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাবানা, আইটিইউ থেকে ক্যাটালিন ম্যারিনেসক, ডমিনিক্যান রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূত ক্যাটরিনা ন্যট, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ফ্যাং লিউ প্রমুখ।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের এই অর্জনে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড-২০২০–এর পুরস্কারটি ভবিষ্যতে আরও সফল উদ্যোগ নিতে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পুরস্কার আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে নিরলস চেষ্টা করছে। রিক্রুটমেন্ট প্রসেস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসটি বিএনডিএ ফ্রেমওয়ার্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে এটা বিসিসিকে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগে অবদান রাখতে সহায়তা করে।’
ডব্লিউএসআইএস পুরস্কারকে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অন্যতম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবনকে সহজ ও পরিবর্তন আনার জন্য ওয়ার্ল্ড সামিট ফর ইনফরমেশন সোসাইটি কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে সারা বিশ্বের সৃজনশীল উদ্ভাবনগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান।
ডব্লিউএসআইএসের প্রতিযোগিতায় সরকারি, বেসরকারি, সাধারণ নাগরিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প জমা দেওয়ার পাশাপাশি ডব্লিউএসআইএসের অংশীদাররা এতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
বিশ্বের শতাধিক দেশ থেকে প্রাপ্ত আবেদন থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাছাই ও অনলাইন ভোটিং প্রক্রিয়ার শেষে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মোট ১৮টি ক্যাটাগরিতে আবেদন গ্রহণ করা হয়, যেখানে মোট ৭৬২ সাবমিশন থেকে ৩৫৪টি প্রকল্পকে নমিনেশন দেওয়া হয়। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে ৪টি করে মোট ৭২টি প্রকল্পকে বিজয়ী হিসেবে এবং সেরা প্রকল্প হিসেবে প্রতিটি ক্যাটাগরিতে একটি করে মোট ১৮টি প্রকল্পকে চূড়ান্ত বিজয়ী (উইনার) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ই-এমপ্লয়মেন্ট ক্যাটাগরিতে ফিলিপাইন, সৌদি আরব, ইসরায়েল ও বাংলাদেশ নমিনেশন পায় এবং বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয়ী হয়।
বিসিসির ই-রিক্রুটমেন্ট প্ল্যাটফর্মটি মূলত সব সরকারি সংস্থার জন্য একটি শেয়ারড সার্ভিস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং এ–সম্পর্কিত বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে সহায়তা করবে। এর চাকরিতে আবেদনকারী তার স্মার্টফোনের মাধ্যমে বাড়ি থেকেই আবেদন করতে পারবেন। প্ল্যাটফর্মটি ২৫টিরও বেশি সরকারি সংস্থায় ব্যবহার হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে ১ হাজার ৮০০ জনের বেশি জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।