বিটকয়েন মাইনিংয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘খেলোয়াড়’ ছিল চীন। তবে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ সেন্টার ফর অলটারনেটিভ ফাইন্যান্সের তথ্য বলছে, সে জায়গা এবার দখলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত সব ধরনের ভার্চ্যুয়াল মুদ্রায় লেনদেন নিষিদ্ধ করায় শীর্ষ অবস্থান হারাল চীন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত মে মাসের শেষ দিকে বিটকয়েনসহ সব ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন ও মাইনিং (নতুন ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা তৈরি) বন্ধে উদ্যোগ নেয়। এরপর এই খাত একরকম ধ্বংস হয়ে যায়। মাইনিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন, কেউ কেউ বিদেশেও পাড়ি জমাতে শুরু করেন।
বৈশ্বিক বিটকয়েন নেটওয়ার্কে যুক্ত কোনো দেশের কম্পিউটারগুলোর সম্মিলিত প্রসেসিং ক্ষমতাকে ‘হ্যাশ রেট’ বলা হয়। ২০১৯ সালে বিশ্বে চীনের হ্যাশ রেট ছিল ৭৫ শতাংশ। এমনকি গত মে মাসেও ৪৪ শতাংশ ছিল, যা গত জুলাই নাগাদ শূন্যে নেমে আসে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মাইনাররা এই সুযোগে এগিয়ে যায়। বিটকয়েন মাইনিংয়ে প্রয়োজনীয় কম্পিউটার যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও উত্তর আমেরিকা ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে মনোযোগী হয়ে ওঠে। আর মাইনিংয়ে যুক্ত বড় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চীন ত্যাগ করতে শুরু করে।
এতে মাইনিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। আগস্টের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক হ্যাশ রেটের ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল দেশটির দখলে। এরপর কাজাখস্তান ও রাশিয়ার অবস্থান।
নতুন বিটকয়েন তৈরির প্রক্রিয়ার নাম মাইনিং। সচরাচর বিশ্বের নানা প্রান্তের ডেটা সেন্টারগুলোতে উচ্চ ক্ষমতার কম্পিউটারে কাজটি করা হয়। জটিল গাণিতিক ধাঁধার সমাধান দিতে হয়, যার জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয়।
বিশ্বের অনেক দেশের সরকারই বিটকয়েন মাইনিংয়ে চীনের মতো এতটা খড়্গহস্ত হয়নি। অনেক দেশ তো স্বাগতও জানিয়েছে। আর সেখানে গত মাসে আরও কঠিন নিয়ম আরোপ করে চীন। সব ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নিষিদ্ধ করে।
চীনে বিটকয়েন মাইনিংয়ে যাঁরা হাত পাকিয়েছেন, তাঁদের হতাশা যেন যাচ্ছেই না। একসময়ের বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিটকয়েন মাইনিংপুল ‘এফটুপুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা মাও শিহাং বলেন, ‘একজন ভেটেরান হিসেবে আমি আজকের এই অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মনে করি।’