শেষ সময়ে এসে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে তিনটি শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতেও তা বাস্তবায়ন করা হবে। যেখানে প্রথাগত পরীক্ষাকে কম গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনার পাশাপাশি নতুন এ শিক্ষাক্রমের বিষয়টি মাথায় রেখে এ বছরসহ তিন বছর ধরে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আগামী দিনেও আর এ পরীক্ষা হচ্ছে না বলেই জানিয়ে আসছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকেরা। কিন্তু বছরের শেষ বেলায় এসে অনেকটা আকস্মিকভাবে এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। সম্প্রতি এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ বৃত্তি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ পরীক্ষা সব শিক্ষার্থী দিতে পারবে না। বিদ্যালয়ের বাছাই করা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষা দিতে পারবে।
পরীক্ষা হবে উপজেলা সদরে
রাজধানীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোকে জানান, এ বিষয়ে তাঁরা থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে একটি নির্দেশনা পেয়েছেন।
জানা গেছে, ওই নির্দেশনাপত্র জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে, ২৮ নভেম্বর এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রাথমিক বৃত্তি অব্যাহত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ বৃত্তি পরীক্ষা নিতে হবে। প্রতিটি উপজেলা সদরে হবে এ পরীক্ষা। এ জন্য মোট শিক্ষার্থীর ১০ শতাংশ হিসাব করে কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তথ্য পাঠাতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এত দিন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া হতো। যেহেতু সমাপনী পরীক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে, তাই বিকল্প হিসেবে পুরোনো পদ্ধতির মতো করে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে শিক্ষা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আকস্মিক এ সিদ্ধান্তে বৈষম্য সৃষ্টি হবে। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে সব শিক্ষার্থী অন্তত সুযোগটি পেত। এখন ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ সুযোগ পাবে। এতে বিদ্যালয়গুলোর নজর থাকবে অনেকটা এই ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ওপর। ফলে অন্যরা আরও পিছিয়ে পড়বে। এ ছাড়া আগে থেকে ঘোষণা না দেওয়ায় প্রস্তুতির অভাবে অনেকে সুযোগবঞ্চিত হবে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়বে। সাধারণত পরীক্ষাসংক্রান্ত বড় কোনো সিদ্ধান্ত হলে আগেভাগেই জানানো হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।