এক যুগ পরও শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে করুণ দশা

প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করাসহ অনেক বিষয় বাস্তবায়িত হয়নি। এসব নিয়ে কমিটির সদস্যরাও অসন্তুষ্ট।

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে। এতে বলা হয়েছিল, দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণির বদলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হবে। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকেই নতুন প্রাথমিক শিক্ষা চালু করে ২০১৮ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সব শিশুর জন্যই তা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জাতীয় শিক্ষানীতির মৌলিক এই সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। সরকার আদৌ এটি বাস্তবায়ন করবে কি না, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।

শুধু অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা নয়, জাতীয় শিক্ষানীতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই এখনো বাস্তবায়ন করেনি সরকার। তবে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালু, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম এবং মাদ্রাসা শিক্ষায় কয়েকটি বই বাধ্যতামূলক করাসহ কিছু কিছু বিষয় বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এক যুগেও শিক্ষানীতির অনেক মৌলিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হওয়ায় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য তাঁরা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিদের দায়ী করছেন।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান শিক্ষানীতি সব দিক দিয়েই সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল। প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল যখন এই শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি হয়, তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় ছিল। ২০১০ সালের মে মাসে কমিটির সুপারিশ করা শিক্ষানীতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। তখন থেকে আওয়ামী লীগ সরকার টানা ক্ষমতায়।

অতীতে শিক্ষানীতি নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা হলেও এই শিক্ষানীতি নিয়ে কোনো মহল থেকে বিরোধিতা হয়নি। ফলে বাস্তবায়নে তেমন বাধা ছিল না। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে এই শিক্ষানীতিও বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকল। এমনকি কোন কোন বিষয় বাস্তবায়িত হলো, আর কোন কোন বিষয় হলো না, তারও কোনো তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বরং দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে দেশে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিল। কমিশন ১৯৭২ সালেই প্রতিবেদন জমা দিলেও ওই শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর নানা সরকারের সময় আটটি শিক্ষা কমিশন বা কমিটি হলেও কোনোটিই আর আলোর মুখ দেখেনি। প্রশ্ন উঠেছে, বর্তমান শিক্ষানীতিও কি তাহলে পুরোনো পথে হাঁটছে? অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষা খাতে যেসব বিষয়ে সাফল্য আছে, তার মধ্যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হলো একটি।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা আর কবে

বর্তমানে দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। প্রথম শ্রেণির আগে এক বছরের প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষা আছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ক্ষেত্রে কমিটির যুক্তি ছিল, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মক্ষেত্রে খুব একটা কাজে আসে না। যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষা সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি করা গেলে তা কর্মক্ষেত্রে বা বাস্তবজীবনে বেশি কাজে দেবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ছয় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালুও করা হয়েছিল।

কিন্তু এরপর কোনো অগ্রগতি হয়নি; বরং যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয়েছিল, সেগুলোতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারণ, অবকাঠামো সুবিধা বা শিক্ষক বাড়ানো হয়নি। বিদ্যমান সুবিধায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করায় এগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিরপুর এলাকার এ রকম একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকের সংখ্যা না বাড়ানোসহ আরও কিছু অসুবিধার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবারই সমস্যা হচ্ছে। কারণ, এখন প্রাথমিকে পড়ানোর ব্যবস্থা এক রকম এবং নিম্নমাধ্যমিকে (ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম) পড়ানোর ব্যবস্থা আরেক রকম। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও নেই। আবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসন আলাদা। ফলে নানাবিধ সমস্যা আছে।

বর্তমানে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৫৯ হাজার শিক্ষক আছেন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশে প্রাথমিকে মোট শিক্ষার্থী প্রায় ২ কোটি ৯০ হাজার।

এর আগে ২০১৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথ সভায় ঘোষণা দিয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করাই হলো। কিন্তু সেই ঘোষণা আর বাস্তবায়িত হয়নি।

তবে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের কাজটি মোটামুটি ভালোভাবেই হয়েছে। ২০১৩ সালে সরকার ২৬ হাজারের বেশি নিবন্ধিত প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করেছে। এখনো অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন ছাড়াই চলছে। এগুলোর বেশির ভাগের বিরুদ্ধে শিশুদের ওপর অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা ছাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে।

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার বিষয়টি একটু পুনর্মূল্যায়ন করতে চাই।’

শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ও পরীক্ষাব্যবস্থা

প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত ২০১৮ সালে ১:৩০ করার কথা ছিল। এখনো তা হয়নি। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই অনুপাত ১:৩৭। প্রাথমিকে দুপুরের খাবার জরুরি হিসেবে শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়। প্রকল্পের অধীনে ১০৪টি উপজেলায় এত দিন বিস্কুট দেওয়া হতো। গত জুনে তা বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে আবার প্রকল্প চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ন এবং তৃতীয় শ্রেণি থেকে ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা চালুর কথা ছিল শিক্ষানীতিতে। তবে এখনো প্রাথমিকের সব শ্রেণিতেই পরীক্ষা আছে। অবশ্য নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রাখার কথা বলা আছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হবে।

শিক্ষানীতিতে বলা আছে, পঞ্চম শ্রেণি শেষে উপজেলা, পৌরসভা বা থানা পর্যায়ে সবার জন্য অভিন্ন প্রশ্নে সমাপনী পরীক্ষা হবে। আর অষ্টম শ্রেণি শেষে আপাতত জেএসসি পরীক্ষা নামে একটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। কিন্তু শিক্ষানীতি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয়ভাবেই সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছিল। করোনার সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর পরীক্ষা হয়নি। চলতি বছরও হচ্ছে না। নতুন শিক্ষাক্রমেও এই পরীক্ষার কথা নেই।

দ্বাদশ পর্যন্ত মাধ্যমিক হয়নি

শিক্ষানীতিতে প্রাথমিকের মতো মাধ্যমিক শিক্ষা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা হয়েছিল। এ জন্য উচ্চবিদ্যালয়গুলোতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি সংযোজন করার কথা থাকলেও তা-ও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

শিক্ষানীতি অনুযায়ী, মাধ্যমিকে ২০১৮ সালের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত ১: ৩০ করার কথা। তবে রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারির গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে কোনো কোনো শ্রেণির একেকটি শাখায় (সেকশন) প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস হয়। অথচ এত বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে ক্নাস হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে ঠিকমতো মিথস্ক্রিয়া হয় না।

অবশ্য কারিগরি শিক্ষার ওপর সরকারের নজর ও গুরুত্ব বেড়েছে। শিক্ষানীতির আলোকে মাদ্রাসার জন্য একটি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। তবে কওমি মাদ্রাসা আগের মতো নিজেদের মতো করে চলে। সেখানে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি নেই। এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তরের মর্যাদা দিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে একটি সংস্থার মাধ্যমে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা ও সনদ দেওয়া হয়।

শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে ভাগ করে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর করার
কথা ছিল। কিন্তু একটিও হয়নি। হয়নি স্থায়ী জাতীয় শিক্ষা কমিশন। তবে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর হয়েছে।

এ ছাড়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষকের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো এবং শিক্ষক নিয়োগে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) আদলে কমিশনও হয়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষা আইনের জন্য অনেক কিছু আটকে আছে

প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করাসহ শিক্ষার অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষাসংক্রান্ত সব আইন, বিধিবিধান ও আদেশ একত্র করে সমন্বিত শিক্ষা আইন করার কথা ছিল। এ জন্য ২০১১ সালের জানুয়ারিতে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে একটি কমিটিও করা হয়। কিন্তু এই আইন এখনো হয়নি।

অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছিলেন, শিক্ষা আইনের খসড়া করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

আইনের খসড়ায় শিক্ষানীতির চেতনা উপেক্ষিত

তবে সর্বশেষ আইনের খসড়ায় কার্যত শিক্ষানীতির চেতনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, গাইড বই, নোটবই, প্রাইভেট
টিউশন ও কোচিং ইত্যাদির ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণপ্রক্রিয়া ও শিক্ষার মান অর্জন বিশেষভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অথচ সর্বশেষ শিক্ষা আইনের খসড়ায় কোচিং-প্রাইভেটকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। আইনের খসড়া অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট-টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের জন্য কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে না। তবে কোচিং সেন্টারে কোনো শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে পড়াতে পারবেন না।

নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেটও পড়ানো যাবে না। কোচিং চালাতে গেলে নিবন্ধন নিতে হবে। আর সরকার নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে ও অভিভাবকদের সম্মতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরের সময় অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা যাবে। বিষয়টি নির্বাহী আদেশে এখনো থাকলেও মানা হয় না। শিক্ষকদের কোচিং-প্রাইভেটের প্রতিই ঝোঁক বেশি। বরং কোনো কোনো শিক্ষক আছেন, তাঁদের কাছে না পড়লে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় খারাপ নম্বর দেওয়ার মতো অভিযোগও আছে।

আইনের খসড়ায় নোট-গাইড বই নিষিদ্ধ রাখা হলেও সরকারের অনুমোদন নিয়ে সহায়ক বইয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু সহায়ক বইয়ের সংজ্ঞা এবং এগুলোর বিষয়বস্তু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মাধ্যমে সঠিকভাবে যাচাই করে না দিলে কার্যত এখনকার মতোই নাম পরিবর্তন করে নোট-গাইডের বিষয়বস্তুই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষানীতিটি খুবই ভালো, এটি জনবান্ধব। এটি বাস্তবায়নে ১০ বছর সময়ের কথা বলে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষানীতির কিছু কিছু বাস্তবায়িত হলেও মৌলিক অনেক কিছুই করা হয়নি। যেমন শিক্ষা আইন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করাসহ অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা যায়নি। স্থায়ী শিক্ষা কমিশনও
হলো না।

কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, একটি আইন যদি ১২ বছরেও না হয় তাহলে বলতে হবে, যাঁরা এটি বাস্তবায়ন করেন, তাঁদের বিষয়ে বড় প্রশ্ন আছে, তাঁরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হোন আর প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বই হোন।