অস্ট্রেলিয়ার একটি স্কুল ভবন পেল বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের স্বীকৃতি
‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবন ২০২৪’–এর একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় সেরার খেতাব পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার একটি স্কুল। আকাশচুম্বী ভবন, জাদুঘর ও বিমানবন্দরের টার্মিনালকে পেছনে ফেলে এ খেতাব অর্জন করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভবন।
স্কুলটির নাম ডার্লিংটন পাবলিক স্কুল। এটি সিডনির চিপানডেলে উপশহরের একটি স্কুল। ২২০টি ভবনকে পেছনে ফেলে সেরার খেতাব জিতেছে স্কুলটি। হাজারো ভবন থেকে ২২০টি ভবনকে নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছিল। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার এ স্কুলটি সেরা হয়েছে। গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার ফেস্টিভ্যালে সেরা ভবন হিসেবে স্কুলটির নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
স্কুলটির ভবন প্রথম নির্মাণ করা হয় ১৯৭০ সালে। ভবন পুরোনো হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আবার তৈরি করার প্রয়োজন পড়ে। পুরোনো স্কুলটির আদল ঠিক রেখে নতুন ভবনটি তৈরি করা হয়। নতুন করে বানানো হলেও শিক্ষার সমসাময়িক পরিবেশ যেন ঠিক থাকে সেটি নিশ্চিত করা হয়। এটি তৈরি করেছে এফজেসি স্টুডিও নামের একটি নির্মাণ ফার্ম। নির্মাণপ্রতিষ্ঠানটি ভবনটি নতুন করে সংস্কার বা তৈরির সময়ে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী মানুষের ছোঁয়া রাখা হয়েছে।
নতুন স্কুল ভবনটিতে ৫০০ শিক্ষার্থী যেন পড়াশোনা করতে পারে, সে ব্যবস্থা আছে। পুরোনো স্কুলের জায়গায় নতুন স্কুলটি তৈরি করা হয়েছে দুই ধাপে। এ কারণে স্কুলের শিক্ষাকার্য চালিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি।
স্কুলটিতে কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন। গত গ্রীষ্মে নতুন ভবনে স্কুলটির কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এটি কৌণিক ইট দিয়ে তৈরি করা একটি ক্যাম্পাস। ভবনের ছাদটি দেখতে অনেকটা করাতের দাঁতের মতো। ভবনের বাইরে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রাখা হয়েছে। ভবনের পাশে আছে একটি বাস্কেটবল কোর্ট ও বাগান। এ ছাড়া এটির বাইরের অংশে বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে লোহার স্ক্রিন। এই লোহার স্ক্রিনের মাধ্যমে স্কুলটিতে দিনের আলো ও বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটি করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা যেন বিঘ্নিত না হয়, তা–ও নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুক্রবারের সেরা ভবন ঘোষণার পর এফজেসি স্টুডিওর কর্মকর্তা আলেসান্দ্রো রসি বলেছেন, ‘ভবনটি পরিমিত পরিসরে এটি একটি ছোট্ট স্কুল প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রকৃত বিজয়ীরা সেই শিশুরা, যারা ভবনে পড়াশোনা ও ক্লাসে সময় কাটাবে।’
এ বছর ১৭তম বারের মতো এ আয়োজন করা হলো। ১৮টি বিভাগে এবার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। খেলাধুলা, পরিবহন, স্বাস্থ্য এবং আবাসনে—১৭৫ জন প্রতিনিধির প্যানেল এবারের বাছাই প্রক্রিয়ায় ছিলেন। পুরস্কারের জন্য অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে সাইপ্রাসের ন্যাশনাল স্টার অবজারভেটরি, পোল্যান্ডের একটি বাসস্টেশন এবং তুরস্কের একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রও ছিল।
শুক্রবারের ফলাফল ঘোষণায় টানা দ্বিতীয়বার বিচারকেরা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন বেছে নিয়েছেন। গত বছর চীনের একটি বোর্ডিং স্কুল সেরার খেতাব জিতেছিল। গত তিন বছরে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় অর্জন। এর আগে ২০২২ সালের কোয়ে কোয়ার্টার টাওয়ার এই সেরার খেতাব পেয়েছিল। এবার পেল ডার্লিংটন পাবলিক স্কুল।
অন্য সেরার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি হাউজিং কমপ্লেক্স এবং ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে একটি ছাদের স্কি ঢালসহ বর্জ্য থেকে শক্তি পাওয়ার প্ল্যান্ট।