জার্মানিতে ডক্টরাল পজিশন ও স্কলারশিপের জন্য যা করতে হবে: শেষ পর্ব
বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ জার্মানি। তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রসরমাণ এ দেশ শিক্ষাসহ নানা দিক দিয়ে ইউরোপের শীর্ষে। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী। আছে বিশ্বের অনেক নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়। জার্মানিতে পড়াশোনা নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজনের চার পর্বের শেষ পর্ব পড়ুন আজ—
গবেষণা করে উদ্ভাবনী কিছু করা যাঁদের নেশা, অর্থাৎ যাঁরা পেশা হিসেবে গবেষণা বেছে নিতে চান, তাঁদের জন্য জার্মানি হতে পারে অন্যতম তীর্থস্থান। এবার আলোচনা করব জার্মানিতে ডক্টরাল বা পিএইচডি গবেষণা এবং গবেষণার ফান্ড কীভাবে পাওয়া যায়, তার বিস্তারিত বর্ণনা নিয়ে।
প্রথম কথা হচ্ছে, জার্মানিতেই কেন পিএইচডি করব? মূলত পাঁচটি কারণে আমরা জার্মানিতে পিএইচডি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
১.
জার্মানির ডক্টরেট বা পিএইচডি ডিগ্রিধারীরা সারা বিশ্বে অসাধারণভাবে মূল্যায়িত হন।
২.
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতির জন্য পরিপূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করা যায়।
৩.
জার্মানিতে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ফান্ডের ব্যবস্থা করে থাকে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর শুধু জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস (DAAD) এক লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে ফান্ড প্রদান করে।
৪.
বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক গবেষণাগার জার্মানিজুড়েই বিস্তৃত। এ ছাড়া গবেষণার সহায়ক বই ও জার্নাল সংগ্রহের স্থান তথা গ্রন্থাগারের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার ৮০০ (পাবলিক) ও প্রায় ২৫০ (একাডেমিক)। জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে মর্যাদাক্রমে প্রথম সারিতে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত জার্মানির বিভিন্ন গবেষণাগারগুলো আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত।
৫.
পৃথিবীতে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি অন্যতম। অত্যন্ত উচ্চমানের জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা হয় জার্মানিতে।
প্রথমেই জার্মানিতে ডক্টরেট ডিগ্রির সিস্টেম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। জার্মানিতে গবেষণার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বেই যেগুলো আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি।
প্রথম কথা হচ্ছে, জার্মানিতে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য সবচেয়ে কার্যকর ভাষা হচ্ছে জার্মান ভাষা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি বা বেসরকারিভাবে এ ভাষাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বর্তমানে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই জার্মান ভাষার বিকল্প হিসেবে ইংরেজি ভাষাও সমানতালে চলে।
তবে জার্মান ভাষা টুকটাক জেনে রাখলে সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সময়গুলো ভালোভাবে কাটানো যায়।
যাহোক, আবার কাজের কথায় ফিরে আসি। আমরা জার্মানির বাইরে যারা থাকি, সবাই ডক্টরেট ডিগ্রিকে পিএইচডি ডিগ্রি বলেই জানি, কিন্তু জার্মানিতে ডক্টরেট ডিগ্রিকে আসলে বলা হয় প্রমোশন। কাজের ধরন ও বিষয় অনুযায়ী বিভিন্ন শাখায় এ প্রমোশন ডিগ্রি দেওয়া হয়।
যেমন:
Dr. rer. nat (ডক্টর অব ন্যাচারাল সায়েন্স)
Dr. –Ing (ডক্টর অব ইঞ্জিনিয়ারিং)
Dr. phil (ডক্টর অব ফিলোসফি)
Dr. med (ডক্টর অব মেডিসিন)
জার্মানিতে সাধারণত দুই ধরনের পিএইচডি পদ্ধতি চালু আছে। তবে পদ্ধতি যা–ই হোক, লক্ষ্য ওই একটাই। সেটা হলো ডক্টরেট ডিগ্রি৷ এবার দুইটি ভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।
১. ব্যক্তিগত ডক্টরেট প্রোগ্রাম
জার্মানিতে এ পদ্ধতিতে ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার ব্যাপারটা উচ্চশিক্ষিত জার্মানদের কাছে খুবই সাধারণ একটা বিষয়। মূলত যাঁরা জার্মানিতেই মাস্টার্স করেছেন, তাঁদের জন্য এটা পাওয়া তুলনামূলক সহজ।
কারণ, এখানে অধ্যাপকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এ ছাড়া বাংলাদেশ তথা অন্যান্য দেশের ডিগ্রি নিয়েও অধ্যাপকের সঙ্গে অনলাইনে ব্যক্তিগত আলোচনার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত ডক্টরাল পজিশন লাভ করা যায়। ব্যক্তিগত পিএইচডির ক্ষেত্রে সিস্টেমটা হলো, গবেষণার সব কাজ নিজেই করতে হয়। সুপারভাইজার (প্রফেসর) ছাড়া কারও কাছে কোনো জবাবদিহি লাগে না। স্বতন্ত্র পিএইচডি টাইটেল ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত কোনো পরীক্ষায় বসতে হয় না। তবে ভিনদেশি (জার্মান নয় এমন) মাস্টার্স ডিগ্রি থাকলে দু–একটা পরীক্ষা দেওয়াও লাগতে পারে। মূলত পিএইচডি থিসিসের ওপরেই সব অর্জন (ক্রেডিট) নির্ভর করে। ডিগ্রি পেতে কাজের ধরন ও কাজের গতি অনুযায়ী মোটামুটি তিন থেকে পাঁচ বছর লেগে যায়। গবেষণার জন্য তিন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করবার সুযোগ মেলে।
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় ও Hochschule (University of applied science)
জার্মান গবেষণাকেন্দ্র
জার্মান কোম্পানি
২. কাঠামোগত ডক্টরেট প্রোগ্রাম
এটি একটু তুলনামূলক জটিল প্রক্রিয়া। অনেক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পজিশন পেতে হয়। অনেকটা বাংলাদেশে চাকরির বাজারের মতো। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বা গবেষকদের জন্য পদ্ধতিটি উত্তম।
সিস্টেমটা অন্যান্য ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থার দেশগুলোর মতোই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পিএইচডি পজিশন বিজ্ঞাপন আকারে সার্কুলার দিয়ে থাকে। আবেদন করতে হয় অনলাইনের মাধ্যমে বা কাগজপত্র পাঠিয়ে। এখানে সিস্টেম হলো সবাইকে একটা টিম হয়ে কাজ করতে হয়। প্রোজেক্ট টাইটেল আগে থেকেই সিলেক্ট করা থাকে অথবা অধ্যাপক ব্যক্তিগতভাবে টাইটেল সম্পাদনা করে দেন। রিসার্চ টিম সদস্যদের মধ্যে সবার কাছেই কাজের দায়বদ্ধতা থাকতে হতে পারে। বিভিন্ন লেকচার ও সেমিনারে অংশ নিতে হয়।
এমনকি পরীক্ষায়ও বসতে হয়। সেখান থেকে ক্রেডিট সংগ্রহ করতে হয়। এ সিস্টেমে পিএইচডি করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়, প্রায় ক্ষেত্রেই সেটা হয় তিন বছর পর্যন্ত।
আবেদনের ধাপসমূহ
১. প্রথমেই নিজের পছন্দের বিষয়ের শূন্য পদ দেখার পালা। এর জন্য নিচের লিংকে গেলে বর্তমানে সক্রিয় আছে, এমন পিএইচডি পজিশনের অসংখ্য বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন। www.daad.de/deutschland/promotion/phd/en/13306-phdgermany-database
লিংকে ঢুকলে দেখবেন ডান পাশে বিভিন্ন পিএইচডি পজিশনের বিজ্ঞাপন এবং বাঁয়ে কিছু খালি ঘর। এই ঘরে নিজের পছন্দমতো বিষয় ও আনুষঙ্গিক তথ্য বসিয়ে দিলেই বিজ্ঞাপনগুলো ফিল্টার হয়ে নিজের দরকারি বিজ্ঞাপনগুলো দেখা যাবে। সেখানে ক্লিক করলেই প্রতিটি বিজ্ঞাপনের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। এ ছাড়া এ পদের সঙ্গে আপনার যোগ্যতা সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সেটাও দেখতে পাবেন। এ ক্ষেত্রে লিংকের সূত্র ধরে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবপেজে ভিজিট করে আসতে পারেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কাছে আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত ই–মেইল করে আপনি আবেদনের যোগ্য কি না, এ সম্পর্কে আরও তথ্য নিতে পারেন।
২.
অনলাইনে অথবা হার্ড কপিতে, অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান যেভাবে চায়, সেভাবে নির্দিষ্ট ফরম্যাটের আবেদনপত্র পূরণ করে নিজের সব কাগজপত্র আপলোড বা হার্ড কপির ফটোকপি নোটারি করে সংযুক্ত করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক কাগজপত্র অবশ্যই লাগে, সেগুলো নিচে দেওয়া হলো—
৩.
সিভি এ ক্ষেত্রে Europass online format cv হলে ভালো হয়। এ লিংকে ঢুকলে অনলাইনে নিজের সিভি নিজেই তৈরি করতে পারবেন। www.europass.cedefop.europa.eu/editors/en/cv/compose
সার্টিফিকেট: (ক) ব্যাচেলরস ও (খ) মাস্টার্স।
ট্রান্সক্রিপ্ট: (ক) ব্যাচেলর ও (খ) মাস্টার্স।
৪.
রিসার্চ প্রপোজাল অথবা কভার লেটার। অনেকে এটাকে মোটিভেশন লেটারও বলে। এটা অনেক উচ্চমানের হতে হয়। মূলত এ জিনিসই প্রতিনিধিত্ব করে নিজের ব্যক্তিত্ব, চিন্তাধারা ও মননশীলতা। এটা করার ক্ষেত্রে গুগল থেকে ফরম্যাটের কিছু স্যাম্পল কপি থেকে ধারণা নেওয়া যেতে পারে। তবে রিসার্চ প্রপোজাল অবশ্যই মৌলিক নিজস্ব চিন্তাচেতনা ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা হতে হবে।
৫.
স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট (এসএসসি পরীক্ষার সনদপত্র)।
৬.
ইংরেজি মাধ্যমের জন্য ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতার সার্টিফিকেট—
ক. IELTS
খ. GRE (যদি লাগে)
৭.
দুই থেকে তিনজন ব্যক্তির একাডেমিক রেফারেন্স লাগবে। এ ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে থিসিসের দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার হওয়াটা বাঞ্ছনীয়।
৮.
পাবলিকেশনের কপি (যদি থাকে)
উল্লেখ্য, যাঁরা কাঠামোগত পিএইচডি পজিশনের জন্য আবেদন করেন, তাঁদের ফান্ডিং সোর্স নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। কারণ, প্রতিটি পজিশনের জন্য ফান্ড প্রস্তুত করাই থাকে। হতে পারে সেটা চাকরি অথবা স্কলারশিপ। যদি চাকরি হয়, সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভেদে ডক্টরাল গবেষকদের জন্য ৫০-৬৫ শতাংশ কাজের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। ভাগ্য সহায় হলে বেশিও হতে পারে। ইউরোর অঙ্কে আসে আনুমানিক ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ ইউরো (ট্যাক্স ও আনুষঙ্গিক খরচ বাদে)। যদি স্কলারশিপ হয়, সে ক্ষেত্রে এলাকাভেদে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ ইউরো হতে পারে। উল্লেখ্য, জার্মানিতে স্কলারশিপ হোল্ডারদের কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না।
যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে পিএইচডি করার জন্য আবেদন করতে চান, তাঁদের ফান্ডের সোর্স একটু ব্যতিক্রম।
সাধারণত ফান্ডের ব্যাপারটা প্রফেসরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হয়। তাঁদের জন্য ফান্ডিং ব্যবস্থা বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
যেমন:
১. নিজের দেশ থেকে স্কলারশিপ।
২. জার্মান ফান্ডিং অর্গানাইজেশন (DAAD) থেকে স্কলারশিপ।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রোজেক্টের চাকরি। এ ক্ষেত্রে ফান্ড সরবরাহ করে বিভিন্ন কোম্পানি।
৪. বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এমন কোনো গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি।
যেমন:
ক) ফ্রাউনহোফার
খ) হেমহোল্টস অ্যাসোসিয়েশন অব জার্মান রিসার্চ সেন্টার
গ) ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট
ঘ) লাইবনিজ অ্যাসোসিয়েশন
৫. কোনো জার্মান ব্যবসায়িক কোম্পানির কোনো প্রোজেক্টে চাকরি। যেমন: Bosch, BMW, Audi, Trinseo, Glaconchemie ইত্যাদি।
৬. নিজস্ব তহবিল।
তবে জেনে রাখা ভালো যে জার্মানির নিম্নবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। ওয়েবলিংকসহ তালিকা।
১৷ DAAD
www.daad.de
২৷ Stipendien lotse
www.stipendienlotse.de
৩৷ Plus stipendium
www.stipendiumplus.de/en
৪৷ My stipendium
www.mystipendium.de
৫৷ German funding programes for scientists and researchers
www.research-in-germany.org/en
৬৷ HRK Higher education compass
www.hochschulkompass.de/en/study-in-germany.html
৭৷ Electronic research funding information system, ELFI
www.elfi.info/e_index.php
৮৷ Kisswin
www.kisswin.de
এ ক্ষেত্রে প্রথমে পছন্দের বিষয়ের প্রফেসরকে খুঁজে নিয়ে ই–মেইলে যোগাযোগ করতে হয়। এটা করা হয় মূলত তাঁর কাছে খালি পদ আছে কি না, সেটা জানার জন্য। অনেক সময় প্রফেসর তাঁর ইউনিভার্সিটির মাধ্যমেও খালি পদ পূরণের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে, যা এ লিংকে গেলেও পাওয়া যাবে।
www.daad.de/deutschland/promotion/phd/en/13306-phdgermany-database
যদি প্রফেসর বিজ্ঞাপন দিয়েই থাকে, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফান্ডের ব্যবস্থা করেই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তা না হলে প্রফেসরের কাছে ফান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। তখন প্রফেসর ওপরে উল্লিখিত ফান্ডের সোর্সগুলো থেকে ফান্ডের ব্যবস্থা করে থাকেন। এ ছাড়া এ লিংকে ঢুকলেও পিএইচডি পজিশনের শূন্য পদের বিজ্ঞাপন পাওয়া যেতে পারে।
www.daad.de/deutschland/studienangebote/international-programmes/en
তবে এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে ফান্ডের ব্যবস্থা আলাদা করে ম্যানেজ করে নিতে হয়। সে ক্ষেত্রেও ফান্ডের উৎস ওই ওপরে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান থেকেই করা হয়।
পিএইচডি পজিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করার জন্য ন্যূনতম কিছু যোগ্যতা—
প্রথম যোগ্যতাই হচ্ছে বাংলাদেশের যেকোনো একটা রেপুটেড বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা মাস্টার্স ডিগ্রি থাকা, যা কিনা জার্মানিতে স্বীকৃত। রেজাল্ট একটু ভালো হতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সিজিপিএ তিনের (৩.৩০ +) বেশি হলেই চলে। যদিও জার্মান প্রজ্ঞাপনে লেখা থাকে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ন্যূনতম আট সেমিস্টার শেষ করতে হবে এবং তা জার্মানিতে মাস্টার্সের সমমানের হতে হবে। আমাদের দেশের ব্যাচেলর ও মাস্টার্স মিলিয়ে দেখা যায় মোটামুটি ১০ সেমিস্টার হয়ে যায়। আরও উল্লেখ্য, মাস্টার্সে থিসিস থাকতে হবে। আসলে জার্মানিতে থিসিস ব্যতীত মাস্টার্সকে এরা মাস্টার্স মনে করতে নারাজ। মাস্টার্সের থিসিস সম্পূর্ণ মৌলিক হতে হয়। তা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হলে পজিশন পেতে সুবিধা হয়। দেশেও মোটামুটি একটু ছোটখাটো গবেষণার কাজে জড়িত থাকলে তা–ও মূল্যায়িত হয়। এর জন্য দেখা যায়, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের দেশের বাইরে পজিশন পেতে তুলনামূলক সহজ হয়। আইএলটিএস অবশ্যই থাকতে হয়, প্রতিষ্ঠানভেদে ৬ থেকে ৭ লাগে। কিছু প্রতিষ্ঠান জিআরই চায়। তবে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদনকারীর ছোট্ট করে একটা ভিডিও সাক্ষাৎকার (MS Team, Zoom অথবা Bigbluebutton) নেওয়া হয়। এটাও নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের ওপর। প্রতিষ্ঠান চাইলে না–ও নিতে পারে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান জার্মানিতে আসার পরও ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করায়, আবার পরীক্ষায়ও বসায়। সুতরাং এটা সঠিক করে বলা মুশকিল।
লেখক: মাহবুব মানিক, গবেষক, প্লাস্টিক ও রাবার প্রকৌশল, মের্জেবুর্গ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স, মের্জেবুর্গ, জার্মানি