অপরিকল্পিতভাবে লকডাউন তোলার বিপক্ষে সানেম

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অপরিকল্পিতভাবে লকডাউন উঠিয়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করা হলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং)। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, অপরিকল্পিতভাবে লকডাউন তুলে নেওয়া হলে মহামারির আরও অবনতি হতে পারে। এর ফলে খাত ও অঞ্চলভিত্তিক স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন ও প্রয়োগের ব্যাপারে সানেম যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

সানেমের উদ্যোগে ইন্টারনেটভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম সানেম নেটিজেন ফোরামের ষষ্ঠ পর্বে এসব কথা বলেন সেলিম রায়হান।


বোরো ধান কৃষকের ঘরে তোলার ক্ষেত্রে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার প্রশংসা করে সেলিম রায়হান বলেন, গবাদিপশু, মাছ ও ফল চাষের মতো খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। আগামী বাজেটে কৃষি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। আর সানেম মনে করে, আগামী বাজেটে ৮-১০ শতাংশ ঘাটতি সরকারকে মেনে নিতে হবে।


আলোচনায় বক্তারা বলেন, লকডাউন শিথিল করা বা উঠিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভাইরোলজিস্ট এবং মহামারি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া এ রকম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না। মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেও যদি মহামারি সফলভাবে মোকাবিলা না করা যায়, তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতি বরং আরও বাড়বে।

এই পরিস্থিতিতে বক্তারা মনে করেন, আগামী বাজেটে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলা বাজেট’ বরাদ্দ করা দরকার। এতে করে মন্ত্রণালয়গুলো নিয়মিত কার্যক্রম এবং উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কার্যক্রম চালাতে পারবে। মহামারি মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়গুলো নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজও করতে পারবে।

তাঁদের পরামর্শ হলো, নীতিনির্ধারকদের জাতীয় পর্যায়ে কৃচ্ছ্র সাধনের ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে। উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বোনাস, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা কমিয়ে বা বাদ দিয়ে সেই অর্থ জরুরি সাহায্য কার্যক্রম বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রকল্প বা সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য বরাদ্দ করা যেতে পারে। বেসরকারি খাতও এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

জুমের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গনের প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন। সানেমের পক্ষে গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, সানেমের রিসার্চ ইকোনমিস্ট জুবায়ের হোসেন, রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ইশরাত শারমিন, মীর আশরাফুন নাহার, ফাবিহা বুশরা ও শাকিল আহমেদ এতে অংশ নেন।