রতন টাটা: প্রেমে পড়েছিলেন চারবার বিয়ে করার সময় হয়নি
টাটা গ্রুপের বিশাল সাম্রাজ্যের অভিভাবক রতন টাটা। পুনে কলেজের এক অনুষ্ঠানে তরুণদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘ডোন্ট বি সো সিরিয়াস। এনজয় লাইফ অ্যাজ ইট কামস।’
টাটা গ্রুপ ভারতের ব্র্যান্ডিংয়ে অনন্য। আর এই ব্র্যান্ডিংয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রতন টাটার। অর্ধশত বছর ধরে তিনি নিরলস পরিশ্রম করেছেন টাটা গ্রুপের জন্য, তিলে তিলে বড় করেছেন গ্রুপকে। ১৬০ বছরের পুরোনো এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১০০টি দেশের সঙ্গে ব্যবসা করে। এই অনন্য প্রতিষ্ঠানটির ২১ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন রতন টাটা। এ সময়ে টাটা গ্রুপের আয় বেড়েছে ৪০ গুণ। আর মুনাফা বেড়েছে ৫০ গুণ।
৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব পালন করে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিলেও বিয়ে করতে পারেননি রতন টাটা। তবে প্রেম করেছেন চারবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে করা হয়নি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা কথা বলেন না তিনি। তবে বেশ কয়েক বছর আগে সিএনএনের সঙ্গে খানিকটা মন খুলে কথা বলেছিলেন তিনি। রতন টাটা বলেছিলেন, প্রেম করলেও বিয়ে করার সাহস আর পাননি। কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে পিছু হটেছেন। বিয়ের ভীতিকে জয় করতে পারেননি। এ কারণে চিরকুমার হিসেবেই কেটে যাচ্ছে তাঁর জীবন।
অবশ্য প্রেমিকাদের নিয়ে খোলাসা করে রতন টাটা কখনো কিছু বলেননি। তবে সাক্ষাৎকারে এটুকু জানিয়েছিলেন যে তাঁর প্রথম ভালোবাসা, প্রথম প্রেমিকা ছিলেন এক মার্কিন তরুণী। আমেরিকায় তখন কাজ করতেন তিনি। প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু তাঁকে বিয়ে করতে পারেননি। দ্রুত ভারতে ফিরে আসার কারণে সে সম্পর্ক পূর্ণতা পায়নি। বাকি তিন প্রেমিকা সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য তিনি দেননি।
রতন টাটার বিয়ে না করার কারণগুলো ব্যক্তিগত হলেও এ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। অনেকেই মনে করেন, শৈশবের কিছু ঘটনা তাঁর জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, দত্তক বাবার ঘরে বেশি দিন মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেননি শিশু রতন টাটা। রতন টাটার বাবা নাভাল টাটা কিন্তু টাটা পরিবারে এসেছিলেন একজন দত্তক হিসেবে। প্রথম স্ত্রী সোনির ঘরে জন্ম হয় রতন টাটার। রতন টাটার বয়স যখন ১০ বছর, তখন মা–বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। রতন টাটা ও সাত বছরের ছোট ভাই জিমি দাদির কাছে মানুষ হতে থাকেন। শিশু বয়সে বেশ মানসিক কষ্ট নিয়ে বেড়ে ওঠেন দুই ভাই। বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ির বিষয়টি দুই ভাই মেনে নিতে পারেননি। মা–বাবার তিক্ত সম্পর্কের সাক্ষী ছিলেন রতন টাটা। আর এটা সংসারজীবন সম্পর্কে তাঁকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। পাশাপাশি বিয়ে তাঁর জীবনের জন্য একটি ভীতিকর বিষয় হয়ে উঠেছে। আর এই ভীতির কারণেই তাঁর জীবনে সাজনাতলার অভিজ্ঞতা হয়নি। জীবন, সংসার—টাটা গ্রুপই তাঁর জন্য সবকিছু। (সূত্র: সিএনএন ট্রাভেল)