বার কাউন্সিল পরীক্ষায় ‘প্রশ্ন কঠিন’ অজুহাতে ৫ কেন্দ্রে ভাঙচুর
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ‘আইনজীবী অন্তর্ভুক্তি’ পরীক্ষা চলাকালে পাঁচটি কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ছিঁড়ে কেন্দ্রে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ বলছে, প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে এমন অজুহাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর চালিয়েছেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা। এসব ঘটনায় পুলিশ অন্তত ১৪ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও বার কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা হয়। মোট ৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ঢাকার মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, মোহাম্মদপুর মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মহানগর মহিলা কলেজ এবং সায়েন্স ল্যাবের বিসিএসআইআর হাইস্কুল কেন্দ্রে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কেন্দ্রগুলোতে ভাঙচুর শুরু করেন পরীক্ষার্থীরা।
মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা হইচই করেছিলেন। অনেকে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান। পরে ম্যাজিস্ট্রেট এসে সবাইকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন।মো. মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত, ডিএমপির কোতোয়ালি বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুরের তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেছেন। পরীক্ষা শুরুর ২০-২৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁরা কেন্দ্রের ভেতর হইচই শুরু করে দেন। এ সময় তাঁরা অভিযোগ তোলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন কঠিন হয়েছে। অনেক পরীক্ষার্থী কেন্দ্র থেকে উত্তরপত্র নিয়ে বেরিয়ে এসে ছিঁড়ে ফেলে দেন। এক কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আরেক কেন্দ্রে গিয়ে এসব ঘটিয়েছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। যাচাই–বাছাই করে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
ডিএমপির কোতোয়ালি বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত প্রথম আলোকে বলেন, মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা হইচই করেছিলেন। অনেকে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান। পরে ম্যাজিস্ট্রেট এসে সবাইকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন।
কোন কেন্দ্রে কী হয়েছে তা তাঁরা এখনো জানেন না। প্রতিটি কেন্দ্র থেকে আলাদা প্রতিবেদন আসবে। যাঁরা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।এ এম আমিন উদ্দিন, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. রুহুল কুদ্দুস। এক বিবৃতিতে তিনি ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বার কাউন্সিল সূত্র বলছে, পরীক্ষায় এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটার নজির নেই। মূলত, পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ পরীক্ষা দিতে চাইছিল না। কিন্তু বার কাউন্সিলের আইনে পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক। যাঁরা পরীক্ষা দিতে চাননি, তাঁরাই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছেন বলে মনে করছে বার কাউন্সিল।
বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কোন কেন্দ্রে কী হয়েছে তা তাঁরা এখনো জানেন না। প্রতিটি কেন্দ্র থেকে আলাদা প্রতিবেদন আসবে। যাঁরা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।