মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকা ৫৩৫ চিকিৎসকের কী হবে
সরকার ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে আরও দুই হাজার জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু উত্তীর্ণ হওয়াদের মধ্য থেকে ইতিমধ্যে ৫৩৫ জনকে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নন–
ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। আর নিয়ে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। নন–ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ারা চাচ্ছেন নতুন করে যে ২ হাজার চিকিৎসক নেওয়া হবে সেখানে যেতে।
তাদের দাবি, বিশেষ বিসিএসে নন–ক্যাডারের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছিল সেই তালিকার ওপরের দিকেই তাদের অবস্থান।
তাঁরা চার চিকিৎসক হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেতে। এক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার থাকা উচিত। অবশ্য পিএসসি বলছে, সবার কথা বিবেচনা করা হবে। যাতে কেউ বঞ্চিত না হয় সে জন্য সরকার ও পিএসসি এক সঙ্গে কাজ করবে।
করনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সরকার জরুরি ভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এই ফেব্রুয়ারিতে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে নন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য ৫৩৫ জন সুপারিশ পেয়েছেন।
নতুন চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে পিএসসি আগামীকাল মঙ্গলবার বিশেষ এক সভা ডেকেছে। সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে পিএসসি সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
নন ক্যাডার থেকে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ পাওয়া ৫৩৫ জনের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, অপেক্ষমাণ তালিকায় তাঁরা ছিলেন শুরুর দিকে। সেখান থেকে পিএসসি এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ৫৬৪ জনকে নন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে। এর মধ্যে ৫৩৫ জনকে মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়। এই সোমবার এ তালিকা থেকে নিয়োগ দিতে কার্যক্রম শুরুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এক চিকিৎসক বলেন, আমরা জানতে পারেছি সরকার ৩৯ তম বিসিএসের উত্তীর্ণ এবং অপেক্ষমান তালিকা থেকে ২০০০ জনকে নন ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ৩৯ তম বিসিএস থেকে মেধা তালিকা অনুসারে প্রথম ৫৬৪ জনকে পরিবার পরিকল্পনা সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরে নন ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে। যেহেতু তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে নন ক্যাডার কোন পদ ছিল না তাই মেধা তালিকা অনুসারে আমাদের অন্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়। যার এখনো কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন বা গেজেট বা কোন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে পদ খালি থাকলে মেধা তালিকার ভিত্তিতে তারাই তা পাওয়া যোগ্য।
ওই চিকিৎসকরেরা বলেন, আমরা মেধা তালিকায় এগিয়ে থেকেও যদি ফ্যামিলি প্লানিংয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হই কিন্তু আমাদের চেয়ে মেধা তালিকায় পিছনে থেকেও যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে নন ক্যাডার" হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয় তাহলে আমাদের বঞ্চিত করা হবে এবং আমাদের প্রতি অবিচার করা হবে। তাঁদের মতে তাঁদের মধ্য থেকে ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করে প্রয়োজনে পরিবার কল্যাণের জন্য পরবর্তী তালিকা থেকে নতুন করে সুপারিশ করা যায়। এতে কেউই বঞ্চিত হবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, সমস্যাটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা বা সরকার এমন কিছু করবে না যাতে কউ বঞ্চিত হয়।
পিএসসি জানায়, ২০১৮ সালে ১০ এপ্রিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়, শেষ হয় ৩০ এপ্রিল। পরে ওই বছরের ৩ আগস্ট এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, এতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেন। পরীক্ষায় পাস করেন মোট ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। এর মধ্যে সহকারী সার্জন পদে ১৩ হাজার ২১৯ চিকিৎসক ও ৫৩১ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে উত্তীর্ণ হন।
এই বিশেষ বিসিএস থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এরপরই ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার ৮ হাজার ৩৬০ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
সরকার ও পিএসসি মনে করে ৩৯তম বিসিএস থেকেই কেবল দ্রুত গতিতে এই চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়া সম্ভব। এ জন্য তাঁরা কাজ করা শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ ৩৯তম বিসিএস থেকে।