শুল্ক-অশুল্ক বাধাই পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে বড় চ্যালেঞ্জ

এফবিসিসিআইছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক ও অশুল্ক বাধাকেই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি কাজে লাগাতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্কহার কমানোর পাশাপাশি ভিসা সহজীকরণ, ঢাকা-করাচি আকাশপথে সরাসরি উড়োজাহাজের চলাচল চালুসহ অশুল্ক বাধাগুলোও দূর করতে হবে।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ সোমবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিজনেস ফোরামে এ কথাগুলো বলেন সে দেশের সফররত ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এ সভায় দেশি ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।

পাকিস্তানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন দ্য ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ। তাঁর সঙ্গে আরও ছিলেন এফপিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সাকিব ফায়াজ মাগুন ও ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে কৃষি, বস্ত্র, ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সম্ভাবনাময় অনেক খাত এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।

হাফিজুর রহমান জানান, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাকিস্তানে ৬ কোটি ১৯ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে সে দেশ থেকে বাংলাদেশে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়। তার মানে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে রয়েছে।

এফপিসিসিআইয়ের সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, ওষুধ, চামড়া, মেশিনারি, রাসায়নিক ও আইসিটি খাতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক যোগাযোগের সুবিধা কাজে লাগানো যেতে পারে। বাণিজ্য বাড়াতে অবকাঠামো, বন্দর ও লজিস্টিকস সক্ষমতা উন্নয়নেও জোর দেন তিনি।

পাকিস্তানি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলটি এর আগে গত রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকের কথা উল্লেখ করে এফপিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাকিব ফায়াজ মাগুন বলেন, ‘বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অশুল্ক বাধা দূর করার বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এ জন্য আমরা খুশি।’

পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ বলেন, ‘উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ঢাকা-করাচির মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট বা উড়োজাহাজের চলাচল শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, এই বছরের মাঝামাঝি সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে। বাংলাদেশের কোনো বিমান সংস্থা কিংবা পাকিস্তানের যে কেউ প্রথমে ফ্লাইট চালু করতে পারে।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ ওয়াসিফ, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও সহায়ক কমিটির সদস্য গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

শেষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য শক্তিশালী করতে বিজনেস কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে এফবিসিসিআই ও এফপিসিসিআই একটি সমঝোতা চুক্তি সই করে।