২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

জানুয়ারিতে আবারও কমেছে ভারতের শিল্পোৎপাদন

ছবি: রয়টার্স

দুরবস্থা যেন পিছু ছাড়ছে না ভারতের। মধ্যে একটু স্বস্তি মিলেছিল। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশা জাগিয়ে ডিসেম্বরে দেশটির শিল্পোৎপাদন বেড়েছিল। জানুয়ারিতে কমেছিল খুচরা মূল্যবৃদ্ধি। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতেই সেই স্বস্তি আর নেই। গত শুক্রবার ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান জানাল, জানুয়ারিতে উৎপাদন কমেছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। উল্টো দিকে ফেব্রুয়ারিতে আবার মাথা তুলেছে খুচরা মূল্যস্ফীতি—ছাড়িয়েছে ৫ শতাংশের সীমা।

পরপর দুই প্রান্তিকের পর ২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখে ভারতীয় অর্থনীতি। অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ স্পষ্ট, ডিসেম্বরে শিল্প বৃদ্ধির হিসাব তুলে ধরে আবার এই দাবিই করেছিল কেন্দ্র।

কিন্তু পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের হিসাব দেখিয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, চাহিদা ও বিনিয়োগ বাড়লেই কেবল অর্থনীতি চাঙা হবে। এতে উৎপাদন বাড়বে। তাহলে কেন কলকারখানার উৎপাদন প্রায় ২ শতাংশ সংকুচিত হলো? কেনই-বা অন্যান্য পণ্য তৈরির জন্য জরুরি মূলধনি পণ্যের উৎপাদন ৯ দশমিক ৬ শতাংশ কমল? সংকোচন হয়েছে খনন খাতেও। ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

এক মাসের স্বস্তিকে অনেকে বলছেন জমে থাকা চাহিদা ও উৎসবের কেনাকাটার প্রতিফলন। স্বাভাবিকভাবেই সেটা বেশি দিন স্থায়ী হবে না। তাই ভোগ্যপণ্যের উৎপাদনেও ভাটা পড়েছে। মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের মতে, কেন্দ্র খরচ বাড়ালেও রাজ্য ও বেসরকারি খাতের তরফে কতটা সাড়া মিলবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। তার ওপর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ভোগ্যপণ্য উৎপাদন যথাক্রমে ৬ দশমিক ৮ এবং শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হ্রাসের অর্থ মানুষ খরচের বদলে সঞ্চয়ে মন দিচ্ছেন। ফলে চাহিদা বৃদ্ধি নিয়ে সংশয় থাকছেই।

এদিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির (৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ) জেরে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের আক্ষেপ, এতে আবার সুদ কমার আশা ফিকে হলো, চাহিদা বাড়িয়ে অর্থনীতিকে ছন্দে ফেরাতে যা জরুরি।

২০২০ সালের মার্চ মাসে লকডাউন জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই মাসে দেশটির শিল্পোৎপাদন হ্রাস পায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। যদিও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই তখন বলেছিলেন, এটা শুধু করোনার কারণে হয়নি। দীর্ঘদিন অর্থনৈতিক ঝিমুনির ফলে যে ক্ষত তৈরি হয়েছিল, লকডাউনের কারণে সেই ক্ষত আরও গভীর হয়েছে।