সুয়েজ খালের সম্প্রসারিত অংশ পরীক্ষা করল মিসর

সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচলফাইল ছবি: রয়টার্স

সুয়েজ খালের ১০ কিলোমিটারের একটি সম্প্রসারিত অংশ পরীক্ষা করেছে মিসর। ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে লোহিত সাগরের সংযোগ স্থাপনকারী সুয়েজ খালের বর্তমান জলপথে জাহাজ চলাচল বেড়ে যাওয়ার কারণে এটির সক্ষমতা বাড়াতে খালের সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বাড়তি জাহাজ চলাচলের কারণে খালের ওপর চাপও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, শনিবার দুটো জাহাজের মাধ্যমে সম্প্রসারিত অংশ পরীক্ষা করা হয়। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের একটি বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। খালের দক্ষিণ অংশে উন্নয়ন কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি বলেন, খালের এই উন্নয়ন কার্যক্রমের ফলে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে এবং এই জলপথে যেসব জাহাজ চলাচল করে, তাদের ওপর পানি ও বাতাসের প্রবাহের প্রভাব কমবে।

সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী অনেক জাহাজ এর আগে তীব্র বাতাস ও বালুঝড়ের কারণে তীরে উঠে গিয়েছিল। ২০২১ সালে বিশাল আকারের কনটেইনার জাহাজ এভার গিভেন খালের মধ্যে আড়াআড়িভাবে আটকে যায়। ফলে এক সপ্তাহ ধরে খালটি বন্ধ থাকে এবং পণ্য পরিবহনে দেরি হওয়ার কারণে শত শত কোটি ডলারের ক্ষতি হয়।

ওসামা রাবি জানান, সম্প্রসারণের ফলে খালটিতে দিনে অতিরিক্ত ছয় থেকে আটটি জাহাজ চলাচল করতে পারবে। এর জন্য একটি নতুন জাহাজ চলাচল ম্যাপ তৈরি করতে হয়েছে, যা ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

মিসর ২০১৫ সালে সুয়েজ খালের সম্প্রসারণের প্রকল্প হাতে নেয়। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৮০০ কোটি ডলার। খালটি সম্প্রসারণের পর ছোট ছোট আরও বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

দীর্ঘদিন ধরে সুয়েজ খাল মিসরের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। দেশটি সাম্প্রতিক সময়ে বড় রকমের অর্থনৈতিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, গত বছরের পর থেকে সুয়েজ খাল থেকে মিসরের আয় ৭০ শতাংশ কমেছে। এর কারণ হলো, লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজের ওপর ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা চালাচ্ছে।

হুতিদের এই আক্রমণের কারণে জাহাজ কোম্পানিগুলো এখন নতুন পথে জাহাজ চালাচ্ছে। এর আগে বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ১০ শতাংশ পণ্য সুয়েজ খাল পথে পরিবহন করা হতো। হামলা এড়াতে অনেক জাহাজ এখন আফ্রিকার দক্ষিণ উপকূল ঘুরে আটলান্টিক মহাসাগরে চলাচল করছে।