ইউরো অঞ্চলের মূল্যস্ফীতি কমে জুনে ৫.৫% হয়েছে
ইউরো অঞ্চলের মূল্যস্ফীতির হার কমছে। জুনে ইউরো মুদ্রা ব্যবহারকারী ২০টি দেশের মূল্যস্ফীতির বার্ষিক হার ছিল ৫ দশমিক ৫। গত মে মাসে এ হার ছিল ৬ দশমিক ১। মূলত জ্বালানির মূল্য অনেকটা কমার কারণে জুনে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে, জ্বালানি ও খাদ্য ব্যতীত অন্যান্য পণ্যের দামের ভিত্তিতে যে কোর মূল্যস্ফীতির হিসাব করা হয়, তার হার জুনে কিছুটা বেড়েছে। জুনে ইউরোপীয় অঞ্চলের কোর মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, মে মাসে যা ছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
কোর মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) জন্য কিছুটা ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকেরা। তারা ইতিমধ্যে বলেছে, মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আসার আগপর্যন্ত তারা নীতি সুদহার বাড়িয়ে যাবে। তবে কোর মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার কারণে ইসিবিকে হয়তো কিছুটা বেশি হারে নীতি সুদহার বাড়াতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান-বিষয়ক সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুসারে, জুনে ইউরোপে জ্বালানির মূল্য ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, মে মাসে যা ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ।
এ ছাড়া জুনে খাদ্য, অ্যালকোহল ও তামাকের মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। মে মাসে এ হার ছিল ১২ দশমিক ৫, জুনে তা কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭। তা সত্ত্বেও এ হার দুই অঙ্কের ঘরে, অর্থাৎ ইসিবিকে নীতি সুদহার আরও বাড়াতে হবে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মূল্যস্ফীতির হার কমে এলেও যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতির হার এখনো বেশি। মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ছিল জি৭ বা ধনী দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বাস্তবতায় মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে নীতি সুদহার ৬ শতাংশের ওপরে ওঠাতে হবে বলে বাজারের আশঙ্কা।
অন্যদিকে আরেক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে জি৭-ভুক্ত ধনী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে কম। ব্যতিক্রম শুধু জার্মানি, দেশটি ইতিমধ্যে মন্দার কবলে পড়েছে।
বিনিয়োগ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এডিসন গ্রুপের গবেষণা পরিচালক নিল শাহ গার্ডিয়ানকে বলেন, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবধান একদম পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠছে। এর পেছনে ব্রেক্সিটের কিছুটা দায় দেখছেন তিনি।
নিল শাহ আরও বলেন, জ্বালানির মূল্য সংকট ও প্রকট শ্রমিকঘাটতি যুক্তরাজ্যের জন্য সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে। ফলে জি৭-ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এর পেছনে ব্রেক্সিটের কিছুটা দায় আছে। ব্রেক্সিটের কারণে শ্রমবাজারের কাঠামো বদলে যাচ্ছে, নিয়োগদাতারা প্রতিভাবানদের ধরে রাখতে বেশি মজুরি দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে এক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার চেষ্টা করছে। এতে কিছু দেশ সফল হয়েছে, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ভিয়েতনাম ইত্যাদি।