ভারতে পপকর্নে জিএসটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড়

পপকর্নছবি: সংগৃহীত

ভারতে পপকর্নে জিএসটি বা পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে উত্তাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। পপকর্নে জিএসটি কাউন্সিলের করারোপের ঘোষণা নিয়ে যেমন আপত্তি উঠেছে, তেমনই দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ নেটিজেনদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, সিনেমা হলে পপকর্ন কিনলে কত শতাংশ জিএসটি দিতে হবে। এমনকি উত্তর প্রদেশ সরকারও বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়েছে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পপকর্নে জিএসটি নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ কোন ধরনের পপকর্নে কী হারে জিএসটি বসে, তার ব্যাখ্যা দেন। এর পর থেকেই ভারতের নাগরিকেরা ফেসবুকে উত্তাল হয়ে উঠেন। তৈরি হয় অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে শত শত মিমে, কোথাও অর্থমন্ত্রীর হাতে পপকর্নের ঝুড়ি, কোথাও তিনি ‘মাদার ট্যাক্সেসা’। নির্মলা বলেছিলেন, নোনতা পপকর্নে একধরনের জিএসটি আরোপ করা হবে, মিষ্টি হলে আরেক ধরনের। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল রসিকতা: এরপর ‘খাট্টা মিঠা’ যেকোনো খাবারেই দুই রকম হারে কর বসবে।

ইন্টারনেটের জগতে পপকর্ন ঘিরে এমন হইচই দেখে ভারতের বার অর্থ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, পপকর্নে জিএসটি মোটেও বাড়ানো হয়নি, তা আগের মতোই আছে। শুধু উত্তর প্রদেশ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, পপকর্নে লবণ-মসলা মাখানো থাকলে কী হারে কর দিতে হবে, তা স্পষ্ট করে দেওয়ার জন্য উত্তর প্রদেশের কাছ থেকে অনুরোধ এসেছিল।

উত্তর প্রদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ঠিক হয়েছে, যেকোনো নোনতা বা নিমকির মতো লবণ-মসলা মাখানো খোলা পপকর্নে ৫ শতাংশ হারে জিএসটি আরোপিত হবে। সেই পপকর্ন আবার প্যাকেটজাত হয়ে ব্র্যান্ডের নামে বিক্রি হলে দিতে হবে ১২ শতাংশ জিএসটি, ক্যারামেল বা চকলেট মাখানো হলে ১৮ শতাংশ, যেমন কোনো অতিরিক্ত চিনি মেশানো খাবার বা পানীয় থেকে আদায় করা হয়। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে পপকর্ন সাধারণত খোলা ঠোঙায় বিক্রি হয়, সে জন্য তাতে জিএসটি দিতে হবে ৫ শতাংশ।

ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার আক্ষেপ, জিএসটি থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সবাই লাভবান হচ্ছে। পপকর্ন নিয়ে আলোচনায়ও কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা হাজির ছিলেন। শুধু কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সংবাদ সম্মেলনে পপকর্নে জিএসটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে উপহাসের পাত্র হয়ে উঠলেন!

বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের বড় অংশ মোটেই খুশি নন। কেউ লিখেছেন, ‘যদি অ্যারোগ্যান্সের (ঔদ্ধত্য) ওপর করারোপ করা হতো, তাহলে নির্মলা সীতারমণ দেউলিয়া হয়ে যেতেন।’ কেউ লিখেছেন, ‘পপকর্ন দিয়ে শুরু হলো; এরপর সূর্যের আলো ও বাতাসেও জিএসটি আরোপ করা হবে।’ কেউ আবার ‘পপকর্ন ট্যাক্স’ হিসেবেও ডাকতে শুরু করেছেন।