রুপির দরপতন নিয়ে চিন্তিত নন আরবিআইয়ের সাবেক গভর্নর রঘুরাম রাজন
ভারতীয় মুদ্রা রুপির ধারাবাহিক দরপতনে চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর রঘুরাম রাজন। এ নিয়ে ভারতের বিরোধী দলগুলো যখন সরব, কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করছে, তখন রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর রঘুরাম রাজন জানালেন, রুপির এমন পতনে তিনি উদ্বিগ্ন নন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মোজো স্টোরিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রঘুরাম রাজন বলেন, ‘এটা ঘটছে কেবল ডলার চাঙা হওয়ার কারণে।’ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাজন মোদি সরকারের কট্টর সমালোচক হয়েও এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল। বাস্তবতা হলো, ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দরপতন চলছেই। মাঝে দুই দিন রুপির দর বাড়ার পর আবারও পড়েছে। আজ সকালে এই প্রতিবেদন লেখার সময় প্রতি ডলারে পাওয়া যাচ্ছে ৮৬ দশমিক ৫৮ রুপি।
এক সাক্ষাৎকারে রঘুরাম রাজন বলেন, ‘মুদ্রার শক্তি নিশ্চিতভাবেই রুপি–ডলারের সম্পর্কের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। কিন্তু বিষয়টি হলো, অনেক দেশের মুদ্রার নিরিখেই ডলার শক্তিশালী হয়েছে। এমনকি ডলারের সাপেক্ষে ইউরোর দরপতন হয়েছে। গত এক বছরে ইউরোর দরপতন হয়েছে ৬ থেকে ৭ শতাংশ। ভারতের বাজারে ডলারের দাম ৮৩ থেকে ৮৬ রুপিতে ওঠা সেই তুলনায় কম।’
রাজনের ব্যাখ্যা, ডোনাল্ড ট্রাম্প বাণিজ্য–শুল্ক নিয়ে কী পদক্ষেপ নেন, সে নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে। একাংশের ধারণা, তাঁর আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য–ঘাটতি কমবে। ডলার শক্তিশালী হওয়ার পেছনে এটিও বড় কারণ। ট্রাম্পের নীতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত এই দোদুল্যমানতা থাকবে। রুপির দরপতন ঠেকাতে সব ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের বিপক্ষে রঘুরাম রাজন।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দর সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। সেদিন প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৬ দশমিক ৬৪ রুপি পর্যন্ত পাওয়া যায়; এরপর অবশ্য দিন শেষে তা ৮৬ দশমিক ৬৩ রুপিতে ওঠে। এর আগে গত সোমবার দুই দশকের মধ্যে এক দিনে রুপির সর্বোচ্চ দরপতন হয়। বাস্তবতা হলো, নভেম্বর মাসের মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ডলারের বিনিময় হার বাড়ছে। বিশ্বের সব দেশের মুদ্রার বিপরীতেই ডলারের মান বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া মুদ্রাবাজারে ডলার বিক্রি করে রুপির মান ধরে রাখার চেষ্টা করছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ২০২৫ সালে আরবিআই নিজের রাশ আরও কিছুটা ছেড়ে দিতে পারে।