আদানির রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমে গেল

গৌতম আদানি
ফাইল ছবি

ভালো বিপদেই পড়েছেন ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি। এক হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের জেরে তাঁর গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজারদর ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেক কমিয়ে ফেলেছে আদানি গোষ্ঠী। এ ছাড়া নতুন করে মূলধন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রাও কমিয়েছে তারা।

হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের আগে আদিন গোষ্ঠীর লক্ষ্যমাত্রা ছিল, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে অন্তত ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা। কিন্তু এখন তারা ভাবছে, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি হবে না। ব্লুমবার্গের সূত্রে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

মূলধনী ব্যয় কমানোর অর্থ হলো, আদানি গোষ্ঠী আপাতত ব্যবসা বা কারখানার সম্প্রসারণে যাবে না। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় আদানি গোষ্ঠী ৩০০ কোটি ডলার বাঁচাবে। তবে এই পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এদিকে গত শুক্রবার শেষ কর্মদিবসেও আদানি গোষ্ঠীর ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি কোম্পানিরাই শেয়ার দর কমেছে। বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২৪ জানুয়ারি হিনডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গোষ্ঠীর বাজার মূলধন ৫১ শতাংশ কমেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাজার মূলধন আরও কমতে পারে।

২৪ জানুয়ারি হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে রীতিমতো ঝড় বয়ে যাচ্ছে আদানির সাম্রাজ্যে। শেষ ধাক্কা দিয়েছে শেয়ার সূচক প্রস্তুতকারী আমেরিকার এমএসসিআই ও ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিজ়। হিনডেনবার্গ রিসার্চের দুর্নীতির অভিযোগ ও তার জেরে আদানির শেয়ারে ধস নামার ঘটনা খতিয়ে দেখে নিজেদের সূচকে আদানিদের কোম্পানির গুরুত্ব (ওয়েটেজ) কমিয়েছে এমএসসিআই। প্রায় একই কারণে চারটি কোম্পানির মূল্যায়ন (রেটিং) কমিয়েছে মুডিজ।

এমএসসিআই জানিয়েছে, আদানি এন্টারপ্রাইজেসসহ চার কোম্পানির শেয়ারের গুরুত্ব কমবে তাদের সূচকে। কারণ, এসব শেয়ারের সহজে লেনদেন করা (ফ্রি ফ্লোট) নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ‘ফ্রি ফ্লোট’ বলতে বোঝায় কিছু যোগ্যতার ভিত্তিতে কোনো সংস্থার শেয়ার যখন সহজে কেনাবেচা যায়। এমএসসিআইয়ের পর্যালোচনা, ওই চার কোম্পানিরই সেই যোগ্যতা কমেছে। এ কারণে তীব্র অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তাদের বিনিয়োগকারীরা। এ প্রসঙ্গে হিনডেনবার্গের প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘এমএসসিআইয়ের সিদ্ধান্ত আমাদের অনুসন্ধানকে বৈধতা দিয়েছে।’

আরও পড়ুন

এর জেরে গত শুক্রবার আদানিদের বেশির ভাগ সংস্থার শেয়ার দর পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, বাজার থেকে অর্থ তুলতে আদানি এন্টারপ্রাইজেস সম্প্রতি শেয়ার বিক্রির যে প্রক্রিয়া চালিয়েছিল, তাতেও অনিয়মের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তদন্তে নেমেছে ভারতের সরকারি সংস্থা সেবি। আদানি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করেছে কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।