টুইটারের মূল্য কেনা দামের অর্ধেকেরও নিচে নামিয়েছেন ইলন মাস্ক
টুইটার কর্মীদের কাছে শেয়ার বিক্রির একটি প্রস্তাব দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। কিন্তু এর জন্য তিনি টুইটারের মূল্যমান নির্ধারণ করেছেন মাত্র ২ হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। গতকাল শনিবার টুইটার কর্মীদের কাছে পাঠানো একটি ই–মেইলে তিনি এ ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্সের।
তবে টুইটারের নতুন এ মূল্যমান নির্ধারণের বিষয়টিই সবাইকে অবাক করেছে। কারণ, মাত্র ছয় মাসেরও কম সময় আগে এর দ্বিগুণের বেশি দামে টুইটার কিনেছিলেন আলোচিত ধনকুবের মাস্ক। তাহলে কি টুইটারের মূল্যমান কমে যাওয়ার বিষয়টি ইলন মাস্ক নিজেই স্বীকার করে নিলেন?
বহু আলোচনার জন্ম দিয়ে গত বছরের অক্টোবরে ৪ হাজার ৪০০ কোটি (৪৪ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন ইলন মাস্ক। সেই তুলনায় টুইটারের এই নতুন মূল্যমান কেনা দামের অর্ধেকেরও কম। অর্থাৎ নতুন মূল্যমান টুইটারের মূল্য কমার দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এ বিষয়ে জানতে টুইটারে একটি ই–মেইল পাঠায় রয়টার্স। কিন্তু টুইটার কর্তৃপক্ষ সেই মেইলের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি।
ইলন মাস্ক টুইটার কেনার পর অনেক বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে তাদের অর্থ ব্যয় (বিজ্ঞাপন দেওয়া) কমিয়ে দেয়। বিজ্ঞাপন গবেষণা সংস্থা প্যাথমেটিকস জানিয়েছিল, টুইটারে সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া ৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি প্রতিষ্ঠান সে সময় সব ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে গত ডিসেম্বরে তার আগের বছরের তুলনায় টুইটারের বিজ্ঞাপন প্রায় ৭১ শতাংশ কমে যায়। এর ফলে আয়ও কমে যায় টুইটারের। এ নিয়ে গত ডিসেম্বরে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, ২০২৩ সালে টুইটার আবার মোটামুটি আয়-ব্যয়ের সাম্যের ধারায় ফিরবে।
ইলন মাস্ক টুইটার কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেন গত মার্চে। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল টুইটার পুরোপুরি কিনে নেওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেন এই ধনকুবের। এরপর অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ, চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা এবং শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হওয়া—বহু জল ঘোলা করে অবশেষে অক্টোবরে টুইটারের মালিকানায় যুক্ত হন মাস্ক।
টুইটারের মালিকানা গ্রহণের পরপরই এর তৎকালীন সিইও পরাগ আগারওয়ালসহ শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন নতুন নিয়ম করতে থাকেন তিনি। এই যেমন গ্রাহকদের জন্য মাসে ৮ ডলারের (৭ দশমিক ৯৯ ডলার) বিনিময়ে টুইটারের ‘ব্লু টিক’ সেবা চালু করা, কর্মীদের দীর্ঘ সময় (১২ ঘণ্টা) কাজ করতে বলা, যাঁরা বাড়িতে বসে কাজ করছিলেন, তাঁদের অফিসে এসে কাজের নির্দেশ দেওয়া ইত্যাদি।
সবশেষ উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাই করেও আলোচনায় আসেন ইলন মাস্ক। রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় কারণ দেখিয়ে গত নভেম্বরে টুইটার একসঙ্গে ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাই করে। এরপরও কয়েক দফায় কর্মী ছাঁটাই করে টুইটার। সবশেষ গতকাল টুইটারের নতুন মূল্যমান ঘোষণা করলেন টুইটার প্রধান ইলন মাস্ক।