আবারও রুপির দরপতন, ডলারের বিপরীতে এযাবৎকালের সর্বনিম্ন
আবারও ভারতের মুদ্রা রুপির দরপতন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুপির দর এযাবৎকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। ফলে গতকাল ডলারের দর ৮৪ দশমিক ৭৪ রুপিতে নেমে যায়। গতকাল রুপির দর কমেছে চার পয়সা।
আজ বুধবার ডলারের দর ৮৪ দশমিক ৭০ রুপিতে স্থিতিশীল। গত সোমবারও ডলারের দর ছিল ৮৪ দশমিক ৭০ রুপি। সম্প্রতি ভারতের জিডিপির তথ্য প্রকাশের পর গতকাল রুপির দরপতন হয় শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘোষণায় ডলার চাঙা হয়েছে। সেটা হলো ট্রাম্প বলেছেন, ব্রিকস দেশগুলো যদি নিজস্ব মুদ্রা চালু করতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোর পণ্যে ১০০ ভাগ শুল্ক আরোপ করবে। এতে ইউএস ডলার ইনডেক্সের মানও বেড়েছে।
এ ছাড়া ভারতীয় অর্থনীতির নিজস্ব কিছু কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ভারতের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকে কিছু দুর্বলতা আছে। এ ছাড়া ভারতের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ চলে যাওয়ার কারণেও রুপির দরে প্রভাব পড়ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রুপির দরপতন আরও বেশি হতো, কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইর হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা রোখা গেছে। আরবিআই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে রুপি তুলে নিয়েছে। ফলে দরপতন কিছুটা থেমেছে। তবে রুপির ধারাবাহিক দরপতনকে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগজনক বলছেন। গত কয়েক মাস যাবৎ রুপির দর রুখতে বাজারে হস্তক্ষেপ করছে আরবিআই।
অর্থবছরের দ্বিতীয় জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি কমে গেছে। ওই সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যেটা প্রায় দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগের বছর একই সময়ে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। মূলত উৎপাদন খাতের ধীরগতির কারণেই প্রবৃদ্ধি কমেছে। সেই সঙ্গে ভারতের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমছে।
ভারতের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন। গত কয়েক মাসে প্রবণতা অনেকটা শক্তিশালী হয়েছে। চীন অর্থনীতি চাঙা করতে আবারও বড় ধরনের প্রণোদনা দিয়েছে। এ বাস্তবতায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের বাজারে শেয়ার বিক্রি করে চীনের বাজারে বিনিয়োগ করার নীতি গ্রহণ করেছেন। ফলে ভারতীয় মুদ্রার দর কিছুদিন পরই ডলারের বিপরীতে পতনের নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে।