ইউরোপের সরবরাহ–সংকট ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকবে
বৈশ্বিক সরবরাহ-সংকটের কারণে গত বছর সারা বিশ্বের মতো ইউরোপের অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের সরবরাহব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে।
কোভিডের ধাক্কায় গত বছর কারখানা বন্ধ ও যন্ত্রাংশ ঘাটতিতে ইউরোপীয় সরবরাহব্যবস্থা থমকে গিয়েছিল। আইএমএফ জানায়, এসব বাধা না থাকলে ইউরোপের প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেশি হতো।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও অন্য কর্মকর্তারা বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি বছর নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠবে ইউরোপের সরবরাহব্যবস্থা। তবে করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনের প্রকোপে সরবরাহব্যবস্থায় নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। এর জেরে ইউরোপ ও চীন নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করে। ফলে সরবরাহব্যবস্থার সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ইউরোপীয় সরবরাহব্যবস্থায় এই প্রতিকূলতা ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আইএমএফের কর্মকর্তারা। সরবরাহ প্রতিবন্ধকতা না থাকলে ইউরো অঞ্চলের উৎপাদন আরও ৬ শতাংশ বেশি হতো।
আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে ৪০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এ সংকট ক্ষণস্থায়ী বলে আশা করছে সংস্থাটি। তাদের মতে, ইউরোপীয় সরবরাহব্যবস্থায় সংকটের মূলে ছিল শ্রমিকসংকট ও জীর্ণ অবকাঠামো, মূল্যস্ফীতিতেও যার প্রভাব অনুভূত হয়েছে।
এদিকে গত বছর বৈশ্বিক সরবরাহের ওপর বেশি নির্ভরশীল দেশগুলোর কারখানার উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ব্যাহত হয়। সরবরাহব্যবস্থায় এ সংকট সৃষ্টি না হলে জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্রে উৎপাদন ১৪ শতাংশ বেশি হতো বলে জানিয়েছে আইএমএফ।
আইএমএফ বলেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সঠিক পদক্ষেপ নিলে ইউরোপীয় সরবরাহব্যবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরে পেতে পারে। বন্দরে কর্মঘণ্টা বাড়ানো, পরিবহন ও রসদ ব্যবস্থায় লাইসেন্স প্রদান ত্বরান্বিত করা, শ্রমিকস্বল্পতা মোকাবিলায় অভিবাসননীতির উন্নয়ন—এসবের মাঝে সংকট নিরসনের পথ দেখছে তারা। পাশাপাশি ইউরোপীয় কারখানাগুলোর সুরক্ষানীতির বিষয়ে সতর্ক করেছে আইএমএফ। সংস্থাটি জানায়, এতে চাহিদা বেড়ে গিয়ে সরবরাহ-সংকট আরও জটিল হয়ে ওঠার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়তে পারে।