মাটির বদলে কোকোপিটে সবজির চারা উৎপাদন
মাটির বদলে নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া (কোকোপিট) ব্যবহার করে সবজির চারা উৎপাদন করা হচ্ছে যশোরে। আধুনিক এই পদ্ধতিতে খরচ কম হয় এবং সবজির চারা মাটিবাহিত রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকে। সবজির ফলনও বেশি হয়। সে জন্য যশোর অঞ্চলের সবজিচাষিরা দিন দিন এই চারা রোপণে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জানা গেছে, ম্যাক্সিম অ্যাগ্রো নামের ব্যক্তিমালিকানার একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে যশোর সদর উপজেলার চূড়ামনকাঠি এলাকায় সবজির চারা উৎপাদন শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে চারা উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। গত বছর
এই প্রতিষ্ঠানে বেগুন, মরিচ, টমেটো, লাউ, ব্রকলি ও পেঁপের ২৮ লাখ ৭ হাজার চারা উৎপাদন করেছে। এসব চারা বগুড়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাগুরা, কুমিল্লা, সাভার, কক্সবাজার, সিলেট ও যশোরের বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা কিনে নেন। তাতে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ৯১ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
সম্প্রতি যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে চূড়ামনকাঠি এলাকায় ম্যাক্সিম অ্যাগ্রোতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকেরা বীজ বপন, চারা তৈরি, পরিচর্যা প্রভৃতি কাজে ব্যস্ত। আর আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা বিশাল দুটি শেডে থরে থরে সাজিয়ে রাখা সবজির চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা।
জানতে চাইলে ম্যাক্সিম অ্যাগ্রোর উদ্যোক্তা শরিফ-উল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, মাটির বদলে কোকোপিট বা নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া ব্যবহার করলে সবজির চারা পর্যাপ্ত খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে পারে। ফলে সনাতন পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারার তুলনায় এই চারা দ্রুত বড় হয় এবং ৭ থেকে ১০ দিন আগে গাছে ফলন চলে আসে। তা ছাড়া মাটিতে তৈরি চারা তুলে রোপণের সময় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শিকড় ছিঁড়ে যায়। শিকড়ের ওই ছেঁড়া অংশ দিয়ে মাটিবাহিত জীবাণু প্রবেশ করে। ফলে গাছের চারা প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে পারে না। এতে চারা–গাছে রোগবালাইয়ের আক্রমণ বেশি হয় এবং ফলন কমে যায়। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। অন্যদিকে কোকোপিট পদ্ধতিতে চারা রোপণ করলে একদিকে উৎপাদন খরচ কম হয়, অন্যদিকে ফলন বেশি পাওয়া যায়